মধুবনি : পর্ব : ৬ : সুদীপ ঘোষাল

মধুবনি : পর্ব : ৬ : সুদীপ ঘোষাল

১৫

অংশুমানের ছেলে সৈকত বড় হয়ে গোয়েন্দাগিরি শুরু করল। প্রাইভেট ডিটেকটিভ। ডাক নাম সৈকত হলেও সুমন তার ভাল নাম। স্কুলে সুমন নামেই সে পরিচিত। সে তার বন্ধু বান্ধবীদের নিয়ে সমাজকল্যাণ ও কুসংস্কার মুক্ত সমাজ গঠনের জন্য এই কাজ শুরু করল। 

গোয়েন্দা সুমন বাবু শুধু গোয়েন্দা নন। তিনি একাধারে বিজ্ঞানী,গোয়েন্দা বিচক্ষণ ব্যক্তি।তিনি বিভিন্ন বিষয়ে  আপডেট সংবাদ রাখতে আগ্রহী। তিনি বিজ্ঞান এর সংবাদ  সম্বলিত বইগুলো পড়েন আর তোতনকে বিশ্লেষণ করে বোঝান সেই কারণগুলো।কম্পিউটার আর মোবাইলের সাহায্যে এখন পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় এনেছে মানুষ। টাকা নিয়েও তিনি কাজ করেন আবার সমাজসেবক হিসেবেও তার নাম আছেন। আজ গোয়েন্দা সুমন নিজের বাড়ির বারান্দায় বসে আছেন। এই সময়টাতে নিয়ে বিভিন্ন বিজ্ঞান সংবাদ এর বইগুলো পড়েন। গোয়েন্দা সুমনের নিত্যসঙ্গী তোতন। গোয়েন্দা সুমনের কথাবার্তা শুনছেন তোতন। সুমন বলছেন,  ভালুকের আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়ে গেছে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই। দুই মেরুর বরফ গলতে শুরু করেছে।এই বরফের দেশের বাসিন্দা হলো শ্বেত ভালুক তাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের বাসস্থান হারিয়ে যেতে শুরু করেছে। 

এর ফলে সে দলই তাদের নতুন বাসস্থান খোঁজার জন্য মাইল মাইল বরফের ভেতর দিয়ে সাঁতার কাটতে আরম্ভ করেছে।

সুমনবাবু বলছেন, এই ভল্লুক গুলো সাধারণত বেশিরভাগ সাঁতারে অভ্যস্ত নয়।।তোতন বল্লো, তাহলে এই ভাল্লুকের ভীষণ বিপদ।

তারা তাদের বাসস্থান এর আশেপাশে ঘুরে বেড়ায়।প্রয়োজনমতো সাঁতার কাটে।

 কিন্তু তাহলে এতদূর সাঁতার কেটে ফিরে আসবে কি করে। 

তখন গোয়েন্দা সুমন বললেন, কিছু সাঁতার কাটতে কাটতে খোলা সমুদ্রের বুকে এসে পড়েছে। তারা তাদের বাসস্থান থেকে কিছু কিছু সময় 95 কিলোমিটার পর্যন্ত চলে আসতে দেখা গেছে। ফিরে যাবার ক্ষমতা থাকেনা এবং জলের মধ্যে দেহ ত্যাগ করে।

তোতন বলল, এটা জাপান মিনারেলস ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস এর ‘এনভারমেন্ট নিউজ’ পত্রিকার নাম।

গোয়েন্দা সুমন বললেন, হ্যাঁ উত্তর উপকূলে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বেশকিছু শ্বেত ভালুক কে জলে সাঁতার কাটতে দেখা গেছে।

 ওই জায়গায় কুড়ি শতাংশ ভালুক আশ্রয় খুঁজে সমুদ্র ঝাঁপিয়ে পড়ছে এবং উত্তর মেরুর বরফ এশিয়ার প্রতি দর্শকের 10% গলতে শুরু করেছে। সেই হিসাব করে দেখেছি 1.5 মিলিয়ন কিলোমিটাে রবরফ নষ্ট হয়েছে।

গত চার বছরে আত্মহত্যার সংখ্যা  অনেক বেশি উঠেছে।

 নিজেদের মাংস নিজেরাই খাচ্ছে।খাবার নেই তাই।

 তারা একে অপরকে আক্রমণ করছে এই খাবারের অভাবে।

 এইসব জায়গাগুলোতে যেখানে এরকম ঘটনা ঘটেছে গবেষকরা পরীক্ষা করে দেখেছেন যে জায়গাগুলো মিশে গেছে সমুদ্রের বুকে।

তোতন এই কাহিনী শুনে খুব দুঃখ পেল।

হঠাৎ ঘরে প্রবেশ করলেন, এক বৃদ্ধ ব্যক্তি।

 তিনি বললেন তিনি এক বিপদে পড়েছেন। গোয়েন্দা সুমনের সঙ্গে কথা বলার আগে তোতনকে কথা বলতে হয়। 

তোতনের সঙ্গে কথা বলতে হয় বৃদ্ধ জানতেন না তোতন দরজা খুললেন।

 তোতন গিয়ে প্রথমে দরজা খুললন।

 তারপর বললন, কাকে চাই?

বৃদ্ধ বললেন আমি গোয়েন্দা সুমনের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি

– বলুন আমাকে বলুন কি প্রয়োজন 

-আমার নাম তোতন। আমি তার সহকারি। তখন বৃদ্ধ ব্যক্তি বললেন, আমার একটা সমস্যা হয়েছে কিছুক্ষণ বসে আলোচনা করলেই ভালো হয় তখন বললেন তোতন বলল আসুন ঘরে আসুন বসুন।

তারপর বৃদ্ধ ব্যক্তিটি চা খেয়ে গোয়েন্দা সুমনের দেখা পেলেন।

 তার  সামনাসামনি বসলেন সুমন।

 বললেন, বলুন আপনার সমস্যা কি?

 বৃদ্ধ শুরু করলেন আমাদের এক প্রত্যন্ত গ্রামে বাড়ি। সেখানে হঠাৎ আমি একদিন রাতে আবিষ্কার করলাম এক প্রাণীকে সেটা পৃথিবীর প্রাণী নয় অন্য কোন গ্রহ থেকে আসা হয়তো তারা মানুষের ভাষা বুঝতে পারছে।  কিন্তু আমি এটা বলা মাত্র গ্রামে কোন লোক বিশ্বাস করছে না। গ্রামের লোক আমাকে পাগল বলছে। এটাকে দেখাতে না পারলে লজ্জায় আমাকে মরতে হবে। 

জীবটি লুকিয়ে পড়ে যে কোন এক জায়গায়। তাকে কেউ দেখতে পাচ্ছে না।

এখন আপনার সাহায্যে  প্রাণী কে আবিষ্কার করে আমার কথার সত্যতা প্রমাণ করাই এখানে আসার কারণ।

 তার জন্য অর্থ ব্যয় করতে আমি প্রস্তুত আছি।

গোয়েন্দা সুমন বলেন, আপনি আশ্চর্য হবেন না।  আরে বাবা  ভলতেয়ারের সেই বইটা পড়েন নি  যে পৃথিবীতে এসেছে তার চেহারা অদ্ভুত 24,000 জ্যামিতিক অংশ দিয়ে সেই জীবের দেহ তৈরি।

 প্রতিটি অংশের দৈর্ঘ্য 5 ফুট।

 তার নাকের দৈর্ঘ্য 5714 ফুট পড়েছেন। এত বড় নাকের মালিক  যিনি হন তাদের বুদ্ধি স্বাভাবিকভাবেই মানুষের চেয়ে অনেক বেশিগুণ হয়।

বৃদ্ধ বললেন আমিতো অতশত জানিনা আমার পড়াশোনা অতদূর নয়।

 আমি তবু দেখলাম সূর্যের বিপরীতে মানুষের ছায়া যত দীর্ঘ হয়।

সেরকম দীর্ঘ চেহারার ছায়ার মত কালো চেহারার লোক।

 লোক বলাই ভাল কারণ হচ্ছে এ লোক নয় অন্য গ্রহ থেকে আসা মনে হচ্ছে।

আমাদের পৃথিবীর মানুষ নয়।

আপনি গিয়ে সেটা আবিষ্কার করতে পারলে সব থেকে ভাল হবে।

সুমন বললেন নিশ্চয়ই যাবো আমরা আপনার ওখানে যাব ঠিক আছে আমরা আপনার সঙ্গে দেখা করে সমস্ত কথা বলব।

পরেরদিন গোয়েন্দার সাজে সেজেগুজে গোয়েন্দা সুমন সহকারি তোতনকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন সেই বৃদ্ধের বাড়ির উদ্দেশ্যে।

 ঠিক 4 ঘন্টা ট্রেন জার্নি।

 পরে তারা তার বাড়িতে পৌঁছালেন।

বৃদ্ধ তৈরি ছিলেন তাঁদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্য।

 তিনি নিয়ে গেলেন ঘরে এবং তাদের থাকার জায়গাটি দেখিয়ে দিলেন।

দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করে গোয়েন্দা সুমন আর তোতন গ্রাম দেখতে বেরোলেন।

 বেশ বৈচিত্র্যে ভরা সবুজ সবুজ গাছগাছালি মন কেড়ে নেয়।পাশেই ফালি নদী। পাড়ে ফল গাছ।

 ভেতরে জঙ্গলের ভেতর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে তোতন আর   সুমন কথা বলতে বলতে চলেছেন। এক জায়গায় তারা বসে পড়লেন। জঙ্গল খুব ভালোবাসেন গোয়েন্দা সুমন।

 তিনি সবুজ একটা পাতা হাতে নিয়ে বললেন এটা কি গাছের পাতা বলতো?

 তোতন বলল, এই পাতা আপনি হাত দিয়েছেন? আপনার তালুতে আছে কোন অস্বস্তি হচ্ছে না বলছেন না তালুতে বিছুটি পাতার কোন প্রতিক্রিয়া হয় না।

কিন্তু এটা ঘষে দিলে রস  যদি এদেহে লাগে তাহলে তখন জ্বলতে শুরু করে।

 বলছি, আমি চিনি এটা বিছুটি পাতা।তোতন বললেন। 

Leave a Reply