শঙ্খচিল // রণেশ রায়
কে তুমি আনন্দ নন্দিনী
পাখি হয়ে নেমে আস স্বর্গ হতে,
নও তুমি পাখি, নও তুমি জাগতিক
দেখা পাই না তোমার,
তুমি নিষ্প্রাণ অশরীরী,
শিল্পীর তুলি তোমার হাতে
তোমার তুলির টানে
আকাশের প্রচ্ছদে ফুল ফোটে,
ছন্দের বর্ষণ অবিরাম
আনন্দ সৌরভ বিচ্ছুরিত
তোমার শিল্প মাধুর্যে।
এ ধরণী থেকে বহু দূরে,
আকাশের ওপারে দিগন্তে,
মেলে দাও তোমার নীল ডানা
সে আনন্দ নিকেতনে,
মেঘের আড়ালে সূর্যের কিরণ চ্ছটা
আলোকিত করে আকাশ,
তুমি গেয়ে চল ডানা মেলে,
সে আনন্দ ধামে
জাগতিক সুখ দুঃখ
স্পর্শ করে না তোমায়।
সোনালী বিকেলে সূর্যাস্ত লগনে
এ গোধূলি বেলায়
মেঘ রেঙে ওঠে লাল সূর্যের কিরণে
তুমি চল ভেসে দেহাতীত সুখে,
যাত্রা তোমার আনন্দ বিহারে।
তোমার ডানার ঝাপটায়
নীল রঙ ঝরে পড়ে,
দিনের প্রখর আলোয়
রাতের নক্ষত্র লুকায় আকাশে
দেখা দাও না তুমি,
থাকো কোন আড়ালে,
আমি শুনি আনন্দ সংগীত
বাজে তোমার কণ্ঠে।
তোমার গানের তুনে
বিদ্ধ হয় রুপালি আকাশ,
প্রদীপের আলো ম্লান হয়
প্রভাতের আলোর চ্ছ্টায়,
চোখে দেখি না তাকে
সে কোথায় লুকায়
অনুভবে বুঝি
সে আলো জ্বলে
হৃদয়ে আমার।
এ পৃথ্বী আকাশ বাতাস
মুখরিত তোমার সংগীতের মূর্ছনায়,
রাত জেগে রয় নিভৃতে একান্তে,
কোন এক মেঘ হতে
বর্ষিত হয় চাঁদের কিরণ চ্ছটা
ভেসে যায় স্বর্গপুরী সে বর্ষণে।
তুমি অনন্য চিনি না তোমাকে,
তোমাতেই বিরাজ তুমি,
তুমি অদ্বিতীয়
তুমিই তোমার তুলনা
হয় না কেউ তোমার উপমা,
রামধনু মেঘ হতে
বিচ্ছুরিত আলোর দ্যুতি
উজ্জ্বল সে আলোর চ্ছটা,
সাতরঙা মেঘের উজ্জ্বল জৌলুস
বর্ষা হয়ে নামে
সে নতজানু তোমার ছন্দের মুর্চ্ছনায়।
চিন্তার আলোর আভায়
কবি লুকায় নিজেরে,
নিরলস গেয়ে চলে,
অমর্ত সংগীত বার্তা বয়,
নির্ভীক সে বার্তা,
ভৈরোর গান গায়,
তোমারই মাঝে সে খোঁজে নিজেরে।
সম্ভ্রান্ত বিদুষী কুমারী
কোন এক প্রাসাদে নিবাস তার,
তোমারই মত নিরালায় একান্তে
তার বিরহ বেদনা,
সুরের মুর্চ্ছনায় নীরব প্রেম
ভেসে বেড়ায় রাতের জ্যোৎস্নায়।
শিশির তটে তুমি সোনালী জোনাকি
বাতাসে আকাশে গুঞ্জন তোমার,
অদৃশ্য তোমার উপস্থিতি,
ছড়িয়ে দাও নিজেকে
ফুলের সৌরভে ঘাসে ঘাসে।
নিজের সবুজ পাতার মাঝে
গোলাপ সে লুকায় নিজেকে,
বাতাসে সুবাস ছড়ায় নিরলস
তার সুবাসে মোহিত মধুকর,
ভুলে যায় সব
করে না মধুর সন্ধান আর,
অবশেষে উষ্ম বাতাসে
গোলাপ সে ঝরে পড়ে
তুমি গেয়ে চল অবিরাম।
ভোরের শিশির ভেজা ঘাসে, বর্ষাস্নাত পুষ্পে
বসন্তের বর্ষণ সংগীত বেজে ওঠে,
আনন্দ মুখর স্বচ্ছ সতেজ
তোমার সুরের মূর্চ্ছনা উপচে পড়ে।
সুদূর সে প্রান্ত সমুদ্রের ঢেউ
পাহাড়ের উৎরাই রঙিন সে আকাশ
সমতলের সোনালী শস্য
তোমার প্রেম বার্তা বেদনা বিরহ
কি দিয়ে সৃষ্ট তোমার আনন্দলোক?
বিষাদে ভরে না কভু
তোমার সে নির্মল আনন্দ ধাম,
গ্লানিকর কোন বেদনার ছায়া
তোমায় স্পর্শ করে না কভু,
পরমানন্দ তুমি, তুমি চিদানন্দ
বিরহের নীরব শোক
বেঁধে না তোমায় কখনও।
জাগ্রত বা নিদ্রামগ্ন
এ বিশ্বের জন্ম মৃত্যু রহস্য
গভীরতম যা কিছু
বিরাজে তোমার উপলব্ধিতে,
সে রহস্য রয়ে যায় অজানা
মরণশীল আমাদের কাছে।
প্রবাহিত হয়ে চলে আনন্দ ধারা
স্বচ্ছ স্রোতধারায় তোমার সঙ্গীতে।
আমরা দেখে ফিরি সম্মুখে পশ্চাতে,
না পাওয়ার বেদনায় বিদীর্ণ আমরা,
আমাদের আনন্দধ্বনি মেলে এসে
কোন এক আজানা আশঙ্কায়,
মধুরতম সে গান বেজে ওঠে
যে গান গভীরতম শোকের কথা বলে।
যদি আমরা উদাসীন
শোক ঘৃণা ভয় স্পর্শে না মোদের
ফেলি না চোখের জল এক বিন্দু,
তোমার আনন্দলোকে
মেলে না আশ্রয় আমাদের।
আনন্দ উৎসব যত
পুস্তকে সঞ্চিত সম্পদ সব
কবির শিল্প অভিমান
সবই তুচ্ছ, ধুলায় লুটায়,
এ জগতে তোমার কাছে।
যে আনন্দ ধারা প্রবাহিত তোমার মনোজগতে
ভাগ দাও আমায় তার অর্ধেক
ভাগ করে নিই সুখ ভান্ডার তোমার
আমার ওষ্ঠ হতে প্রবাহিত হোক সে আনন্দ ধারা
আজ বিশ্ব শ্রোতা তার
আমি যেমন অবলোকনে তোমার।
ভালবাসাই শেষশব্দ // ২৩ // মাধব মন্ডল
সংসার চেয়েই অঘর ছেড়ে আজকে
হাঁটু পুতেছি এ সংসারে
আকন্ঠ ডুবেছি
পেয়েছি ফুলের বাস
যূথিকা
যূথিকা-যূথিকা-যূথিকা!
রক্তবিন্দুতে মিশে সে একাকার
বিন্দু বিন্দুতে সবুজ প্লাবন
সংসার চেয়েই অঘর ছেড়ে আজকে
উমুক্ত মাটিতে
যূথিকা-যূথিকা-যূথিকা
আঃ! আঃ! আঃ! মাগো!
সান্দীপনি কুশারী // শ্যামল কুমার রায়
গুরুদেব! তুমি সান্দীপনি এ শতকের
তোমার কাছেই শিক্ষা শুরু নবজাতকের।
সহজাত ভাবে শেখে মাতৃভাষা
‘সহজ পাঠ’ এ প্রথম তোমার কাছে আসা।
তোমার সান্নিধ্যে দীক্ষা নিয়েছিলেন যাঁরা
স্ব স্ব ক্ষেত্রে উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা তাঁরা।
এক লপ্তে বাঙালির মনে ভাসে সেই সব নাম
মর্ত্যের পৃথিবীতে অমর্ত্য তাঁর নাম।
‘জল পড়ে, পাতা নড়ে’ তে লেখনী হয়েছিল শুরু
‘বাল্মীকি প্রতিভা’ তে উদ্ভাসিত গুরু ।
কত শত যাতনা, সয়েছো হাসি মুখে
সবেরই প্রতিফলন আছে তোমার লেখনীতে।
জীবন সম্পর্কে গভীর অন্তর্দৃষ্টি
তোমার কাছে পাওয়া।
তোমার লেখা গান শুনে মন ভালো হওয়া।
তোমার ঐ স্নেহের ‘মোহর’ আজও বেঁচে আছে
তোমার দেওয়া নাম ‘আকাশবাণী’তে তাঁরই গান বাজে।
শিক্ষা নিয়ে কাটাছেঁড়া হয়েছে জগতে কত
সব তত্ত্ব, সব নীতি শেষে তোমাতে প্রণত।
ধন্য হয়েছিলেন ইয়েটস তোমার মুখবন্ধ লিখে
তোমার লেখা ‘গীতাঞ্জলি’ বিশ্বজয়ী বটে।
তোমার সময়ে লাগেনি জগতে বিশ্বয়নের ছোঁয়া
প্রান্তিক মানুষের জন্যে তবু তুমি করেছিলে দোয়া।
তোমারই হাতে শুভারঙ্ভ হয়েছিল পৌষমেলা
বিশ্বায়নের মাঝেও তাই ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের পথ চলা ।
কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প ভবিষ্যত
‘হলকর্ষ’ ও ‘শিল্প সদন’ আজও দেখাচ্ছে পথ।
স্বামীজি সম্পর্কে তুমি ছিলে প্রায় চুপ-
রোঁমা রোঁল্যার সাথে কথনে স্বামীজিকে মেপে ছিলে তুমি নিখুঁত ।
সম্পূর্ণ মানুষ হতে আর কি কি লাগে?
সবেরই জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত তুমি নিজেকে দেখালে।সান্দীপনির শিষ্য প্রাণনাথকে যায় না যেমন মাপা
কুশারী তেমনি তোমাকে ছাড়া এ শতাব্দী ফাঁকা।
ভালবাসাই শেষশব্দ // ২৪ // মাধব মন্ডল
এত শীত করছে, কদিন, কি বলব!
এত শীত করছে, কদিন, কি বলব!
তুমি টিকিট কেটোছো জেনে কি ভাল লাগছে
তোমাকে এয়ারপোর্টে উষ্ণ অভর্থণা জানাতে
রজনীগন্ধা আর লাল……
এতদিনে নিশ্চয়ই তোমার পছন্দগুলো আরও গাঢ়ত্ব পেয়েছে।
এখন আমিও তেলের মত বুঝি–
খড়গাদার,ফেল্টুর,ঝিঙের দানার,শিক্ষানবিশ চাষার ইতিবৃত্ত
হোয়াটস অ্যাপী দুবাই প্রবাসী, ইউরোপিয়ান
এমনকি এ দেশীয়ের শীতার্ত হবার কাহিনীমালা।
এত শীত করছে, কদিন, কি বলব!
এত শীত করছে, কদিন, কি বলব!
এতটা দিন ঐ রজনীগন্ধা আর লাল…… এর মালাটাই তো
আমাকে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে উষ্ণ রেখেছিল।
কিন্তু তোমার আসার খবর আকাশবাণীতে আসামাত্রই……
মালাটাকে আর পাচ্ছিই না…..
এত শীত করছে, কদিন, কি বলব!
এত শীত করছে, কদিন, কি বলব !
To Daffodils // Robert Herrick, Daffodils // ভাবানুবাদ // ড্যাফোডিল // রণেশ রায়
ভালবাসাই শেষশব্দ // ২৫ / মাধব মন্ডল
ফুল তুমি কুঁড়ি ছিলে এতদিন