তিব্রতা
অন্তিমদ্রনাথ
একটা প্রশ্ন করবো?
তিব্রতা বরো মায়া মাখা চোখে তাকিয়ে আছে, তার প্রশ্নটাও নিশ্চই খুব মায়া মাখা একটা প্রশ্ন। যদি এখন বলি ”না” সে একটা দীর্ঘ শ্বস ফেলবে, যা খুব একটা ভালোদেখাই না। তাই উত্তরে “হ্য” বলতে হলো।
”আমি কি খুবই খারাপ?”
তার প্রশ্ন সত্যি খুব মায়া মাখা, তবে যদি সে এমন মায়া ভরা চোখ নিয়ে প্রশ্নটা না করতো, তাহলে হয়তো এতোটা মায়া লাগতো না। এখন তার প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে, নইতো সে আরো করুন মুখ করে একই প্রশ্ন আবারও করবে।
তোমার এ প্রশ্নের কোনো উত্তর হয় না। না হওয়ার কিছু কারন আছে, তার মধ্যে প্রধান কারন হলো “আমি যে উত্তরই দেই না কেনো, তার কোনো মূল্য তুমি দেবে না।”
তবুও একটা উত্তর দেও, তোমার কাছে কি মনে হয় বলো।
তুমি আমার কাছে খুবই মূল্যবান, খুবই গুরুত্ব পূর্ন।
তাহলে আমাকে সেদিন ঐভাবে অপমান কেনো করেছিলে?
আমি তোমাকে সর্বদাই বলেছি, “আমার অবহেলা সহ্য হয় না”। তবে তুমি আমাকে সর্বদাই অবহেলা করেছো। আমি বলেছি “যদি থাকতে হয় তো থাকার মতো থাকো, নিয়ম রক্ষার জন্য থাকতে হবে না”। তুমি তা শোনো নি, তুমি চেয়েছো আমাকে এক কোনায় রাখতে। তুমি নিজে আমাকে আপন করো নি, আর আমাকে অন্য কারো আপনও হতে দেওনি। তোমার কাছে আমি এমন একটা বোঝা ছিলাম যা তুমি বইনে চাওনি, আবার ফেলতেও চাওনি।
আমি এগুলো মেনে নিতে পারতাম না, কষ্ট হতো। আর যে কষ্টের মূল্য তোমার কাছে ছিলো না। তাই আমি চেয়েছি তুমি যেনো আমাকে ছেড়ে দাও। আমার থেকে দূরে চলে যাও। আর আমাকে ভালোবাসলে তুমি কখনোই আমাকে দূরে ঠেলে দিতে পারবে না। তাই আমি তোমার চোখে একজন খারাপ মানুষ হতে চেয়েছি। চেয়েছি তুমি আমাকে ঘৃনা করো। কারন ঘৃনা করলে দূরে যাওয়া যায়।
তুমি কি পেরেছো আমার মনে ঘৃনার সৃষ্টি করতে?
না। আমি পারিনি, তুমি এখনো আমাকে আগেরই মতো করে চাও। এখনো অবহেলা করছো, এখনো আমাকে নিজের করছো না অথবা আমাকে অন্য কারো হতে দিচ্ছো না। অথচ তুমি অন্য কারো হয়ে গেছো।
[আমার অপ্রকাশিত উপন্যাস “তিব্রতা”] অন্তিমদ্রনাথ
গল্পের নাম : তিব্রতা
গল্পের ধরন: ঔপন্যাসের অংশ