নদী বলতো, তোর প্রিয়াকে নিয়ে আসিস ।
জোয়ার দিয়ে ধুইয়ে দেবো ওর রাঙা পা দুটো।
তারপর একদিন তোমায় পেয়ে,,
অনেকটা উঠে এলো ঢেউ হয়ে , তোমার কাছে।
তুমি বাঁধভাঙা আনন্দে গড়িয়ে পড়লে আমার কোলে।
আকাশ বলতো, কিরে আজ আনিসনি ওকে ?
একদিন তোমার গালে বরফ ঘসে দিয়ে বলল,
লুকিয়ে রেখে ছিলাম তোর জন্য।
মেঘ বলতো, তুই একা কেনো ?
একদিন হঠাৎ করে ঝরে পড়লো তোমার ওপর।
বলল, ফিরিয়ে দিলাম তোর শৈশব কে ।
তুমি ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরলে আমায়।
তাই দেখে গাছেরা তো হেসে লুটোপুটি।
একটা শালিক ভিজতে ভিজতে ছুটে এলো তোমার পায়ে।
সেও মনে হয়, ফিরে পেয়েছিল তার ছেলেবেলার খেলার সাথীকে।
বাতাস বলতো,কাল আনিস ওকে ?
একদিন এক টুকরো সাদা মেঘ তোমাকে দিয়ে বলল,
এই নে তোর জন্য ওড়না এনেছি।
ঝর্নার জলে ডুবিয়ে, শুকোতে দিয়েছিলাম,
ঐ পাহাড়ে,,,,,,,।
সাগর বলতো, কিরে? ও কোথায় ?
একদিন তোমায়, মুক্তো ঝিনুক দিয়ে,
সাজিয়ে দিয়ে বলল,
আজ থেকে তুই রাজকুমারী।
চাঁদ বলতো,
তোর পাগলী সঙ্গে নেই ?
এক জ্যোৎস্না রাতে , তোমার গায়ে হাত বুলিয়ে দিলো,
আর আকাশ থেকে এক ফোঁটা কালো মেঘ নিয়ে,
তোমার কপালে টিপ এঁকে বলল,
যা। কারো নজর লাগবে না আর।
আজ তুমি নেই ,,,,,,,,,,,,,,,, !!
আকাশ ও আমাকে দেখে মুখ লুকোয়।
আমি চিৎকার করে বলি,
ও আকাশ, ঝড় নিয়ে এসো আমার জীবনে ।
ও মেঘ, বজ্র হয়ে ভেঙে পড়ো আমার ওপর।
নদীর কাছে গিয়ে বলি,
ও নদী, ভাসিয়ে নিয়ে যাও না আমাকে,
অনেক দূরে,,,,,,,,
আমি আর ফিরতে চাই না নিজের কাছে।
সাগরের তীরে দাঁড়িয়ে বলি,
ও সাগর, আমাকে লুকিয়ে নেবে তোমার গভীরে ?
তারপর নিথর করে ফিরিয়ে দিও তোমার সৈকতে?
চাঁদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বলি,
ও চাঁদ, তোমার গ্রহনের আঁধারে, আমাকে মিশিয়ে নাও।
আমি অন্ধ হতে চাই।
ক্ষণিকের আলোর ছলনায়,
আমি হারিয়ে ফেলেছি আমার চিরচেনা পথ।
ঠিক তখনই,
সেইদিনের সেই বৃষ্টি ভেজা ছোট্টো শালিকটা?
আমার পায়ের কাছে এলো খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।
বলল, ওর জন্য খাবার আনতে গিয়ে,
আমার একটা পা চলে যায় !
এখন সেও চলে গেছে আমাকে ছেড়ে !
আমি জানতাম, তুমিও আমার মতো একা হবে একদিন !
ভালোবাসলে , বড়ো একা হতে হয় জানো ?
বাকি দিনগুলো “আমি” হয়েই বাঁচতে হবে আমাদের !
আমাদের”তুমি” আর ফিরে আসবে না !