তিলোত্তমার আলিঙ্গন // বিকাশ দাস (বিল্টু )
আজ তিলোত্তমা উৎসর্গ করি তোমায়
সাদা চাঁদের আভায় শিশির ভেজা রাতে
একটা উষ্ণ প্রেম…
মনে আছে তোমার
ঠিক এমনি এক মায়াবী রাতের
শেষে আমরা দুজন দুজনার হাত ধরে হেটেছিলাম
একটা গরম ভালবাসার জন্য…
হাত ধরলাম, তুমি সরিয়ে নিলে,
আবার ধরলাম, রাগ করলে,
কয়েক কদম আগে আগে চললে…
সামনে কি?
ভয় পেয়ে আবার হাত ধরলে
আমি সরিয়ে নিলাম
তুমি রাগ করলে… ?
উহু উহু কর কি? রাগ উঠে ব্যাং…
এখন জাপ্টে ধরলে….
আমি ভয় পেলাম..
তখন রাত অনেক বাকি !
চাইনি তখনি বাসর করি
রাত পেরিয়ে সকাল, সকাল শেষে নতুন দিন
নতুন ভবিষ্যৎ.—
আসলে তুমি একদিন বধূ হয়ে
রাতে আমায় কথা দিলে
প্রেমের স্বার্থকতা !
আমি ঠায় মাথা নাড়ি
হটাৎ জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলে
আমি বুঝি নি মানে?
তুমি বুঝি আমায় ভয় পেলে
—বললেই শেষে–” করো না আমায় পর “।
আমি তো কথা রেখেছি
আমি তো ছেড়ে যাইনি
আমি ঠিক এখনও তোমার হাত ধরি
খোলা আকাশে, শিশিরের মাঝে….
তবে একা ,
তবে
সাথে থাকে দেবদাসের সুরা ,
কৈ তুমি তিলোত্তমা ?
তুমি কি ভুলে গেলে তোমার প্রথম আলিঙ্গন
আমার তো ভাস্বর….
সব আছে, আকাশ আছে
আমার ভালোবাসাও আছে
শুধু তিলোত্তমা তুমি নেই !
নিজ্জুম রাতে তারাদের বলি
তোমরা যদি দেখে থাকো তারে
বলো তিলোত্তমার হিয়ে আছে ভালো
তবে একটা উষ্ণ আলিঙ্গন নেই —
.
.
.
আজব জগৎ // শাক্তিনাথ পাঁজা
জগৎ নামটি যতই ছােটো
মানে তত ছােটো নয়,
কেও হয় রাজা,কেও হয় সুখী
কেও আবার পাথর বুকে জীবনে দুঃখ সয়
আজব আমাদের এই জগৎ।
সৎ মানুষ পায় শুধু হতাশা,
অপর পথে….
অসৎ মানুষ ঘিরে হাজার আশা |
এই জটিল জগতের মাঝে
সত্যিকারের ভালবাসা মানে কষ্ট,
আর মিথ্যে ভালবাসা মানে
অনেকে ভাবে এটাই শ্রেষ্ঠ
এই প্রতারিত জগতে
হাজার মানুষের হাহাকার শুনে,
হে মাের পরম দেবতা
তুমি স্তব্ধ কোন গুনে? তােমার ভূবনে এমন নিরাশায়।
মানুষকে ত্যাগ করতে হয় তার জীবন,
সর্বশক্তিমান তুমি কি কেবলই পাথর
এভাবেই কাটবে মনুষের জীবন?
যদি তাই হবে ভগবান
কেন আনলে আমাদের এই ভূবনে,
জানিনা আমরা আজও।
মােদের কান্না পৌছাবে কবে তােমার কানে????
.
.
.
.
কি চাই // রণেশ রায়
আমি কি চাই জানা নেই আমার
সব চাই আবার কিছুই চাই না আমি
আমার শেষ নেই চাওয়ার
তাও সব শেষে কিছুই থাকে না পাওয়ার
আমি চাই তোমার চোখের ইশারা
চাই ভ্রুকুটিতে তোমার উঁকি
তোমার ওষ্ঠের স্পর্শ শিহরণ আমার
তোমার চলনের দুলুনি
তোমার বুকের পিঞ্জর
আমার হৃদয়ের স্পন্দন
তোমাকে আমি ভুলিনি
তোমার চলনে তোমার বলনে
পেতে চাই তোমায় সর্বক্ষণ,
তোমার ইঙ্গিতে আমাকে বর্জন
পরিত্যক্ত আমি
পেতে চাই তাও সব শেষ যখন।
.
.
.
.
কার জন্য // রণেশ রায়
কখনও খুলে দেখেছ কি হৃদয়টা?
তার গভীর গহ্বরে অজানা কি আছে,
খুঁজে দেখ একবার পিঞ্জর ভেদ করে সেটা,
শুয়ে আছে সারি সারি শব কফিনের ভেতরে,
কত না বাহারি নাম তাদের, আধুনিক আর সাবেকি,
আলো আঁধার সুখ দুঃখ চাওয়া পাওয়া
উদয় অস্ত দিন রাত আরও কত কি,
শুয়ে থাকে মিলে মিশে গরমে নেয়ে ঘেমে
একজন আরেকজনকে জাপটে;
কিছুদিন পরে বাষ্প হয়ে উড়ে যায়,
আকাশে সংঘর্ষ একের সঙ্গে অন্যের,
তুফান ওঠে বজ্র হানে বিদ্যুৎ চমকায়,
চারিদিক থমথমে, রক্ত বৃষ্টি হয়ে ঝরে
অফলা মাটিতে ফসল ফলে না,
নক্ষত্ররা জেগে ঘুমায় কুলুপ মুখে;
আমার চোখ নেমে আসে সেই গভীর গহ্বরে,
দেখি আমি,
কেউ নেই শবেরা, দাঁড়িয়ে আছে
আকাশ চুম্বী এক শহীদ মিনার,
মিটি মিটি তাকায়,
জ্বল জ্বল করে সে