Mubarak Hossen

পাহাড়াদার ভূত
মোবারক হোসেন

কোন এক সময়টাতে গ্রামাঞ্চলের দিকে মানুষের প্রধান পেশা ছিল পুরোপুরি ভাবে কৃষি।এখন যেমন ব্যবসার প্রচলন ব্যাপকভাবে ঘটেছে তখন তেমন ছিল না।সে সময় রাতের বেলা প্রায়শি ক্ষেত থেকে ধান চুরি হয়ে যাবার ঘটনা শোনা যেত।এ কারনে গ্রামের লোকজন মিলে ঠিক করে যে তারা কাউকে পাহারাদার হিসেবে নিয়োগ দিবে এবং মাস শেষে সবাই মিলে কিছু টাকা দিয়ে তার বেতন পরিশোধ করবে।যেই কথা সেই কাজ।

তাকে নিয়োগ দেওয়া হল।পাহারাদার ছিল যুবক একজন লোক কিন্তু গরীব যে কারনে রাতের বেলা কাজটি করতে সে রাজি হয়।সে যখন পাহারায় আসত তখন দৌড়ে দৌড়ে পুরো ক্ষেত একবার চক্কর দিত আর “কে রে ওখানে” বলে চিৎকার দিতো, দেখার জন্য কোন নড়চড় চারপাশে দেখা যায় কিনা।

প্রথম একমাস তেমন কোন সমস্যা হয়নি।কোন চুরির খবর পাওয়া যায়নি।কিন্তু একদিন ভোরবেলা এক কৃষক ক্ষেতের পাশে একটা ডোবায় তার লাশ খুজে পায়,তার মাথা কেটে ফেলা হয়েছিল আর হাত-পা বাধা।ক্ষেতের ক্ষানিকটা অংশ রক্তে ভরে ছিল।লোকেরা ভাবে হয়ত চোরেরা এই কাজ করেছে।

এই ঘটনার পরও চুরির ঘটনা তেমন পাওয়া যায় নি,হয় না বললেই চলে।কিন্তু নতুন একটা ঘটনার আবির্ভাব হয়।প্রায় রাতে যারা হাট থেকে বাড়ি ফিরে তারা নাকি দেখেছে প্রতি রাতে কে জানি লন্ঠন হাতে ক্ষেতের পাশ দিয়ে দৌড়ায় আর ঘ্রঘ্র আওয়াজ করে।এবং প্রতিদিন সকালে ক্ষেতের ঐ নির্দিষ্ট জায়গায় যেখানে ওই পাহারাদারের লাশ আর রক্ত পাওয়া গিয়েছে সেখানে তাজা রক্ত পড়ে থাকতে দেখা যায়।প্রতিদিনেই একই ঘটনা ঘটে।তাই কিছু লোক মিলে ঠিক করে এবার তারা রাতের বেলায় ক্ষেতের মাঝে লুকিয়ে দেখবে ঘটনা কি।এক রাতে তারা তাই করে।রাত ঠিক তিনটার দিকে ঘটে ঘটনাটা।

দূর থেকে তারা দেখতে পায় লাঠি ও লন্ঠন হাতে সাদা পোশাকের কে জানি এদিকে দৌরে আসছে আর দূর থেকেও ঘ্রঘ্র আওয়াজটা পাওয়া যাচ্ছে।কিছুটা কাছে আসতেই তারা ভয়ে শিউরে ওঠে।এটা ওই পাহারাদার যে মারা গেছে,ঘাড়ে মাথা নেই তাই ওইখান থেকেই আওয়াজ টা আসছে।তারা যেখানে লুকিয়ে ছিল সেখানে এসেই আত্মাটা দাঁড়িয়ে পড়ে,তাদের দিকে কাধ ফিরে তাকায় যেন তাদেরকেই দেখছে এবং আরও একবার ঘ্রঘ্র আওয়াজ করে দৌড়ে চলে যায়।এই ঘটনা দেখে তারা সবাই জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।

Leave a Reply