কামিনের দল
কলমে-সিদ্ধেশ্বর হাটুই
সুখাডালী/সারেঙ্গা/বাঁকুড়া
গ্রামের বধূরা সকালবেলা কত সেজেগুজে
হাসিমুখে তারা সকলে কামিন খাটতে যায়,
হাতে তাদের কাস্তে-কোদাল, গলায় গামছা
টিফিনে খাবার নিয়ে আনন্দে তারা ধায়।
ধান কাটতে কাটতে বেলা যায় চলে
সূর্য তখন এসে ঠিক মাথার উপর হাসে,
টিফিনে আনা খাবার তারা আনন্দেতে খায়,
চোখেতে তবুও যেন হাজার স্বপ্ন ভাসে।
কাজ করতে বেলা গড়িয়ে হয়ে যায় বিকেল,
বাড়ি ফিরে তারা পাশের পুকুরে স্নান সেরে।
পাড়ার কলে এসে সকলে কলসে ভরে জল
তারপর তারা গতর খাটিয়ে গৃহস্থের কাজ করে।
চলতে চলতে দিন চলে যায়, আঁধার ঘনায়…
মমতা মাখিয়ে আপন জনের আহার বানায়,
শরীরের ক্লান্তি জয় করে বিরাজে তাদের মনেতে শান্তি
যখন দিনে একবেলা একসাথে বসে পরিবারের সাথে খায়।
মাসের পর মাস, বছরের পর বছর এভাবেই চলে
কামিন খেটেই ভালোবাসা দিয়ে সংসারটা তারা চালায়,
স্বামী-সন্তান-আর পরিজনের যেন অসুবিধে না আসে,
কষ্টেতে তাদের একটি দিনও যেন না ব্যথায় কাঁদায়।
দীর্ঘ রাত যেন ছোট হয়ে যায় দ্রুত ফুরিয়ে,
এক পাশেই কাটে, অবসর নেই যেন পাশ ঘোরার।
আবার সকাল হলেই তাড়াহুড়ো করে শুরু ….গৃহকর্ম সেরে
সঙ্গীনীদের ডেকে, দল বেঁধে সেই কর্মক্ষেত্রে চলার।
পথে চলতে চলতে কত আলোচনা …..
সুখ, দুঃখ আর কাজের গল্প বলা,
বর্তমানে যন্ত্র দিয়ে হচ্ছে কৃষিকাজ
হারিয়ে যাচ্ছে কোদাল-কাস্তে, গরুর লাঙলের ফলা ।
মানুষ হারাচ্ছে কাজ, সত্বর খামারে আসছে ফসল,
ভবিষ্যতে হয়তো যাবে না মাঠে ঐ কামিনের দল!
SIDDHESWAR HATUI