তেজ
বিশ্বনাথ পাল
ওমন আদর করা আর বাউরীর শুয়োর পোষা এক। বুইলে কিনা, আমি আর মনারে পাঠাব নি অর শউর ঘরে। মহাভারত খানা গুঁটিয়ে শালু কাপড়ে মুড়তে মুড়তে মানিক মাস্টার জিজ্ঞেস করে –‘কি যেন বলছিলে চক্কোত্তি?’ হালে পানি পেয়ে সোৎসাহে টেরু চক্কোত্তি বলে,আবার আবার সেই ঝামেলি! মনাকে আবার খেদিয়ে দিইচে শউর ঘরের লোকেরা।
জামাই সিভিক পুলিশ হলে কি হবে। বাপ, মায়ের বস। কাল থেকে ভর পোয়াতি মেয়েটা আমার যে চলে এলো, তবু জামাইটো একটা খোঁজ- খবর পর্যন্ত লিলে না।
মনোর মা কি বলে ,জানো মাস্টার, বলে– ঐ রকম নিমুরুদে জামাইয়ের ঘর করতে আর পাঠাবো নি।বলি, মেয়েটো আমার বানের জলে ভেসে তো আসে নাই। উদের যদি আধসের গোঁসা থাকে তবে আমাদের তিন পো আছে লিচ্চয়!
মানিক মাস্টার পাশের গাঁ কেরামত পুরে মাস্টারি করে। প্রাক্তন ছাত্র আবার সিভিক পুলিশ! স্র্রেফ মাথায় আস্ত টাকের জন্য কুুুুথাও বিয়ে হচ্ছিল না ।মানিক মাস্টারই টেরুর মেয়ে মনোরমার সঙ্গে বিয়েটা দেয়। ছাত্রের পিতা দিলীপ বাঁড়ুয্যে এ তল্লাটের ডাক সাইটে কৃপণ। খুঁটি নাটি লেগেই থাকে। ছেলের রোজগারে বউমার ভাগের ঘোর বিরোধী।
অন্যদিকে মনোরমা জন্ম সূত্রে মুখোরা মায়ের পাটাটাই রেখেছে। তাই শাশুড়ি বউমার ঝগড়া দুষ্টু প্রতিবেশিদের মাতনের সামগ্রী হয়ে উঠেছে। তাই তিন সন্ধের সময় গৃহনক্ষী তায় অন্তঃসত্ত্বা মনোর আসা তারা মেনে নেয় নাই।
আজো মেনে নিতে পারে নি বলে আজও আসে নাই।বিয়ের কনের মতো রাস্তার দিকে একদৃষ্টিতে চেয়়েই আছে মনো, ভাবছে মেয়ে হয়়ে ওর এত তেজ না দেখালেই হত।