১৬
গোয়েন্দা সুমন আক্ষেপ করে বললেন এখনকার ছেলেরা এই বিছুটি পাতা, ডুমুর গাছ, নয়ন তারা গাছ, তারপর বাঁদর লাঠিগাছ এইগুলো কি আর চিনতে পারবে?
কত বিভিন্ন রকমের প্রকৃতিতে গাছ আছে। যারা আপনাআপনি বেড়ে ওঠে। তাদের লাগাতে হয়না কদবেল গাছ বেলগাছ এগুলো আস্তে আস্তে যেন হারিয়ে যাওয়ার পথে। বিশ্বপ্রকৃতির কতটুকু চিনি আমরা ভাই।
সুমন আর তোতনের কথা বলতে বলতে কখন যে সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত নেমেছে তারা বুঝতেই পারেনি।
হঠাৎ বন্ধ করলো তাদের আলোচনা একটা ছায়ামূর্তি।
কে যেন আড়ালে সরে গেলো।
তোতন ইশারা করে গোয়েন্দা সুমনকে, এগিয়ে গেলেন জঙ্গলের পাশে।
তিনি দেখতে পেলেন একটা ছায়ামূর্তি যাচ্ছে। ওরা দুজনেই পিছনে ছুটতে শুরু করলেন।
তাড়া করতে করতে জঙ্গলে গভীরে গিয়ে ছায়ামূর্তি দাঁড়িয়ে গেল আগ্রহ ভরে।
দাঁড়িয়ে পরিষ্কার বাংলা ভাষায় বলল কেন তোমরা আমার পিছু ধাওয়া করেছ? কোন প্রয়োজন আছে।
গোয়েন্দা সুমন উত্তরে বললেন আপনি এত সুন্দর পরিষ্কার বাংলা ভাষা কি করে বলছেন?
তখন ছায়ামূর্তি উত্তর দিলো, আমাদের গ্রন্থিতে ভাষা অনুবাদের গ্রন্থি ব্রেনে সিলেক্ট করা আছে যাতে আমরা সব ভাষাই বুঝতে পারি।
গোয়েন্দা সুমন বললেন, আপনি কোন গ্রহ থেকে এসেছেন।
ছায় বলল আমি ইউরেনাস গ্রহ থেকে এসেছি আমরা আমরা পৃথিবীতে বেড়াতে এসেছি। এখানকার জীব বৈচিত্র। এখানকার সবুজ প্রকৃতি বৈচিত্র দেখতে।
আমার মত অনেকেই এখানে এসেছেন। আপনার নাম কি?
আবার সুমন জিজ্ঞাসা করল আপনার নাম কি?
উত্তর দিলো ছায়া আমার নাম সাইকোভেগাস।
আপনার নামের সঙ্গে সাইকো যুক্ত কেন?
প্রশ্নের উত্তরে বলল, আমরা সব মানুষকেই সন্দেহ করি। তারপর সন্দেহের তালিকা থেকে তাঁর অন্তরের কথা বুঝতে পারি।
গোয়েন্দা সুমন বলল আপনাদের পরমায়ু কত সাইকোভেবগাস বলল, আমাদের পরমায়ু খুব কম। খুব কম।
তোতন বল্লো, কত কম বলুন না।
বলল, আমাদের পরম আয়ু মাত্র সাড়ে 600 বছর।
আমরা মানুষরা তো 100 বছরে বুড়ো।
আমাদের চামড়া ঝুলে পড়ে।
আশি বছর হলে আমরা হাঁটতে পারি না।
সাইকো বলল, তোমরা খাও তোমাদের খাওয়া-দাওয়া ঠিক না।
আমরা গাছের সবুজ পাতা আর সৌরশক্তি সাহায্যে বেঁচে থাকি।
আর তোমরা খাও আর চৌদ্দবার করে মলত্যাগের জন্য যাওবাথরুমে।অই সময়টা আমাদের জীব উন্নয়নে কাজে লাগাই।কাজ করতে করতে খাই। বাকি সময় ঘুমোই। ঘুম না হলে উন্নয়ন বন্ধ।
তোতন বলল,এটা নতুন কথা। তারপর বলুন।
-আমরা বছরে একবার মাত্র মল ত্যাগ করি। গোয়েন্দা সুমন বললো আমাদের প্রকৃতি খুব সুন্দর। দেখে আপনার আনন্দ হবে আশা করি।
সাইকো ভেগাস বললন, আপনাদের গ্রহে আরো গাছ লাগান।
সবুজে ভরে তুলুন। তানাহলে, ‘ভেগো ভাইরাসে ‘ধ্বংস হয়ে যাবে এই গ্রহ।
তোতন বলল আমরা শুনেছি ইউরেনাস এত মাটি নেই।
সাইকো বলল আপনারা শুনেন অনেক কিছু কিন্তু কোনটাই সঠিক নয়।
স্কাইল্যাব এ চড়ে আমরা মহাবিশ্বে ঘুরে বেড়াই। এই মহাবিশ্বের কতটুকু খবর রাখেন আপনারা মানুষেরা।
গোয়েন্দা সুমন বললো আমরা দুজন আপনাদের গ্রহে যেতে চাই আপনি কি নিয়ে যেতে রাজি?
সাইকো বেগাস বলল, হ্যাঁ নিশ্চয়ই আমার সঙ্গেই আমার মহাকাশযান আছে।
আপনাদের বিশ্ব বাংলা লোগো ওই সবুজ রঙের গোল ফুটবলের মত আমাদের মহাকাশযান।
গোয়েন্দা সুমন আর তোতন মহাকাশযানে চেপে বসলো। গোয়েন্দা সুমন বললো আমাদের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ফেরত দিয়ে যাবেন তো?
সাইকো বলল, আমরা কথা ও কাজে সত্যতা রাখি।
সাইকো বলল আমাদের প্রতিটি মিনিট খুব দরকারি তাই আমরা কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আপনাকে এখানে পৌঁছে দেবো কথা দিচ্ছি।
মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছে গেল ইউরেনাস।প্রচুর অক্সিজেন।হাল্কা শরীর তোতন বলল। সুমন বললেন, এ জয়ফুল প্ল্যানেট ফর গ্রীন।
এত মহাকাশযানের গতি দেখে গোয়েন্দা সুমন অবাক। বলল আপনাদের এখানে এত নিশ্চুপ কেন। এত চুপচাপ সব কথা বলছে।
সাইকো বলল আমাদের এখানে মানুষ বলি না। মানুষ তো নয় এদের অন্য নাম আছে।ভার্জিন প্লানেটেরিয়ান।
এই গ্রহে বেশিরভাগ সময় রাতে ঘুমোতে হয় এবং ঘুমিয়ে থাকার ফলে এদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিশ্রাম পায় এবং পরম আয়ু বাড়ে।
কিন্তু গোয়েন্দা সুমন বলল আপনারা কি করে এত উন্নত হলেন এই সামান্য ঘন্টা জেগে থেকে। সে বলল আমাদের প্রতিটা মিনিট হচ্ছে ঘন্টার সমান।
আমরা প্রত্যেকটা মুহূর্তকে সুন্দর কাজে ব্যয় করি।
গোয়েন্দা সুমন বললেন, এই রহস্য আমাকে একটু বিশ্লেষণ করুন বলুন।
তখন সাইকো বেকাস বলল প্রায় উনিশ লক্ষ বছর ধরে এই 12 ঘন্টা বাধ্যতামূলকভাবে এই গ্রহে শারীরবৃত্তীয় বিবর্তন ঘটেছে।
আমরা উপযোগী হয়ে উঠেছি এই গ্রহে। এটা লক্ষ্য করবার মতো আমাদের যেমন দিনের বেলায় খিদে পায়। রাতে সে অনুভব খিদে করে না।
অল্প বয়সে যারা আমাদের গ্রহের ঝটপট করে কিন্তু রাত্রে 12 ঘণ্টা ঘুমিয়ে না খেয়ে কাটিয়ে দেয় কি করে এটা সম্ভব হয় একমাত্র মানবদেহে অপেক্ষাকৃত অল্প পরিমাণে যার জন্য হয়।
গোয়েন্দা সুমন ঠিক ধরেছেন এই পয়েন্টটা বললেন আমাদের মানব শরীরে ঘ্রেলিন হরমোন নিঃসরণঘটে। এটা তো আপনাদের জীবনের সঙ্গে মানবজীবনকে মিলিয়ে দিচ্ছে। সাইকোভগাস বলল, অতএব নিশ্চিত হয়ে যান। আপনাদের পরমায়ু ক্রমশ বাড়তেই থাকবে। তবে শর্ত হল সবুজ গ্রহ চাই।
তাহলে এটা কিন্তু আপনাদের গ্রহের জীবের সঙ্গে আমাদের গ্রহের জীবের হরমোন একদম মিলে যাচ্ছে।
সাইকো বিকাশ বলল দীর্ঘকালীন হরমোন নিঃসৃত অপেক্ষাকৃত অল্প পরিমাণে যার জন্য দেহে ক্ষুদ্র উদ্যোগ সামান্য হয় অন্যদিকে ওই সময় ক্ষুদ্রতম নিঃসরিত হয় এই দুটি রাসায়নিক যৌগের সমানুতা নিয়ে বিব্রত হয় না মানুষ নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারে ঘুমের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে কেননা ঘুমের দৈর্ঘ্য যখন 8 ঘন্টা থেকে কমিয়ে 5 ঘন্টা না হয় তখন দেখা যায় ক্ষুদ্র ঋণের পরিমাণ শতকরা 15 ভাগ বেড়ে গেছে অন্যদিকে ক্ষুদ্র ঋণের পরিমাণ শতকরা 15 ভাগ কমে গেছে।
সাইকো বেকাস বলল এই শরীর দীর্ঘ ঘুমের উপযুক্ত হয়ে বিবর্তিত হয়েছে বর্তমান জিভে কাজের পরিমাণ বাড়ায় ঘুমের পরিমাণ কমে গেছে প্রতিদিন 12 ঘণ্টা ঘুম মনে হয় সর্বনিম্ন পরিমাণ এর থেকে কম হলে শরীর ও মনে নানা রকম বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায় ভূমি মানুষের সঞ্জীবনী সুধা সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে কার্যকর শারিরীক ও মানুষিক বন্ধু শত দুঃখ ভরা রাত্রি যখন প্রয়াত হয় তখন রাতের ঘুম থাকে এক নতুন মানুষের পরিণত করে সকল আশা উদ্দীপনা নিয়ে নতুন করে জীবন সংগ্রামে।
বন্ধু সুমন বললো তাহলে এই ঘুমের পরিমাণ পৃথিবীর মানুষের বেড়ে গেলে তাদেরও পরমায়ু আপনাদের মত বেড়ে যাবে সাহস বললো নিশ্চয়ই বাড়বে এবং এটাই একমাত্র উপায় কিন্তু একটা শর্ত আছে শর্ত হলো সবুজ গ্রহ চাই সবুজ ছাড়া মানুষের মুক্তি নাই ।
তোতন বলল তাহলে আমরা শিখলাম মানুষের বার্ধক্য ত্বরান্বিত হয় দীর্ঘকাল ধরে নিবে করলে শরীরে কার্বোহাইড্রেট মেটাবলিজম সংক্রান্ত ব্যাহত হয় দেহ কোষের মধ্যে অক্সিডেশন বর্জ্য পদার্থের পরিমাণ বাড়ে তার ফলে কোশপর্দার ডিএনএর ক্ষতি হয় বহু পরীক্ষার ফলে এটা আজ প্রমাণিত হয়েছে যারা 6-7 ঘন্টা ঘুমায় তারা 4-5 ঘন্টা ঘুমায় তাদের থেকে।
সাইকো বেকাস বলল আমি শুনে খুশি হলাম সুমনের সাহায্যকারী তথনও যে এত জ্ঞানী মানুষ তা দেখে আমার ভালো লাগলো আপনারা দীর্ঘজীবী হোন।