সেবার লুকোচুরি খেলতে গিয়ে পাঁচিলের পেরেক লাগলো আমার মাথায়। রক্তারক্তি কাণ্ড। বিকালে মাঝে মধ্যে আমাদের ধানগাদা, বিচুলিগাদা, পলগাদা ভরা খামারে আমরা লুকোচুরি খেলতাম। এ গাদা ও গাদার পিছনে এমন লুকোতাম চট করে খুঁজে বার করা কারোর পক্ষে সম্ভব হোতো না। তাড়াহুড়ো করে লুকোবার ফল।
.
আরেকবার দলবেঁধে ছিপ ফেলে মাছ ধরছি। বারবার ফসকে যাচ্ছে, হতাশা বাড়ছে, বাড়ছে রাগও। রাগে সপাং সপাং হ্যাঁচকা মারছি, কিন্তু মাছ উঠছে না। এরকম রাগারাগির মধ্যে ছোট ভাইপো সুশান্তর অণ্ডকোষে ওর নিজের বঁড়শি বিঁধে গেল। কেউ পারছে না ওকে বঁড়শি মুক্তো করতে। রক্ত ঝরছে আর ওর চিৎকার করে কান্নাও বাড়ছে।
.
সব পাড়ার মতো আমাদের পাড়ায়ও একজন ডাকাবুকো মহিলা ছিল, সম্পর্কে যিনি আমাদের কাকি, হাবুকাকার গিন্নি, কাকি এসেই কই কী হয়েছে বলেই এক নিমেষে সুশান্তকে বঁড়শি মুক্তো করলো। রক্ত পড়া বন্ধ করারও টোটকা ওষুধ, আদবে গ্রাম চলতি আয়ুর্বেদ ওষুধের ব্যবস্থা করলেন।
.
ছোট বড় সব ধরণের বিছের উৎপাত ছিল। একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার অণ্ডকোষ বেশ ফুলেছে। মা দেখে বলল নিগ্ঘাৎ বিছেয় কামড়েছে। বাবা রামপুর থেকে বোরিক পাউডার আনিয়ে দিলে গরম জলে ওটা গুলে সেঁক দেওয়া শুরু করলাম। দু’তিন দিন লেগেছিল বিষ কাটতে।
.
আমরা ছোটবেলায় জানতাম বেলগাছে বেহ্ম্যদত্যি থাকে। হঠাৎ এক সন্ধ্যেয় চিৎকার চেঁচামেচি, না কি হয়েছে কি হয়েছে? না, বেচা বিপিন জ্যেঠার মেজছেলে আমাদের ভানুদা বেলগাছে গলায় দড়ি দিয়েছে। ঘটনা ঘটার মুহূর্তে চোখে পড়ায় তাকে গাছ থেকে জ্যান্ত অবস্থায় নামানো সম্ভব হয়েছে। তাকে নাকি বেহ্ম্যদত্যি ডেকেছিল। যাইহোক, ভানুদা তো বাঁচল কিন্তু আমাদের আরো একটা ভয়ের জায়গা বাড়লো।
.