
সংকেত
অঞ্জন ব্যানার্জ্জি
আমার মধ্যাহ্নে কোন রোদ নেই
পাহাড়ের নিশ্চলতা,বনের নিস্তব্ধতা
এক বিস্তৃত ছায়া অবসন্ন অবসাদ
সংখ্যাহীন বিজ্ঞাপনে ঢাকা নিঃশব্দ আঁধার।
উদভ্রান্ত অনিকেত হাওয়ায় ধ্বংসের গন্ধ
ভিক্ষাবৃত্তি,স্বরহীন ক্ষুধার শব্দ
আনাচে কানাচে নিঃসাড়ে চমকানি
কোন চিহ্ন রাখে নি বাহাদুর সরকার।
প্রতিরোধে মানুষের হাঁটা পথ, বিদ্রোহী সম্বোধন
আড্ডার বারান্দা,চায়ের দোকান, সাংস্কৃতিক মন
প্রশ্নবিদ্ধ প্রাত্যহিক;দুর্যোধনের দম্ভ সম্প্রচার
এ কি অদৃষ্ট আভাস সংকেত হারবার!

লুন্ঠিত পরিচয়
অঞ্জন ব্যানার্জ্জি
ঘুমিয়েছি আলোর নক্ষত্র দেখে আকাশে
ঘুম ভেঙ্গে আলো নেই সকালে
কালো গহ্বর থেকে যার সৃষ্টি
সেই গহ্বরে আবার ফিরেছে পৃথ্বী
পথে নৃশংস ক্ষুধার্ত নেকড়ের পাল
হিংস্র নখে রক্ত মাংস কঙ্কাল
চারিদিকে চাপ চাপ অন্ধকার
ঘরে পথে লাশের পাহাড়
আতঙ্কে ঢাকা মানুষের সুখ
ধর্মের ধোঁয়ায় অস্পষ্ট মুখ
লুন্ঠিত মানুষের নিজ পরিচয়
ধর্মের নামাবলী বাঁচার আশ্রয়।

ফিরে এসো কবি|
অঞ্জন ব্যানার্জ্জি
কত সভা আলোচনা তোমাকে নিয়ে
তোমার মৃত্যুর একাশি বছর পরে
চর্বিত চর্বন বিকৃত বিনোদন বোদ্ধাদের উৎসবে
সংস্কৃতির পিঠস্থান নামে খ্যাত কবিদের শহরে।.
ভালবাসার অন্তরঙ্গ রণনে বন্দিত আকুতি
মহতের ক্যানভাসে জীবন জগতের প্রতিকৃতি
কত সুখ দুঃখ আনন্দ বিষাদ বেদনা
তোমার নাটক গদ্য কবিতায় সেই চেতনা।.
তোমার গানে উপনিষদের মর্মর বানী
তোমার কবিতায় মন্দ্রিত অভ্যুদয়ের ধ্বনি
তোমার সাহিত্য দেখায় নিঃশ্রেয়সের পথ
দানবের তান্ডবে স্তব্ধ তোমার সেই রথ।.
হিংসার কর্কশ শব্দে লালিত্য মুছে গেছে
বড়ো গলায় হিটলার মুসোলিনি কথা বলে
উন্মত্ত পিশাচের ছায়া পথ ঘাট জুড়ে
ডুবে আছে পৃথিবীর ছায়া রক্তসিক্ত জলে।
সময়ের ফেরে দগ্ধ মানুষ পথ খোঁজে
বর্ণমালায় রক্তাক্ত জীবনের নতুন ইতিহাস সাজে
সময়ের শব্দস্রোতে আগত দুরন্ত ঝড়ের আওয়াজ
মানুষের হাঁটা পথে চুপিচুপি বিপ্লবী আলাপ।
তোমার আকুতি তুমি আমাদের লোক
তাই হোক তোমার শেষ পরিচয়
আমাদের লোক হয়ে ফিরে এসো কবি
তোমার কলমে জ্বলুক বিষ্ফোরণের প্রথম অগ্নি।.
উজ্জীবিত মানুষের ঢল নেমেছিল বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনে
ধর্মহীন সূত্রে বেঁধেছিলে তুমি তাদের রাখীবন্ধনে
উঠুক বিদ্রোহী মানুষের ঢেউ কলমের বিষ্ফোরণে
আমাদের সাথে থাকো কবি বিপ্লবী দিনে।