Akash Shil

আকাশ চন্দ্র শীল

ঘুমপাড়ানি

আকাশ চন্দ্র শীল

“উত্তরে মাথা দিস নে খোকা, ওইভাবে মরা শোয়ায়।”
কুলক্ষণে কখন অলক্ষুণে ঘটনা ঘটি যায়! এইতো সেদিন তর পিসতুতো ভাইয়ের মাথায় টিকটিকি পইড়লো।কিন্তু, লক্ষ্মীছাড়া স্নানে গেলে না। আর, অশুভ লক্ষণখানা শুভর জীবনের সকল রং ধুইয়ে দিলে। আর শোন!খাওয়ার পর মোচড় দিস নে যেন;যা খালি এতোক্ষণ, সব কুত্তার পেটে চলি যাবি। আর, সূর্যের দিকে মুখ কইরে ভাতের থালা রাখিসনি যেন;পেটে অসুখ কইরবে। তর বাপ তো একাদশীর দিন পাঁঠাবলি দিয়ে চিতেয় উইঠলো,নাইলে কি আইজ আর এতো কষ্ট করা লাইগতো? আর, কাউরে থুতু দিস নে যেন;ওর ওসুখ তর শরীলে আইসে পইড়বে।আমি তর মামার অনেক আদরের ছিলাম রে!কোনোদিন গায়ে হাতখানা তুলেনি।

তর মামা কইতো,”ছোটরা হইলে নাড়ু গোপালের মতোন,ওদের গায়ে হাত তুল্লে পাপ হয় রে”। সন্ধ্যা হইলেই হুতুম ডাইকতো সজনে ডালে বইসে আর, তর দিদিমা চুলোয় লোহা পোড়া দিতো । একটা দিন সন্ধ্যে না দিলেই এই মরার অলক্ষুণে ডাক টা শুরু হইতো। আর, তর বাপ যেদিন মইরলো সেদিন তো কাকে তো পাইরলে আমার মাথা খাইয়ে নেয় কা -কা করে। অলক্ষুণে কিছু দেইখলেই মনে বড্ড ভয় লাগে রে খোকা!আমি বহু হাড়িয়েও শক্ত হইবার পারি নাই যে!বাপটা আমারে অল্প বয়সে বিয়া দিয়া লোকান্তর হইলে।মা ও বাবার শোকে পার হইয়ে গেলে। ভাইটা বিয়ে করে বদলে গেছে,খোঁজ খবর নেয় না। আমার যে তুই ছাড়া কেউ নাই রে!একদিন কামাই কইরে আমারে ২০০ টাকা দিবি খোকা? মায়ের শ্মশানে একটা কাপড় দিয়ে আইসবো। আইজ পর্যন্ত একটুকরা সুতোর দস্যি ও দিবার পাইরলাম না মা- বাপ রে।
রাইত হইছে খোকা, ঘুমো এইবার।
আমি বেশিদিন থাইকবো নেরে খোকা,মনটা বড় কু-ডাকে!

আকাশ চন্দ্র শীল

শিক্ষার্থীঃ ইংরেজি ভাষা বিভাগ,

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

https://bangla-sahitya.com/post/

Leave a Reply