Dirty Sex

ডার্টি সেক্স সৌদামিনী শম্পা

ডার্টি সেক্স
সৌদামিনী শম্পা

বাবা গো, এই আধবুড়ি বয়সে এসে কত যে নতুন শিখছি, তা আর বলার না। তাও আবার হাঁটুর বয়সী ছেলেমেয়েদের থেকে। একজন শিক্ষক তখনই ভালো শিক্ষক যখন তিনি নিয়মিত শেখেন। আমার ঝুলিতেও এই নতুন শব্দ সংযোজন ডার্টি সেক্স।

জানি, এ দেশে সেক্স নিয়ে কথা বলা ওপেন ফোরামে, বিশেষ করে মেয়েদের জন্য এক গর্হিত অপরাধ। তবে একটাই শান্তি এ দেশটা ইরান নয়। কিছু লোক ইনবক্স বা কমেন্টে সুড়সুড়ি বা গাল দিলেও শর কলম হবে না। এ দেশে তো সেক্সুয়াল হাইজিন সম্পর্কেও আমাদের ধারণা নেই।

যারা ফেমাজের সদস্য সদস্যা তাদের হয়তো মনে হবে আমি ভিনগ্ৰহী কিন্তু এখনো এটাই সত্যি গ্ৰামে বহু মেয়ে এবং মহিলা বাড়ির ব্যবহৃত জামা কাপড় প্যাড হিসেবে ব্যবহার করেন। সে পর্যন্ত ঠিক। তারপর আবার সেটাকেই ধুয়ে কেচে আবার ব্যবহার করেন। সে পর্যন্তও ঠিক ছিলো। কিন্তু ওগুলো কেচে মেলা হয় অন্ধকার, স্যাঁতসেতে কোণা খামচিতে।

লোক চক্ষুর আড়ালে। সেটাই স্বাভাবিক। তাতে মাকড়সা, আরশোলা, টিকটিকি থেকে সব হেঁটে যায়। আর সূর্যালোক বিহীন জায়গায় শুকানোর জন্য বিভিন্ন ইনফেকশন হবার সম্ভাবনা থেকেই যায়। তবু আমরা এ সম্পর্কে কেউ কাউকে শেখাইনা। সব চুপ চুপ। এমনকি স্বামী স্ত্রী যৌন মিলনের পূর্বে দুজনেরই, বিশেষ করে স্বামীর যে পরিচ্ছন্নতা অত্যন্ত জরুরি তা নিয়েও সব চুপচাপ! এমনকি মেয়েরা, না ভুল ভাবছেন তথাকথিত শিক্ষিত আধুনিকাদের কথা বলছি না। কারণ এই শহরেরে বাইরের ভারতবর্ষটা বেশি বড়, তারা লজ্জায় মুখ ফুটে স্বামীকে পরিচ্ছন্ন হবার কথা বলতেও পারে না।

আর স্বামীরই বা দোষ কি? সে বেচারাও তো জানেই না।। সন্তান উৎপাদন হয়েই চলে, আর গ্ৰাম, শহর, শহরতলীর গাইনী ডিপার্টমেন্টে ভিড় করে মহিলার দল। যাদের সামান্য সমস্যা বাড়তে বাড়তে ইউটেরাস , সারভিক্স ক্যানসার পর্যন্ত গড়ায়। তারাও মুখ বুজে কপাল বলে মেনে নেয়। সাদা বাংলায় বিনা চিকিৎসা মারা যায়।

যে দেশে স্বাভাবিক যৌন জীবনের এই হাল, সে দেশে বিভিন্ন যৌন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা! ও মা গো, টুরু ক্রাইম! কিন্তু আমাদের মত কিছু এঁড়ে গরু থাকে, যারা খোঁয়ার দেখলেই শিং বাগায়। তারা তো আবোলতাবোল বকে, কেউ শুনুক আর না শুনুক।

ডার্টি সেক্স মানে সাদা বাংলায় আপনি যা ভাবছেন তাই, অপরিচ্ছন্ন যৌনাচার। যদি কেউ বাৎসায়ন পড়েন তো বুঝেছেন, তখন কার দিন, যাকে আমরা ইতিহাসে ফেলি, সেখানেও যৌনতা এক স্বীকৃত , সুস্থ আচরণ ছিল। এখনকার মত পাপ হয়ে যায়নি। সেখানে প্রতিটা পদ্ধতি এত বিজ্ঞান সম্মত, এত সুস্থ , এত স্বাভাবিক, ভাবলে অবাক লাগে। তাতে শৃঙ্গার পদ্ধতি, রতি ক্রিয়ার আগে পরের সম্পাদ্য কর্মের বর্ণণা, যা মানুষকে শুধু যে সুস্থ যৌন জীবন দেয় তাই নয়, মানসিক শান্তিও প্রদান করে।

আর এখন? আধুনিকতার নামে, পাশ্চাত্য পদ্ধতির নামে, ওই সস্তা নীলছবিগুলো দেখে দেখে ছেলেমেয়েগুলো যা শিখছে, তা তাদের ঠেলে দিচ্ছে নানা রকম ভয়ংকর এস.টি.ডির দিকে। কোথাও অপরিচ্ছন্ন দুর্গন্ধ, কোথাও না ধৌতকরণ, কোথাও আবার পটি লিকিং, গোল্ডন শাওয়ার, এর সঙ্গে মুত্র পান, পুরীষ খাদ্য হিসেবে গ্ৰহন! তার সঙ্গে আবার ইংরেজি সিনেমা মানে নীল ছবি , এ ক্ষেত্রে হাত, পা, চোখ বেঁধে মারধোর, কান্নাকাটি, কামড়ে, খাবলে মাংস তুলে নেওয়া, রতিক্রিয়ার মাধ্যমে রক্ত বের করে দেওয়া, সঙ্গী বা সঙ্গিনীর চিৎকার, কান্নাকাটি বা যন্ত্রনায় ছটফট করা নাকি তীব্র আনন্দদায়ক! এতে করে তথাকথিত শিক্ষিত ছেলেমেয়েরাও ট্রেন্ডি হতে গিয়ে শিকার হচ্ছে নানা যৌন রোগের।

প্রেগন্যান্সি তো বাদই দিলাম। মেক আউট করতে গিয়েও যে প্রেগন্যান্ট হয়ে যেতে পারে, এ নিয়েও ধারণা অনেকেরই নেই। প্রি স্পার্ম ও যে প্রেগন্যান্ট করতে পারে, তা খেয়াল থাকে কজনের? অনেকেই বলবেন, প্রেগন্যান্ট হলো তো কি হল? অনেক কিছু। একা বাচ্চার দায়িত্ব নেওয়ার মত বুকের পাটা বা ইচ্ছে কজনের থাকে? বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দায় এসে পড়ে মেয়েদের ঘাড়ে। যেহেতু ছেলেটির শরীরে কিছু নেই, তাই দায় এড়ানো তার কাছে খুব সহজ। আর আমরা বেশিরভাগ মানুষই পলায়ন পটিয়স কে না জানে? অ্যাবর্ট করালে যদি তা যান্ত্রিক হয় তো ভোগান্তি আর যদি পিল টিল খাওয়া হয় তাহলেও হরমোনগত সমস্যা তো কিছু থেকেই যায়!

এ দায় বা ঝামেলা কিন্তু মেয়েদেরই। আর ওই সব বিকৃত থুড়ি বিকৃত বলা যাবে না, তাহলেই আধুনিক মনস্করা এসে গলা টিপে ধরবে! এই অন্যরকম যৌনাচার যে যৌনরোগ , যেমন সিফিলিস, গণোরিয়া, হেপাটাইটিস বি, এইডস এর মত প্রাণঘাতী রোগ, এছাড়া সাধারণ ভ্যাজিনাইটিস জাতীয় সমস্যা কি হারে বাড়ায় তা বলার নয়! পটি, আর ইউরিন খেলে কি হয় তা আর বলে কি করবো? যার ইচ্ছা সে যা খুশি করবে।

কিন্তু এর সাইড এফেক্ট, এর গুড, ব্যাড কোনো এফেক্ট নিয়েই কিছু জানা বা জানানোর তেমন সুস্থ মাধ্যম বা উপায় নেই। অথচ যৌনতা, লিবিডো সবার আছে। আসলে আমরা শিবচক্ষু হয়ে থাকতে ভালোবাসি। “যখন হবে আমার, তখন ভাববো আবার!”

Leave a Reply