পিতৃপক্ষ শেষ, দেবীপক্ষের সূচনা
শরতের নীলাকাশে পেঁজা তুলোর মতো
সাদা মেঘ,
সরোবরে পদ্ম, নদীতীরে কাশফুল,
উঠোন জুড়ে শিউলি,
শিশির গন্ধী ভোর….
মেনকার স্নেহধন্যা বাপের বাড়ি আসছে,
কত আয়োজন,
বাজলো আলোর বেণু, মাতলো ভুবন….

মাতৃজঠরে কন্যাভ্রূণের শ্বাসযন্ত্র আড়ষ্ট,
পৃথিবীর আলো দেখবার জন্য
বুকের উনুন থেকে উপচে ওঠে কান্না….

ইষ্টিশানের কোলঘেঁষে
একলাটি ছিল সেই কালো মেয়ে
মনে চৈত্রের দহন
এ বছরও আসেনি ফাল্গুন….

শূন্যতার স্বাদ ঠোঁটে নিয়ে
পড়ন্ত বিকেলের হাওয়া শেষ রোদ
গায়ে মেখে, দিয়ে যায়
ধর্ষিতা মেয়ের পোড়া গন্ধ,
জেগে থাকে শিথিল বিমূঢ় চাঁদ…

নিষিদ্ধ পল্লীর বন্ধ দরজার ওপারে
দেহ ঢেলে দিয়ে কোনো দুর্গা
মনে তোলে ঝড়,
মাথার ওপর বনবন করে পাখা ঘোরে
বিপুল ব্যথায় ছিঁড়ে যায় রাত….

দুঃখ ঘেঁটে ঘেঁটে
ফুটপাতে, রাস্তায়, বস্তিতে, অভিজাত
এলাকায় কন্যা প্রকাশ্যে বিক্রি হয়,
মেনকা কন্যা পূজিত হয়,
নবমী নিশি পোহালে চোখ
অশ্রুসজল …..

আকাশ ভিজিয়ে অন্ধকার,
জানলার গরাদে মাথা রাখে নিরুপমা,
নবমী রাত শেষে বিসর্জনের
লম্বা লাইনে থাকবে সেও,
ক্যানভাসে মেনকা কন্যার মুখ,
নিঃস্তব্ধ ভোর খান খান হয়ে ভেঙে পড়ে
বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠে,
শরতে আজ কোন্ অতিথি
এল প্রাণের দ্বারে।