শরৎ মনে
কবিতাকার
সামনে চেয়ারের মতো বসে আছে ল্যাপটপ
আমার চোখে চলে তার হৃৎপিণ্ড
আমার কদাকার চেহারা দেখে দেখে
মেশিন মশাইয়ের কাটে কত মুহূর্ত বিরতিহীন,
বিরক্তিতে কয়েক সেকেন্ড গুটিয়ে রাখে সংসার
আবার মনের মাঠে খেলা করে প্রিয়তমার মতো।
বর্ণ মাঝেমধ্যে আঁচড় কাটে নখে
বেচাকেনা করে ভাবভঙ্গি আনন্দে অনুক্ষণ।
জুতাযাত্রী পা-কে কখন যে টাইলস দেয়
শীতল স্যাঁতসেঁতে সুড়সুড়ি।
হঠাৎ একখানা মাঠ মনের মধ্যে বেতার বাজায়
চোখের সামনে চলে আসে সহসা,
মাঠের মায়াবী হাতে ক’টি দীনহীন কলমিফুল,
বুকের ক্ষতে যাযাবর কচুরিপানা,
শিরসীমান্তে বর্ষাবিদ্রোহী কিছু ঘাস
অযত্নের আগুনে যেন দেহ বিবর্ণ,
তবে উর্বর উত্তরাধিকার কচিকাঁচা গবাদির জন্য
ঘরবাড়ি করেছে মাঠের ভেজামনে।
শিবকণ্ঠী আকাশ বিধবার বসন পরে
রাত জেগেছিল, চোখের কোণে কালিমা,
চেয়ে চেয়ে দেখছে আমাদের খুনসুটি।
সূর্যের হাসির মধ্যে লাজুক চোখে
তাকিয়ে আছে অগণিত সবুজ গাছ,
বাতাসে বাজছে সাঁতারসুন্দর অভিবাদন
সময়ের শরৎ মনে কলমের কবিতোদযাপন।
অর্থহীন আনাগোনায় আহত
কবিতাকার
জাদুয়ে বিশ্বাসী নই
তবে পছন্দ করি, পলককে ছুটিতে পাঠিয়ে দেখি
আমার মতো মন্ত্রমুগ্ধ আছেন অনেকে।
হঠাৎ আমি শিশু হয়ে গেলুম।
কে না চায় এমনটা, তাই আপত্তি করি নি।
কিন্তু জাদুবলে কিংবা জাদুর শিকারে শিশু হই নি
হয়েছি স্নেহস্নানে সময়ের সৌভাগ্যবাগানে।
এসেছি আশির্বাদের উঠানে
আদর আবদারের পুরানো স্বস্তির পালঙ্কে।
বাবা বার্ধক্যের বোঝায় বাঁকা হয়েছেন
মাও হাঁটতে গেলে হাঁপিয়ে উঠেন।
সারাজীবন ভালোবাসা বেচে হয়েছেন লোকসানি
পাওনা পেতে হয়েছেন নিঃস্ব —
অপূর্ব আরাধ্য অনাদায়ী পাওনা সঞ্চিতি চারপাশে।
আসলহারা অভাবী বণিকেরা আড়মোড়া ভেঙে
আবার জেগে উঠেন, আমি নাকি অবুঝ এখনো
পারি নি আয়ত্ত করতে অনেককিছু আজও,
আজব হিম্মতি অহঙ্কার তাদের।
মনে মনে হাসি, আমি তো একই ব্যবসায় —
হবো আগামিকাল দেনাদার।
আমারও আছে এমনি ফুলফসলের ফোবিয়া।
আমাকে বসতে বলেন চুপচাপ
হিম্মতি হিমালয় কাঁধে বাবা বীর হন।
মা আমার নাদুসনুদুস মুখে
অভাবী উঠোন দেখে আতঙ্কে উঠেন আশঙ্কায়।
ধরণির দুর্বোধ্য দড়ি টেনে টেনে
সুদূর অতীত থেকে এসেছেন এঁরা,
বিষবাষ্প হাতে আমি তাকিয়ে ভবিষ্যতে।
অর্থহীন আনাগোনায় আহত মানুষ
বুদ্ধিমান শুধু উড়ন্ত পাখি–
নীড়কে হৃদয়ে পাতে,মগজে কাটে,
বাহ!আমরাও এমনি হতেম যদি চমৎকার।
উর্বর হয় না কখনো আশার বালুচর।
সংযোগ
মোবারক হোসেন
কি, দিলে না তো দাম?
জানি না তো নাম!
নাম দিয়ে কি হয়!
জান না কি সূচী দিয়ে
বইয়ের পরিচয়।
হয় তো হবে
গুনের কথাই বলে সবে।
আকাশ দেখো?
মেঘলা হলে –
সবই তোমার গেছে জলে ;
কেন কেন?
কচি খোকা দুধ খায় যেন!
খুলে বল-
নদীর কাছে তবে চল।
নদী কেন?
আস্ত একটা গাধা যেন !
তা কিন্তু নয়;
তবে কি পাহাড় নিলয়!
চোখে তাকাও দেখতে পাবে!
এ তো দেখছি মাথা খাবে!
চাও কি তুমি?
আকাশ ছুতে-
বুচ্ছি তোমায় ধরছে ভুতে।
ভুত নয় সেটা পেত্নী হবে!
মনের কথা বুঝবে কবে-
মূল্য আমার বুঝলাম সবে;
আসি তবে হয়তো আবার দেখা হবে।
আমার সাতবার
মোবারক হোসেন
শনিবারে শনীয় কাটে,
তাহার সাথে আঁড়ি
আমায় দেওয়া ভালবাসা ফিরে পেতে
মারে শুধু ঝারি।
রবি বারে আঁলো !
মেঘের আঁচল উগ্র পরী
জীবনটাই আজ কালো।
সমবারে সমহারে সবই লাগে ভালো।
মঙ্গলবারে অমঙ্গলে,
করে কানা কানি
রাশিফলে শুভ হলে
দিনটা ভাল মানি।
বুধবারে কবিতা লিখি
হয়না কবির মতো
সবই আমার নীল হয়ে যায়
মিশাই রং যত।
যেমন ইচ্ছা লিখি আমি
আমার মনের মতো,
তোমরা যদি কবিতা বল
হতে পারে হয়তো!
বৃহস্পতি কচ্ছপ গতি
আসে শুক্রবার ,
র্প্রাথনাতে সকল পাপের,
শোধ করতে চাই ধার ।
কে তুমি
মোবারক হোসেন
আমার ভাবনায় তুমি শুভ্র কাশফুল
কখনো মনে হয় উড়ে বেড়ানো মেঘ,
কখনো রং বাহারি প্রজাপতি,
কখনো আবার মেঘলা আকাশ
সব শেষে এক মুঠো ভারি অতীত।
তোমায় নিয়ে এই ভাবনা
আমার মাথায় বিরাট এক বুঝা
যার আকার নেই আয়তন নেই
অথচ এই ভাবনা এত ভারী
আমি হাপিয়ে উঠেছি।
ছুড়েও ফেলা যায়না কারন
ভাবনা আসলে মনে না মাথায়
নাকি আমার অস্তিত্বে,খুজে পাওয়ায়
আর একটা ভাবনা যার একটা লেজও আছে।
আমি ভেবে ভেবে নিঃশেষ হয়ে গেলেও
তোমার রহস্য ঘেরা বহুরূপী মনের
খোজ আমি কোনদিনও পাবোনা জানি!
তবুও শান্তনা তুমি আসলেই তুমি।
জীবন মানেই ঝন্ত্রনা
মোবারক হোসেন
পম্ম পাতার জল ছুয়ে আজ
পম্মা নদীর মাঝি
আমার আমির নেইতো বদল
মিছেই যেন সাজি।
রংচটা এই জীবনটা আজ
লাগছে বড্ড ভারী
আমার করে ভাবছি যাহা
সবই যেন তারি
পিছু ফিরে পিছু তাকাই
পুরোনো ধূলো আবার মাখাই
সাত সতেরোর হিসাব কষে
ষোল আনাই এখন মিছে
লাভের মধ্যে-কাটছে দিন!
মিলবে হিসাব বাজলে বীন।
শিরোনাম: বিভ্রান্ত
কলমে: তন্ময় মণ্ডল
ভূতনী, মালদা
বিভ্রান্ত আমি;
দিশেহারা আজ এই মানবের দ্বারে,
রুদ্ধ শ্বাস, বন্ধ ঘর, ক্লান্ত পথ, ক্ষুব্ধ মন;
তবুও দাঁড়ানোর চেষ্টা,
উঁকি মারে জানালা দিয়ে,
আমি বেচেঁ নেই !
যেন জ্যান্ত এক লাশ
আবার ও মনে;
বেচেঁ ওঠার দীর্ঘ অভিলাষ,
চেতনাহীন পড়েছিলাম,
শোক শয্যায় !
চেয়েছি দাঁড়াতে তবুও
পারিনি তো হায়!
হেরেছি আজ নিজের কাছেই
বিভ্রান্ত হয়ে;
পারবো কি দাঁড়াতে আবার
অন্য পথ দিয়ে।।