অনুসূচনা
মোবারক হোসেন
অনেক দিন আগে নদীর ধারে শিমুল গাছের মগঢালে এক ঘুঘু পরিবারের বাস ছিল।ঘুঘু পরিবার বলতে মা ঘুঘু আর দুই কন্যা ঘুঘু।দুই বাচ্চার মধ্যে একটা নিজের অন্যটা সতীন কন্যা।বাবা ঘুঘু কিছু দিন আগে শিকারীর হাতে প্রান দিয়েছে। হঠাৎ করে নদী পাড়ের জঙ্গল মত এই জায়গাতে শিকারীদের আনাগোনা বেড়ে গেল।তাই মা ঘুঘু খুব চিন্তিত হয়ে পড়লো।বাচ্চারা খুব ছোট,এদের রেখে খাবার সংগ্রহ করতেও মা ঘুঘু যেতে পারে না।
যদি কোন বিপদ হয়্।অনেক ভেবে চিন্তে মা ঘুঘু সিদ্ধান্ত নিল এই এলাকা ত্যাগ করে নদীর উপাড়ে কোন জায়গায় বাসা বাধবে।সুযোগ সুবিধা মত মা ঘুঘু দুই বাচ্চাকে নিয়ে নদীর উপর দিয়ে উড়াল দিল।নিজের বাচ্চাটা মুখের ঠোটে ধরে রাখল আর সতীন কন্যাকে পিঠের উপর বসালো।স্বভাব মত সবাই নিজের সন্তানকেই বেশি ভালবাসে।তাই ঘুঘুটি তার নিজের বাচ্চাটিকে অধিক নিরাপত্তার জন্য ঠোটে নিয়ে ছিল।
ঘুঘু নদীর উপর দিয়ে উড়তে ছিল,হঠাৎ একটি বাজ পাখি ঘুঘুর পাশ দিয়ে উড়ে গেল।বাজ পাখিটিকে দেখে মা ঘুঘু বাচ্চাদের সাবধান করতে গেল।আর অমনি ঠোট ফসকে যা হবা তাই হল।ঘুঘুর নিজের বাচ্চাটি নদীর পানিতে পড়ে ঢেউ এর ধাক্কায় পানির নিচে তলিয়ে গেল।ঘুঘু বুঝতে পারলো তার এক চোখে লবণ আর অন্য চোখে তেল বেচার কারনে তার এমন শাস্তি হয়েছ্।সেই থেকে ঘুঘু সতী কন্যাকে নিজের কন্যার চেয়েও আরও বেশি করে ভাল বাসতে লাগলো।তাইতো আজও ঘুঘুর বাচ্চা ঘুঘুর চোখের আড়াল হলেই ঘুঘু ডেকে উঠে“সতী ঝি গো কু”।