শরতের প্রত্যাশায়
আকাশ জুড়ে মেঘ করেছে
চার দিকেতে আঁধারেতে
নিভে গেছে আলো।
তোমার সঙ্গে আমার দেখা
আর কি হবে আদো!
মোহময় এই অন্ধকারে
কোথায় যাব চলে
দুই জাতের এই মিলনটাকে
মানবে না তো ওরে।
মাঠ বলল পালা শোভন!
আসছে ওরা ধেয়ে
ঘাট বলল পালা মমতাজ!
আসছে কারা তেড়ে
এবার যারা মিলনটাকে ছিড়বে ক্রুরে ক্রুরে!!!
মাঠের গোলাপ ঘাটের পদ্ম
এগিয়ে এল সামনে,
বলল ওদের, বাঁচতে হলে
ঢুকে পড় মোদের ছন্দে।
উপর থেকে ক্রুদ্ধ স্বরে
নামল এসে বাজ
বলল ওরে ভয়টা কিসের গায়?
এই খোলা আকাশ তোদের পাশে
থাকবে চেয়ে শরতের প্রত্যাশায়।।
বায়না যখন পায়না
মেলায় যাবে ছোট্ট সোনা
ধরেছে বেশ বায়না
দাদুর কাছেই বায়না করে
ড্যাডি-মাম্মির আদর সে তো পায়না।
যখন সোনা দাদুকে বলে;
ও, দাদু! মেলায় চলো না!
তক্ষুনি বাবা দরজার কোনে
চোখটা পাকায়, যা…
সোনা তখন ভয়টি পেয়ে
লুকিয়ে পড়ে ঠামমির পিছে।
বাবা তখন হাতটি ধরে, বলে…
সোনা! মেলায় তো যায়না!
মেলা তো পচা জিনিস!
কত লোকজন আর ধূলো ঘিজঘিজ।
তার থেকে অনেক ভালো আচ্ছা খাসা
অ্যালফাবেটকটা শিখে নেওয়া, আর…
নটা বাজলেই কার্টুন দেখা!
একি নিয়ম হলো
ও বাবা, ও দাদু, ও বড়োবাবা
বলো তো?
এ কি নিয়ম হলো?
মাদেরই সব করতে হবে
সংসারের কাজ-কর্ম?
মা-দেরই সব রাঁধতে হবে
সারাটা দিন ধরে?
মা-দেরই সব কাঁচতে হবে
দুপুরবেলায় কলপাড়ে বসে?
মা-দেরই সবাইকে দিতে হবে খাবার
আবার খাওয়ার শেষে
সব সাফ করতে হবে এটোঁ?
সারাটা দিন পরিশ্রম করে
বেলাশেষে মার পাতে জোটে না
কোনো দিন মাছ, পেটপুরে ভাত
করতে গিয়ে বাবা, দাদু ও ছেলের
পেটপুরে খাবারের সংস্থান।
এটাই কি জগতের নিয়ম বাবা!
কেন মাকেই শুধু করতে হবে
পরিশ্রম পশুতুল্য?
কেন তাকেই করতে হবে
সকল বলিদান স্বীকার্য।
কে বানিয়েছে এই নিয়ম বাবা?
বলো, বলো, বলো কে বানিয়েছে?
তুমি? না দাদু? না বড়োবাবা?
না এই পুরুষশাসিত সমাজ?
আমাকে বলো বাবা সেই
লোকটির নাম? দেখ;
আমি তাকে দিয়ে করিয়ে
সমস্ত কাজ; কীভাবে পাল্টাই
এই মিথ্যা নিয়মের সাঁজ।।
নীরবে থাকতে দিয়েছি মনে
মাফি চাইবার ছোট্ট সাহসে
করুম না তোরে ছোট প্রিয়রে
যৌবনের সেই সৌন্দর্য
আর নাই তো মোর শরীরে।
সৌন্দর্যের গরল গরবে
ফিরাইছি তোর প্রেম-সৌন্দর্যের
ঐ কোমল হাতখানারে।
এখন বড়ই মনে পড়ে
শক্ত হাতের কঠিন তালুতে
জড়িয়ে ধরা হৃদয়ভরা
মিষ্টি-মধুর ভালোবাসারে।
যা গেছে নাহি পামু ফিরে
তবুও মোর আ-সামীর রক্তবরণ দুচোখ এড়িয়ে
নীরবে থাকতে দিয়েছি মনে।
আহামরি
আহামরি
আহামরি!
বউ বউ করে মরি!
বিয়ের পরে বউ বউ;
মায়ের কথা ভুলি ভুলি।
অফিস থেকে ফিরে আমি
বউ- বউ করে মরি!
বউ-বউ করে চিৎকার;
বাড়ি-ঘর করে বিৎকার;
বউ-এর পিছন ঘুরি ঘুরি।
অফিসে যাওয়ার আগে;
অফিস হতে ফেরার পরে;
বউ-এর কথাই জিগাস করি।
বউ-কে দেখিলে তবে;
মনেতে শান্তি আসি।
বিয়ের পর এনেছি মোর,
সতীন যে ঘরেতে মা-র।
বউ-এর কথায় খান-খান;
মা-এর মাথায় ভাঙ-ভাঙ।
মা-এর কথা ভাবতে গেলে;
বউ তখনই সোহাগ করে,
ম-এর কথা বলতে গেলে;
বউ -এর মাথায় বাজ পড়ে।
মা-এর যত্ন নিতে গেলে;
বউ-এর গায়ে আগুন জ্বলে
সেই আগুনে আমি জ্বলি,
মা-কেও যে জ্বালিয়ে মারে।
ঘর-দোড়েতে আগুন জ্বেলে,
রাত-বিরাতে দমকল ডাকে।
মা-কে নিয়ে তাইতো আমি;
বৃদ্ধাশ্রমে ঢালি আসি।।
মা-এর কথা অনেক স্মরি,
মা-রে বিনা বাঁচতে নারি।
বউ-রে বিনাও বাঁচতে নারি।
মা-এর কথা ভাবলে ভারি;
বউ করবে ফালি-ফালি।
মা-এর প্রতি নাড়ীর টান;
মারে দেখিতে কাঁদিছে প্রাণ।।
শহর:কাটোয়া
জেলা:পূর্ব বর্ধমান