কাল সকালে দেখা যাবে // অর্কপ্রভ ভট্টাচার্য
গোটা দিন ধরে দোকানে কাস্টমারের অভাব,
রাতে অফিস থেকে ফিরে জ্বর জ্বর ভাব।
সারারাত ঢুলতে ঢুলতে এক্সাম প্রিপারেসন,
প্রেমিকার ঝগড়ায় ব্রেক-আপ এর টেনশন।
পরপর পাঁচটা গান সুপার-ডুপার ফ্লপ,
পাবলিশারের লাথি গালাগাল ননস্টপ।
বেকার ছেলে ছমাস রাস্তা খুঁজেও ঠিকানাহীন শহর জুড়ে,
এঁটো হাত শুকিয়ে শুকিয়ে
হোয়াটসঅ্যাপের লাস্ট সিনে।
জানি এই গল্প মুখ ফিরিয়ে নেবে
তবু কাল সকালে দেখা যাবে।
রোদের মুখ চেয়ে শিশিরের উপস্থিত
যেন গতরাত বিষাক্ত স্বপ্নে
চলমান মেশিন অযান্ত্রিক।
ঘরবাড়ি ভাঙছে, ফুটো ছাদে
টানা তিনদিন পেটের ক্ষিদে
কাল উঠবে দিন কিভাবে ,
যাই হোক, কাল সকালে দেখা যাবে।
রাতে ঝরে পড়া শিউলি ফুল
পথে পথে শবদেহের মিছিল
রাতপাখির গান শুনে স্বপ্ন জাগে
আজ যখন বেঁচে আছে ,কাল ঠিক বাঁচবে
রোজ নামুক সকাল , সকাল আসার আগে
শেষ ট্রেন মিস করে স্টেশনে পড়ে থাকে
শেষমেশ কাল সকালে দেখা যাবে।
.
.
স্বাধীনতা // রণেশ রায়
ব্যাপারীর কাছে পথ নিয়েছি চিনে
ভিখ মেগে সে পথ নিয়েছি জেনে
আশা ছিল পথ বেয়ে মিলব আমি অন্তে
বিনা বাঁধায় পৌছে যাব সেই দিগন্তে
দেখা পাব তার যে আছে আমার আকাঙ্খায়
দিন শেষে মিলব মোরা মুক্তির মোহনায়
কিন্তু কোথায় যে হারিয়ে যায়! দেখা পাইনি
ব্যাপারীর কাছে রয়ে গেছি আমি ঋণী।
বিক্রি করে দিতে হয় যা ছিল আমার
আমার দুয়ারে এখন ব্যাপারীর কারবার।
.
পিড়িং পিড়িং – ৩৪ // মাধব মন্ডল
রোজ রোজ তুই দিয়ে ফাঁকি
পালাস বড়
জানিস তা কি
ধরব আমি চুল?
নাও খেয়ে নাও গরম দুধু
করিস না তুই শুধু শুধু
শুধু শুধুই ভুল!
ভুল ভুল ভুল ভুললে কাজ
চুল চুল চুল টানলে আজ
মান অপমান দিলে,কুলে!
এক গুনেছি দুই গুনেছি
চুপটি করে সব শুনেছি
থাকবো সবাই মিলেঝুলে।
.
জীবনের কথা // সুমন্ত রায়
আকাশের পূর্ব দিকে সূর্য যখন ওঠে
গাছের কত পাতা সতেজ হয়,
কত জীবন আবার যুদ্ধে নামে।
তারা আবার পথে চলা শুরু করে
সীমাবদ্ধ জীবনের পথ ,যারা
প্রতিদিন অপমান আর গ্লানির জীবনকে
আলিঙ্গন করে চলে অবুজ প্রানীর মতো।
ক্ষুদ্র আয়ে জীবন যাত্রাকে মুখরিত করার
বৃথা চেষ্টা কেউ বুঝতে চায় না,
বুঝতে চায়্না তার চোখে ভেসে থাকা;
হাজার হাজার স্বপ্ন;যা হয়তো কোনোদিন
পূরন হবেনা,রয়ে যাবে স্বপ্ন হয়ে।
প্রতিদিন হারতে হারতে জীবনের খাতায়
স্বপ্নগুলো টুকর টুকরো হয়ে যায়,
বাঁচার উদ্দেশ্য ; আকাশে কালো আঁধারে,
হাতড়ে খুঁজে পাবার চেষ্টা,বৃথা হয়ে দাঁড়ায়।
.
খাও বারবার // বিশ্বনাথ পাল
.মানকরে মান করে
কদমা না কিনে—
ঠকে যাবে একদম!
ভেবেছি কী মনে?
সেরা কদমার পীঠস্থান
মানকর সেই ধাম।
কদম কদম ছোটে
কদমার কত নাম।।
কাঁচা ও পাকা
কদমা দু’প্রকার।
কদমার দাম
কম, খাও বারবার। ।
.
জীবনের কথা // সুমন্ত রায়
চোখের সামনে কিছু প্রদীপ
জ্বলতে দেখেছি,
তার মধ্যে কেউ নিভে গেছে
আবার ভেঙে গেছে
আগুনের তাপে।
এমনি কিছু চূর্ন বিচূর্ন হয়ে
যাওয়া প্রদীপ,
জড়ো করে তুলে নিয়েছিলাম হাতের মুঠোয়
হালকা ঝড় সব উড়িয়ে নিয়ে গেল
আমি সেইখানেই;
শূন্য হাতে দাঁড়িয়ে রইলাম জীবনের পথে
হারিয়ে যাওয়া,
টুকরো গুলো মাঝে মাঝে ভেসে বেড়ায়
ঝড়ের আর বাতাসের সাথে
মিশে গিয়ে।
আর কোনোদিন জ্বলে উঠবেনা
মনের কোনে,
আঁধারকে সরিয়ে স্বপ্নের আলো
আসবেনা ভাঙা মনের
জানালা দিয়ে।
.
বন্ধু মানে // রণেশ রায়
বন্ধু মানে পরস্পরকে বোঝা
বন্ধু মানে তর্ক বিতর্ক পথ খোঁজা
বন্ধু মানে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলা
বন্ধু মানে না লুকিয়ে সব খুলে বলা
বন্ধু মানে পরস্পর নির্ভরশীলতা
বন্ধু মানে বিশ্বাস সহযোগিতা
বন্ধু মানে অপ্রিয় সত্যটা তুলে ধরা
বন্ধু মানে ভুলটা স্বীকার করা
বন্ধু মানে আপদে বিপদে সঙ্গে থাকা
বন্ধু মানে আয়নায় নিজেকে দেখা।
.
সকলই পাবে // বিশ্বনাথ পাল
রাঢ বাংলার নয়নমণি
বর্ধমানের মা জননী
সর্বমঙ্গলা মা।
মা যে সবার মঙ্গল চান
তাই বর্ধমান – বর্ধমান
মাকে ভুলবো না,
মায়ের অশেষ কৃপা
মাকে মেনে ফেলবে পা
যেখানেই যাবে – –
ধান আগুরি বন্ধু পরাণ
ভাদু টুসু কবিগান
সকলই পাবে।।
.
.
.