কেমন আছো তোমরা?
বেলা শেষের বাতিঘরে?
সেই কলেজ জীবনের দেবানন্দপুরের কথা মনে আছে তোমাদের?
সেদিনের বাসব হাত খরচের টাকা বাঁচিয়ে একটি পুঁথির মালা কিনে নিয়ে গিয়েছিলো -শুধু তোমারই জন্য
তুমি তা ছুঁয়েও দেখো নি
শরৎ ভিটের পাশের পুকুরে অভিমানী বাসব সেটি ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে বলেছিলো -এবার ফেরা যাক
ফেরার পথে তুমি বলেছিলে হেমন্ত’র সেই গানটা গাও –
বাসব গেয়ে ছিল -এক গোছা রজনীগন্ধা হাতে দিয়ে বললাম,চললাম —–
তারপর তুমি সত্যিই চলে গিয়েছিলে
মনে আছে তোমার?
দশম শ্রেণীতে পড়ার সময় বাসবের লেখা রতি -আরতি কবিতাটির কথা?
এক সহপাঠী তোমাকে কবিতাটি পড়তে দিয়েছিলো —-
কাঁচা বয়েসের এক অব্যক্ত আবেগে তুমি বাসবকে সেদিনই স্টেশনে দেখা করতে বলেছিলে –
এরপর কত চিঠি লিখেছিলে দুজনে
কত স্বপ্নের জলছবি আঁকা হয়েছিল সেদিন
তারপর তোমরা এখান থেকে বদলি হয়ে চলে গেলে
যেদিন চলে গেলে সেই রামপুরহাট প্যাসেঞ্জার ট্রেনে –
বাসবও গিয়েছিলো কিছুটা পথ
এরপর ডাকঘরের জানলায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে একদিন ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলো বাসব –
চোখের জলে কেটে গিয়েছিল কত নিস্তব্ধদুপুর
আর চিঠি আসেনি
এরপর কলেজ জীবনে আবার দেখা
রেলস্টেশনের চাঁপাগাছটার তলায় দীর্ঘ সময় কেটেছে তোমাদের
শুরু করেছিলে নতুন করে পথ চলা —
কলেজ জীবনের শেষ সময়ে
আবার মরণ হলো তোমার
একদিন হঠাৎ সেই তুমি আবার বদলে গেলে
দেবানন্দপুর -ই শেষ পুর হয়েছিল তোমাদের
তোমার হাত ধরেছিল অন্য কেউ l
আজ বাসব ও তুমি বয়েসের ভারে ক্লান্ত শাখা প্রশাখায় অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই শুরু হয়েছে তোমাদের
সংসার সীমান্তে পৌঁছে কেমন আছো তোমরা?
স্মৃতি হাঁটকে দেখো না একদিন
ভুলে যাওয়া অতীতের কোনো ম্লান মুখ মনে আসে কিনা
কিংবা কোনো ছেঁড়া কবিতার একটি লাইন
অবশ্য বেলা শেষের গান সকলের ভালো লাগে না
একদিন স্মৃতি- বিস্মৃতির আড়ালে
চলে যায় –
ক্লেদাক্ত জীবনের সব দিনলিপি
ছেঁড়া পর্দার মতো বাতিল হয় সলজ্জ অতীত
শেষে, বিবর্ণ হয় বেদনার পাণ্ডুলিপি l
আপনার মতামতের জন্য