বেশ কিছুদিন অতিক্রান্ত হয়েছে।হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে তিনি মৃত্যুর প্রহর গুণছেন।বড়ছেলে হাসপাতালের বাইরে দৌড়াদৌড়ি করছেন।ছোটছেলে সেখান থেকে অনেক দূরে থাকেন।পরিবার নিয়ে আসতে কিছু সময় তো লাগবেই।কিন্ত মৃত্যু যে কারোর জন্য থেমে থাকেনা।
ডাক্তার বাবু অবস্থা দেখে বড়বৌকে বললেন-‘উনি আর বেশীক্ষণ থাকবেন না।’সামনে দাঁড়িয়ে থাকা নার্স ইশারায় বড়বৌকে বললেন নির্মলা দেবীর মুখে জল দিতে।বড়বৌয়ের চোখে জল চলে এল।নির্মলাদেবী যে নাতির হাতে জল চেয়েছিলেন।বড়বৌ যে তাঁর ছোটো দুই শিশুকন্যাকে নিয়ে এসেছেন।বড়টিতো বাইরে পড়াশোনা করে।কে জল দেবে এই মৃত্যু পথযাত্রীকে?
সামনে দাঁড়িয়ে থাকা নার্স শিশুকন্যাদুটির হাতে একটি বাটিতে জল ও চামচ দিয়ে বললেন-‘যাও,ঠাকুমার মুখে দুচামচ জল দাও।’শিশুদুটি দুচামচ জল ঢেলে দিল নির্মলাদেবীর মুখে।
পরম তৃপ্তির সাথে সেই জলপান করে নির্মলাদেবী চিরঘুমের দেশে পাড়ি দিলেন।যাই হোক,নাতি না হলেও নাতনীদের হাতে জলতো পেলেন তিনি।
নির্মলাদেবীর চোখের কোণ বেয়ে জলরেখা কিন্তু তখনো গড়াচ্ছিল।আর মুখে ছিল পরম শান্তির মৃদুহাসির আভাস।