Madhushravani

_সৌদামিনী শম্পা

টেমি মধুশ্রাবনী

সৌদামিনী শম্পা

 মধু শ্রাবনী। আহা নামটা শুনলেই কেমন একটা রোমান্টিক ভাব আসে না! মধু ঝরে ঝরে পড়ছে শ্রাবণ মাসে? হ্যাঁ, শ্রাবণ মাসেও বটে এবং এর সঙ্গে সদ্য বিবাহিত নরনারীর যোগও আছে। কি সুন্দর না?

আসল ব্যাপারটা হলো, মৈথিলী কালচারে, এক রিচ্যুয়াল পালিত হয়। যেখানে সদ্য বিবাহিতা ১৫ দিন ধরে প্রতিদিন সকাল থেকে উপোস করে থাকেন, যতক্ষণ না পুজো হয়। এভাবে ১৫ দিনের শেষ দিনে তাকে সুন্দর পোশাক পরিয়ে বসানো হয়। তার মাথায় থাকে লম্বা ঘোমটা। স্বামীও নববর সাজে তার চোখ চেপে ধরে। এরপর মেয়েটি তার পরনের পোশাক হাঁটু পর্যন্ত তুলে রাখে। মেয়েটির উন্মুক্ত পায়ের পাতা এবং হাঁটুতে, মাটির প্রদীপের জ্বলন্ত সলতে দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়। পরিবারের মেয়েরাই এই ছ্যাঁকাটা দেন। অনুষ্ঠানের নাম, মধুশ্রাবণী আর মাটির প্রদীপ অর্থে টেমি। তাই এই পুরো অনুষ্ঠান টেমি মধুশ্রাবণী। আশা করা হয়, জ্বলন্ত ছ্যাঁকা থেকে বৃহৎ ক্ষত!


সাধারণত উচ্চবর্গীয় ব্রাম্হন ও কায়স্থদের মধ্যেই এই রিচুয়াল প্রচলিত। সীতার অগ্নিপরীক্ষাকে মনে রেখেই অনুষ্ঠান। যেখানে মেয়েটিকে জ্বলন্ত সলতের ছ্যাঁকা খেয়ে তার ভার্জিনিটির প্রমান দিতে হয়। যেমন সীতা পরীক্ষা দিয়েছিলেন তার পবিত্রতার। কেউ কেউ আবার বলেন, এর মাধ্যমে মেয়েটিকে আগামী ভবিষ্যৎ জীবনের কষ্টের এক ধারণা ও সহন ক্ষমতা সম্পর্কে সজাগ করা হয়।
আচ্ছা পুরুষের পবিত্রতা পরীক্ষার এরকম একটা রিচুয়াল দেখান। আমিও জানতে চাই। পুরুষদের সংসার জীবনের, ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য এরকম পুড়িয়ে প্রস্তুত করার একটা রীতিও দেখান। আমিও জানতে চাই।

যেখানে রীতি হিসেবেই এসব প্রতিষ্ঠিত সেখানে কি করবো আমরা? মেনে নেব? মনে রাখবেন মানুষের সৃষ্টি বিবর্তন বাদ অনুযায়ী সর্বজন স্বীকৃত। তারপর এসেছেন ঈশ্বর, যবে থেকে মানুষ কল্পনা করতে শিখেছে। রীতি নীতি গুলো তার ও পরে। এরপর ভাবুন এই একপেশে নিয়ম গুলো বেশি যন্ত্রনা দায়ক না আমার এই একপেশে লেখা?

https://bangla-sahitya.com/post/

Leave a Reply