Hamidul Islam

সোমা
হামিদুল ইসলাম।

এক সময় ভাবি চলে যাই
কিন্তু কোথায় যাবো
ঠিকানা জানা নেই ।।

তবু বেরিয়ে পড়ি নিরদ্দেশে
এ গাড়ি ধরি সে গাড়ি ধরি
এ ট্রেণ ধরি ও ট্রেণ ছাড়ি
রাস্তার শেষ নেই ।।

কিন্তু কোথায় এলাম
সব অজানা জায়গা
অচেনা মানুষ
মন বসছে না কিছুতেই ।।

বারবার মনে পড়ছে সোমার মুখ
ভেসে উঠছে প্রিয় সকাল
ঋতুমতী সব গাছ
ঋতুমতী তুমি
তোমাকে না বলে আসাটাই ভুল হয়েছে আমার ।।

আমার পিঠে বোঝা
হাতে জলের ফ্ল‍্যাক্স
হাঁটছি পা টিপে টিপে
ফিরে যাচ্ছি বাড়ি ।।

এক শ বাইশটি স্টেশন ঘেঁটে
আবার ভোরবেলা ফিরে আসলাম বাড়ি
আমার ভাঙা বসত
পুড়ে যাচ্ছে রোদে
বড়ো মায়া। দুচোখ ছলছল ।।

দরজার দাঁড়িয়ে কে
বললাম, ভেতরে এসো
মল্লিকা পায়ে পায়ে আমার বিছানায়
কি ব‍্যাপার
দিদি অসুস্থ
মানে
দিদি হাসপাতালে ।।

আর কোনো কথা না
পৃথিবী ভেঙে পড়ছে আমার মাথায়
দৌড় দোড় দৌড়
সোমা সোমা সোমা
চিৎকার করছি আমি গলা ফাটিয়ে ।।

ডাক্তারবাবু আসলেন
স‍্যাড নিউজ। বাঁচাতে পারলাম না
আমি চোখে অন্ধকার দেখছি
তারপর সেন্সলেস ।।

সোমা আমাকে না বলে চলে গেলো
কতো অভিমান
সেদিন আমি ওকে না বলে বেরিয়েছিলাম
নিরুদ্দেশে
আজ তার প্রতিশোধ ।।

অথচ আমার সারা হৃদয় জুড়ে সোমা
ডাক্তারবাবু তাকে মারতে পারে নি
চিতা তাকে পোড়াতে পারে নি
মৃত‍্যু তাকে নিয়ে যেতে পারে নি
সোমা আছে আমার হৃদয়ে ।।

সোমা চিরকাল থাকবে
সোমার মৃত‍্যু নেই
সোমাদের মৃত‍্যু নেই ।।

সোমারা চোখের পলকে একটু সরে দাঁড়ায়
আবার ফিরে আসে মুহূর্তেই
এর নাম ভালোবাসা
এর নাম প্রেম
এর নাম সোমা ।।

সোমা আশা
সোমা প্রত‍্যয়
সোমাকে ছাড়া সমাজ সংসার অচল
জড় পদার্থ
সোমা মানে জীবন
সোমা মানে মৃত‍্যু
জীবন মৃত‍্যুর রস নিঙড়ে নিয়ে সোমারা বেঁচে থাকে
সারা জীবন ।।

তাই সোমার জন‍্যে খুলে রাখি গেট
খুলে রাখি হৃদয়
সোমা আসে
সোমা যায়
সোমাদের এই যাওয়া আসা অনন্ত অসীম ।।

গ্রাঃ+হোঃ=কুমারগঞ্জ। জেঃ=দক্ষিণ দিনাজপুর।

Leave a Reply