ভূতের বাড়ি একরাত্রি
মোবারক হোসেন
প্রথম চাকরী,গ্রাম্য অফিসের আবাসিক এই রুমটি বাদলের ভারী পছন্দ হল । সুন্দর-পরিপাটি করে সাজানো । শোয়ার বিছানা বাদ দিলে তেমন কোনো আসবাবপত্র নেই রুমে । আজকে সব কিছু এমন উল্টোপাল্টা হচ্ছে কেন– এটাই বুঝে উঠতে পারছে না সে!
ঘড়িতে রাত ১১ টা ৪০ বাজে। অফিসে সে একাই অফিস পিয়নটা চলে
গেছে ৮টার দিকে।প্রথম দিন তাই আর দেরী না করে লাইট গুলি অফ করে ঘুমানোর জন্য বিছানায় শুয়ে পড়লো বাদল।কখন ঘুমিয়ে পড়েছিল মনে নেই,হঠাৎ শেষ রাতের দিকে ঘুম ভেঙ্গে গেল।শুনতে পেল পাশের রুমে রাখা সাইকেল,মোটর সাইকেল গুলোর বেল ও হর্ন গুলি এক সাথে বাজছে।
এনজিও অফিস সব অফিসারদের সাইকেল,মোটর সাইকেল অফিসে থাকে।অফিসাররা বাইরে থাকে।শুধু ম্যানেজার অফিসে থাকে।বাদল ম্যানেজার হয়ে এসেচে বলে সে নিয়মের মদ্যে পড়েছে।যাই হোক সে ধড়মড় করে উঠে পাশের রুমে পা বাড়ালো।
যেই লাইট অন করে রুমে ডুকেছে আর সাথে সাখে সাউন্ড বন্ধ।লাইট গুলি অফ করে যেই বিছানায় এসে শুয়েছে অমনি সব লাইট গুলি আবার
জ্বলে উঠলো।বাদল ভয় পেযে গেল।লাফ দিয়ে উঠে বিছায় বসলো।
ভাবতে লাগলো কি করা যায়।অফিসের পাশ ঘেঁষে মাটির রাস্তা, রাস্তা ধরে কয়েক গজ পরেই একটি বাড়ি।
বিকালে বাদল দেখে ছিল।হঠাৎ মনে হল এখানে না থেকে ঐ বাড়ি গিয়ে কাউকে ডেকে তুলে গল্প করে রাতটা কাটিয়ে দেওয়াই ভাল।বুকে ফু দিয়ে আল্লাহর নাম নিয়ে রওনা হল বাড়ির দিকে, ঘুটঘুটে অন্ধকার ভয়ে পা চলচিল না। তবু সাহসে ভর করে পা চালালো সে ।
বাড়ির দরজায় এসে কিছুক্ষণ জিরিয়ে নেয়ার কথা ভাবলো বাদল, ঠিক তখনি ঘরের দরজাটা খুলে বৃদ্ধ মতন একজন বলল কে,বড় ভয়টা পেল ঠিক তখুনি । আকাশে হঠাত বিকট শব্দ করে বিদ্যুত চমকালো যেন, মুহুর্তের আলোয় বাদল পাঁচ হাত সামনে কুচকুচে কালো একটি বিড়াল দেখতে পেল ।
তারপর তার আর কিছুই মনে নেই।যখন তার জ্ঞান ফিরলো তখন সকাল হয়ে গেছে।সে দেখলো তার অফিসের কলিকেরা তাকে ঘিরে আছে।তাদের মুখে নানা প্রশ্ন।বাদল যখন বলল রাতে পাশের বাড়িতে এক বৃদ্ধকে দেখে ভয় পেয়েছে,তখন সকলে এক সাথে হেসে উঠলো।
একজন বলল ওই বাড়ি তো চার,পাঁচ বছর ধরে তালা মারা সেখানে কেউ থাকেনা।সেই দিনই বাদল চাকরী বাদ দিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিল।তার কলিকদের মুখে মুচকি হাসি অট্ট হাসিতে পরিনত হল।