দাদীর নাতিন ময়নামতি
জাহানারা সরকার।
দাদীর নাতিন ময়নামতি উচ্ছন্নে গেছে
শহরের মনগড়া আধুনিকতার ছোঁয়ায়।
শিক্ষা দীক্ষায় না কুশিক্ষায় ধেই ধেই নাচে
পোষাক নিয়ে অন্ধ আবেগের ধোঁয়ায়।
দাদী শুনে কয়,”ও ময়নারে ব্লাউজ ছাড়া শাড়ি পড়েছি তুই দেখছস কেমনে?
তোর তখন জন্মও হয়নি সেই সেকেলে পুরনো দিন মেনেছি জীবন যখন কেটেছে যেমনে।
তুই জানলি কেমন করে,
তোর মায়েরও জন্মের আগের দুঃসময় আর দুর্দিনের সেসব না বলা কথা?
তোর দাদা হালের গরুর মতো পিটাইতো মোরে
একটু ভুলের তরে যথাতথা।
কত গ্লানি,কত কথা পরিবারের সবার মুখে মুখে ডালে লবন একটুখানি বেশি দিয়েছি বলে,
তোর দাদা তো তেড়ে আসতো লুঙ্গি কাছা দিয়ে
আচ্ছামতো বউ পিটানোর ছলে।
বছরে একটা সূতি কাপড় কিনে দিতো পিন্দনের আগের কাপড় খুব ছিঁড়ে গেলে।
তার সাথে ব্লাউজ পেটিকোট এইটা আবার কী
নাম শুনি নাই তো সেই কালে।
শ্বাশুড়ি ননদ দেবর জ্যা ভাসুর অতিথি ঘেরা বাড়ি
কত মন্দ কথা নিন্দা শুনে হেঁসেলে টেনেছি হাঁড়ি।
তোর দাদার প্রতি সম্মান কমে নাই ছাড়ি নাই ঘর,
ভাবি নাই শ্বশুড়বাড়িতে কে আপন কে বা পর।
দাদীর নাতিন ময়নামতি মতামতে ভিন্ন মত হলেই
কথায় কথায় ছাড়াছাড়ি দেনমোহর প্রথার খেই।
মায়েরাও আজ মন্ত্রণায় মায়া হাজারিকা,রিনাখান
ঘর ভাঙ্গিতে নেয় না সময় আরে তালাকটা পাঠান।
সেই দাদীর নাতিন ময়নামতিরা মানুষ হতে এসে
আজ কুশিক্ষার কবলে,
নিত্য নতুন কত চাহিদার মোহের ঘোরে নতুন করে
ছোট পোষাক আরো ছোট পরারও অধিকার চায়
রাস্তায় দলে দলে।
খুব অদুরেই সময় আগত বলবে এসে কীসের ধর্ম, কীসের বিয়ে মানবো না তা আমরা,
যার সাথে মন চায় তার সাথেই ঘর বাঁধবো পূর্ণ অধিকার চাই দিতে বাধ্য মামারা।
তারিখ-১১/০৯/২০২২ইং।