কে স্বার্থপর
শ্যামল কুমার রায় , সহ শিক্ষক,
বুদ্ধের ঐ কথাটা আজও কানে বাজে –
‘নিজেকে ভালোবাসা স্বার্থপরতা নয় যে ।’
তাহলে কিসের স্বার্থপরতা? কে স্বার্থপর ?
পশুরা তো লড়াই করে বাঁচার জন্য ।
ওটা লড়াই না খাদ্য শৃঙ্খল ?
যোগ্যতমই যে টিকে থাকবে ধরাতে,
ডারউইনের মতবাদে সত্যতা আছে যে তাতে ।
জগতের সবই তো ঈশ্বরের ঐশ্বর্যের প্রকাশ,
তাহলে আমার আমার করাই তো অজ্ঞতারই প্রকাশ ।
জগতটাকে তো ভাগ বাটোয়ারা করল সমাজবদ্ধ মানুষে ।
‘স্বার্থপর , নিঃস্বার্থ ‘ – সব মতবাদেই তো পুঁজিবাদীদের আধ্যিপত্য ।
সভ্যতার একদম শুরুর দিকে, বাহুবলীরা রইল টিকে ।
দখল নিয়ে সব সম্পদের, চোর সাধু আজ হল বটে।
কেড়ে নিয়ে প্রলেতারিয়েতের অধিকার –
বাঁচা হয়ে গেল গরীবের দুষ্কর ।
নিজের ভালো বুঝতে গেলে ,
তাড়িয়ে দিলে স্বার্থপর বলে।
গর্জে ওঠো যদি শোষণের বিরুদ্ধে ,
রে রে করে আসবে তেড়ে।
স্বার্থপরতা আছে যে রক্তে –
আদি অনাদি কাল হতে আজ পরিনত হয়েছে পাকাপোক্ত অভ্যেসে।
স্বার্থপরতার কারণ ও ফলের মৌলিকত্ব আছে,
সময়ের সাথে সাথে শুধু খোলসটাই যা বদলেছে ।
বৃহত্তর জগতের স্বার্থপরতার ছাপ ,
প্রকট হয়েছে সমাজে – সংসারে ।
আমিত্বের নেশাতে যে মত্ত সবাই,
আত্মসুখেতেই নজর যে তাই।
কিন্তু, কোনোদিন কি ঘটবে না? –
পশুত্বের মনুষ্যত্বে আর মনুষ্যত্বের দেবত্বে উত্তরণ !