কবিতা সমগ্র – ৩

কবিতা সমগ্র – ৩

 Baridbaran Gupta
Baridbaran Gupta

সমাজের ভেতরটা দেখেছো?
বারিদ বরন গুপ্ত।

‌ সমাজের বাইরে টা ঝাঁ চকচকে ইমারত!
ভেতরটা একবার দেখেছো?
নিরস ভূতিসার,
কয়েকটা স্বার্থপর দৌতের দাপাদাপি
মোসাহেবি লুটপাট ভাগাভাগি
মাঝে মাঝে তরজা গান
ছুঁচোর কীর্তন!

মাঝে মাঝ মাঝে জেগে ওঠে-হুল্লোড়!
সবাই থলে হাতে ছুটে ভাগাড়ে
উচ্ছিষ্টের ভাগাভাগি কে আগে কে পরে,
মাঝে মাঝে ওড়ে স্বপ্নের ফানুস
স্বপ্ন বিক্রি হয় খোলাবাজারে ,
পিপীলিকার সারি পিলপিল করে
স্বপ্নের ফেরিওয়ালা নামে-বেনামে ঝোলা ভরে!

কতগুলো নির্জীব প্রাণ এলিটের আবর্তনে ঘোরে,
আজীবন দালাল চক্রে পিষে পিষে ‌মরে
তবুও সমাজটা চকচকে রঙিন
অন্তঃসার হীন!!

বারিদ বরন গুপ্ত:: কবি সাহিত্যিক প্রাবন্ধিক সমাজ সংস্কৃতি বিষয়ক লেখালেখিতে যুক্ত

sahityapatrika

চারপাশে
সুশান্ত সেন

চারপাশে হয় একি কাণ্ড
সভ্যতার ক্ষুধা প্রকান্ড
নির্মম হতে করে ধ্বংস
প্রকৃতির রস ও অংশ।

প্রতিকার কে এসে করবে
দ্রুতগতি অশ্বকে ধরবে
বসে থাকি সেই এক আশাতে
প্রতিবাদ করছি ভাষাতে।

চাই এক নির্মল পৃথিবী
বিষ বায়ু শূন্য কে দিবি ?
নব যুগ নব প্রাণ আয় রে
সময় বয়ে যায় রে।


৩২বি, শরৎ বসু রোড
কলিকাতা ৭০০০২০

sahityapatrika
sahityapatrika
সত্যেন মণ্ডল

পলাশ বিন্দি
সত্যেন মণ্ডল

সেবার অযোধ্যা পাহাড়ে বেড়াতে গিয়ে
তন্ময় হয়ে দেখছিলাম গাছে গাছে ফুটে থাকা
রাশি রাশি পলাশ ফুল
ভাবছিলাম প্রকৃতির বিচিত্র লীলার কথা
পলাশের রঙের আবীর যেন ভাসছিল বাতাসে
ফাগুনের আকাশে ছিল রঙের ঝিলিক
ছ আট বছরের এক আদিবাসী মেয়ে নামছিল
পাহাড়ের কোল দিয়ে,
আমি উদাস চোখে পলাশ আর মেয়েটাকে দেখছি
হঠাৎ কখন সে কাছে এসে শুধায়
বাবু, তুই পলাশ ফুল লিবি ?
দেখলাম তার কোঁচড় ভর্তি টাটকা পলাশ
কত দাম নিবি ? দাম কি নিব ; এমনিই দিব
পলাশ তো সবার জন্য বিধাতার দান !
তোর নাম কিরে ? কোথায় থাকিস
নাম আমার বিন্দি বটে,হেই দূরে পাহাড়ের কোলে
তোর মা বাপ নেই ?
বাপটা মুনিশ, মা জঙ্গলে কাঠ কাটে
আমাদের বড় কষ্টে দিন কাটে
এখন বসন্ত এলে পলাশ ফুটলে বিন্দির কথা মনে পড়ে
পলাশ বিধাতার দান !
বিন্দি এতদিনে বড় হয়ে হয়তো কারো ঘরে
মাঝে মাঝে বলতে ইচ্ছে করে
এ জগতে সবই বিধাতার দান
ভাগ্যবান কেড়ে নিয়ে বলে
এটা আমার, আমাদের।

রূপসা রূপসী কথা  
                         সত্যেন মণ্ডল 

রূপসা নদীর তীরে
পলাশপাই গাঁয়ে 

রূপসী নামে এক কিশোরী মেয়ে
থাকতো বিধবা মায়ের সঙ্গে।

যেমন মিষ্টি ছিল তার মুখশ্রী 
তেমনি মিষ্টি ছিল তার আচরণ 
কথাবার্তায় বিনয়ী ভীষণ 
ভাব ছিল তার সবার সঙ্গে।

রূপসী যখন নামত রূপসাতে 
জ্যোৎস্নার চন্দন উঠত ফুটে 
মৃদুমন্দ বাতাস আসত ছুটে
শীতল স্বচ্ছ জল স্পর্শ দিত অঙ্গে।

জন্মের পর থেকে রূপসাই তার সখি
রূপসার সঙ্গেই  বলত সে  কথা 
অভিমানে দুজনেরই অন্তরে লাগত ব্যথা
এভাবেই কাটছিল রসে আর রঙ্গে।

বছর কয়েক প’রে——-
রূপসী এসে দাঁড়াল রূপসার কাছে
চিরবিদায়ের অব্যক্ত বিচ্ছেদ যন্ত্রণা নিয়ে
পরস্পর পরস্পরের দিকে চেয়ে থাকে নির্নিমেষে
ধীর পায়ে চলে যায় রূপসী– নতুন স্বামীর সঙ্গে ।

বিদেশ বিভূঁইয়ে
নতুন স্বামীর ঘরে থাকে সুখে রূপসী
মন জুড়ে প্রিয় সখি রূপসা ওঠে ভেসে
এদিকে গুমরে কেঁদে কেঁদে ভিখারিনী বেসে
কল কল শব্দে রূপসা বয়ে চলে সোনার এ বঙ্গে ।

sahityapatrika
sahityapatrika

ভরা…
ধ্রুবজ্যোতি ঘোষ

ভরা দীঘির জলে
ঢিলটি ছুঁড়লে
মুখে রা কাড়েনা আজকাল
ব্যাঙও হাঁটু মুড়ে
করে অন্ধের ভান

ভরা বাসে
আততায়ী লুকিয়ে থাকে
ঠিক সময়ে
ছুরির রক্ততৃষ্ণা মিটিয়ে
নেমে যায় ঠিক স্টপে
যাত্রীরা মন দিয়ে দেখে
আন্তর্জাল

ভরা যৌবনে
যুবতীর হড়কে গিয়েছিল পা
সিসিটিভি দেখেছিল সবটা
তাই একদিন মেট্রোর থার্ড রেল
করেছিল তাকে করুণা!

ভরা পেট শিল্পের শত্তুর…
তাই বন্ধু ছিনিয়ে নিয়েছিল ভ্যান গঘের মুখের গ্রাস
মৃত বন্ধু লেগেছে কাজে
কৃমিকীটের মহাভোজে
গঘের হাতে দোলে আজ হীরের ব্রাশ।

ভরা শ্রাবণে
কবিতার গাগরী ভেসে যায়
এমনই আকাশভাঙা রাতে
কোন সে গোপন বাঁধ ভাঙে
তোমার আমার মাঝে,
ডুবে যায় রাতভর
বিরহিনী নদীর চর,
বেড়ে যায় জলস্তর।

১৪.৯.২০২২

পথের পাঁচালীর স্রষ্টার জন্ম জয়ন্তী (১২ই সেপ্টেম্বর, ১৮৯৪)
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আমার সামান্য শ্রদ্ধার্ঘ্য:
ধ্রুবজ্যোতি ঘোষ
ঘাসফুল

অরণ্যে তুমি গাছ পাতা লতার ভীড়ে মিশে যাও
জনারণ্যে তুমি থাকো একা…
তুমি মিশে যাও আদিগন্ত বনজ মেলায়
আর বিশাল বনস্পতিদের হাটে।

সরস্বতী কুণ্ডীর কাছে এসে
উজাড় করে দিয়েছো তোমার অপার মুগ্ধতা
হটটিটি বনটিয়া ফেজান্ট ক্রো
এসে লবটুলিয়ার গল্প বলে,
কুণ্ডীর নীল জলে
সাঁতার ফেলে
সিল্লী ,রাঙাহাঁস, বক অকারণ বকে যায়,
বন্ধুতা করে বিনিময়।

মহালিখারূপ জঙ্গলের অন্তঃপুরে
কে যায় ঘোড়সওয়ার নিশুতি রাতে
পূর্ণ চাঁদের মায়া সারা শরীরে মেখে
নির্ভীক পার হয়ে যায়
একটা আদিম যুগ থেকে
মহাকালের আরো দুর্ভেদ্য আদিমতার দিকে…
তখন আমাদের আস্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকে শহুরে ঘুম
ইঁট কাঠ কাঁচের অশরীরী জঙ্গলে।

মেটেপথের কাছেই রেখে গেছো
তোমার আজন্মের ঠিকানা,
তার বুকেই রেখেছি আমরা গর্বিত পাথর,
উপড়ে নিয়েছি শেয়াকুল আসশেওড়ার নিম্নবর্গীয়তা।

যদি দেখ কোনদিন
“ইছামতীর কোনো বাঁকে
সবুজ শেওলার ফাঁকে
নীলপাপড়ি কলমি ফুল” ফুটে আছে,
সেখানেই তুমি খুঁজে পাবে তাকে
যার গল্পের ভাঁজে ভাঁজে
ঘাসফুলের কবিতা লুকিয়ে থাকে।

১২.৯.২০২২

বৃষ্টির দুরন্ত রাত
ধ্রুবজ্যোতি ঘোষ

রাতের বৃষ্টির বিন্দুতে বিন্দুতে
আমার ভালোবাসা ঝরে,
টিনের চালের ওপরে তার উদ্দামতা…
সারারাত ধরে
আমার অবচেতনে যেন বিন্দু বিন্দু ঘাম ঝরে…

দিঘির জলে তার ওষ্ঠঘনিষ্ঠতা
শালমহুলের পৌরুষতার সঙ্গে
তার নির্লজ্জ প্রগলভতা
আমাকে কেন আমূল বিদ্ধ করে ?

কোন একদিন
তারাই তো শোনাতো
আমায় ঘুমপাড়ানি গান
কলমীশাকের বনে
জলপরীদের অলৌকিক নাচ,
ব্যাঙেদের কনসার্ট;
জীবন কি ফেলে এসেছে
তার শেষ বৃন্দগান?

যত দূরেই ফিরে যাই
ততই মরীচিকার মতো
সরে সরে যায় সেইসব নৈশ বৃষ্টিপাত,
হৃদয়ের গভীর খাতে দুকূল ছাপিয়ে
অঝোর ধারাপাত…

রাতভর বৃষ্টির কাছেই
গচ্ছিত আছে আমার শৈশব যৌবন, আমার সর্বস্ব
আমার খাঁটি জলজ প্রেম
তুমি শুধু দিনের বৃষ্টিকে সঙ্গে নিয়ে আসো,
সারারাত কেন যে বৃষ্টি
অবুঝের মতো খোঁজে তোমায় !

১৩.৯.২০২২

sahityapatrika
পাভেল আমান
পাভেল আমান

১। তোমার সান্নিধ্য
পাভেল আমান

স্বপ্নের বিছানো জালে
ধরেছি তোমার স্বরূপ
উদ্বেলিত আকাঙ্ক্ষায়
পদক্ষেপের সিঁড়ি ভেঙে
বামন হয়ে চাঁদের প্রত্যাশায়
স্বপ্নীল কামনায় ভাসমান
মননের অফুরান অনুরাগ
রূঢ় বাস্তবতা হার মানে
ভালোলাগার কল্পনায়
তবুও প্রশান্তির বর্ষণে
অবচেতনের উচ্ছল সিক্ততা
অপূর্ণতার চৌহদ্দি ডিঙিয়ে
ছুটে যায় মনন
সম্মুখে বহুদূরে
শুধু ভালোবাসার নিমিত্তে
পার্থিব চাহিদাকে পিছনে ফেলে
অবিরাম খুঁজে চলেছি
তোমার সান্নিধ্যের স্নিগ্ধতা
তৎসহ একাত্মতার নিবিড়তা।

২। সৃষ্টি নেশা
পাভেল আমান

ডুব দিয়েছি সৃষ্টি নেশায়
বেঁচে থাকার নিত্য আশায়।
সংকটে আজ আকীর্ণ ধরা
মানব গড়ে জমছে জরা।

ঘোর তমসা এসেছে নেমে
জীবন ধারা গিয়েছে থেমে।
সাজানো সব ছবির শোভা
হারায় যত রঙের আভা।

বদলে গেছে সমাজ ছবি
মেঘের কোলে লুকাই রবি।
নিভৃতে বাসে মানুষ থিতু
দিন যাপনে প্রাণটা ভীতু।

বিলীন যেন মনের হাসি
মুহূর্ত মাঝে উঠছে কাশি।
সুদূর পানে দৃষ্টি প্রসার
ভাসে নানা যাতন প্রকার।

দুঃখের বহর ভুলে গিয়ে
ঘর বেঁধেছি ভাবনা নিয়ে।
সৃষ্টি নেশায় মন পাগল
নিমেষে ভাঙ্গি যত আগল।

রচনা -পাভেল আমান/ হরিহরপাড়া /মুর্শিদাবাদ

sahityapatrika

বিষয় : আধুনিক গান
কলমে: অনুপ কুমার ঘোষ

উড়ে এলো এক মুঠো মেঘ
ছুঁয়ে গেল দেবদারু বন
বুকের ভেতরে লাগে দোলা
তুই পাশে বসলি যখন।

তোর চোখে চোখ রেখে দেখি
হৃদয়ে জমেছে কত ব‍্যথা
ভরিয়ে দিবি জানি আজ
আমার জীবনের সাদা খাতা।

তোর আঁচলের এক টুকরো মেঘ
পারবে কী আমায় ভেজাতে?
চল্ তবে ঘর বাঁধি সুখে
ঐ দূরের ধ্রুবতারাতে।

sahityapatrika
সৈয়দুল ইসলাম
সৈয়দুল ইসলাম

আমাদের গ্রামখানি
সৈয়দুল ইসলাম

তারিখঃ ১০/০৯/২০২২

আমাদের গ্রামখানি
মায়ের মতন,
ফুল ফল ছায়া দিয়ে
করে যতন।

বৃক্ষলতায় ভরা
মায়াবী এই গ্রাম,
দেশে আর বিদেশে
অনেক সুনাম।

কাননে কুসুমকলি
ছড়িয়ে দেয় ঘ্রাণ,
পাখিদের কলতানে
নেচে ওঠে প্রাণ।

ধনী আর গরিবের
ভেদাভেদ ভুলে,
মিলেমিশে থাকি সবে
মানবের কুলে ।

ঠিকানাঃ হাসারচর, শান্তিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, বাংলাদেশ।

sahityapatrika
Shamsuddin Harun
Shamsuddin Harun

ভালোবাসার কোন ভগ্নাংশ নেই
শামসুদ্দিন হারুন

ভালোবাসার কি নিজস্ব কোন সুগন্ধ আছে?
তা না হলে, তুমি হেঁটে গেলেই আমি
কেনো পাই কস্তুরীর ঘ্রাণ !
ভালোবাসা কি এই ভরা ভাদ্রের তপ্ত দুপুর ?
তা না হলে, তুমি এসে দাঁড়ালেই কেনো
খরতাপে কেঁপে ওঠে প্রাণ !

ভালোবাসার কি নিজস্ব কোনো রঙ আছে ?
নাকি, ভালোবাসা উতল ফাল্গুনী হাওয়া
আবেশে চোখ হয়ে যায় বন্ধ !
তা না হলে, তুমি এলেই বাসন্তী রঙ কেনো
মেলে দেয় সোনালী চাদর,আলোর ঝলকানিতে আমার দু’চোখ হয়ে যায় অন্ধ।

ভালোবাসা কি তবে হিমালয় থেকে আসা হীম
নাকি ভালোবাসা নিজেই এক বৈকাল হ্রদ
বিপুল জলরাশি নিয়ে আছে স্থির।
ভালোবাসার কি নিজস্ব জলের নায়াগ্রা আছে?
তা না হলে, তুমি এসে হেসে দিলেই কেনো
জলের প্রপাত কাঁপে তির তির !

ভালোবাসার কোনো ভগ্নাংশ বলে কিছু নেই
সব রোদ রঙ কস্তুরী ঘ্রাণ নিয়ে আসলে
ভালোবাসার সবটুকু হলে তুমি ।
তা না হলে, তুমি না এলেই কেনো ধসে যায়
বনেদী উপত্যকা সুউচ্চ পাহাড় বন উপবন
জনপদ ফসলের আবাদি ভূমি !

sahityapatrika
sahityapatrika

শিরোনামঃ হারাই আমিত্ব,
কলমেঃ প্রবক্তা সাধু।

বৃষ্টি দেবার লোভ দেখায় মেঘ
মিথ্যে আশায় থাকে চাতক
চিলের পিছে কাক, কাকের পিছে ফিঙে
পথের মাঝে দাড়িয়ে পথ খুঁজি
রোদের মরীচিকা দৃষ্টি কেড়ে নেয়।
গবাক্ষে চড়ুই পাখির বাসা
কিশোরীর ঘোলা চোখ,
বয়ে গেছে নদী আঙিনার বুকে
আতুরঘরে শিশুর ক্রন্দিত চিৎকার
অবৈধ জমিনের মালিক।
সুধামুখী ইন্দু নিঃসঙ্গ রাতের সাথী
আত্মাহুতির অনল নেভেনা
বসন পোড়া উৎকট গন্ধ
বেড়া ডিঙ্গাবার সাধ কুসুমের রূপে

কিছুক্ষণ আমি হারাই আমিত্ব।

১২/০৯/২০২২

sahityapatrika

একটি প্রেমের কবিতা
মিঠুন চক্রবর্তী

ধরো, একটি লাল দ্বীপের প্রেমে পড়লে তুমি,
তোমার নীল। সন্ধ্যায় মাঝ বরাবর চাঁদ উঠল।
জোছনায় ডুবে যাওয়া নরম পৃথিবীটি তখন
তোমার শোবার ঘরে
এস্রাজের তারে ছড়ের রোমান্টিক টান…

ভুলে গেলে
ছেলেবেলায় অঙ্কের খাতায় লাল সূর্য এঁকে
কাঁচা হাতে চারপাশে নীল আকাশ আঁকতে গিয়ে
লালের উপর নীল গড়িয়ে নামতেই কালো

কালো অশুভ,
কালো, তোমার গোপন কান্নার মত গাঢ়,
কালো, এক পৃথিবীর বুকে অজস্র বিচ্ছেদ শোক

বলো,
এবার প্রাজ্ঞ রোদ্দুরের খামে কী বার্তা পাঠাবে তাকে?
‘ আমার দূরত্বের প্রান্তে তার ভালো হোক,ভালো হোক… ‘

অন্তর্দহন
মিঠুন চক্রবর্তী

শরীরে জলের পোশাক,
বিকেলের রোদ ঠোঁটে নিয়ে ডুব দেয় পানকৌটি
গভীরে….
উপরে নিপুণ ভাবে ভেসে যায় স্রোত এবং সময়
কাছে দূরে জ্বলে ওঠে চেনা অচেনা সংসারের ভাসমান দ্বীপ

এখানে ভীষণ কুয়াশা,
ঘসাকাচে লেপটে আছে রাধাচূড়ার ছড়ানো হলুদ
আর, অসাবধানতায় খসে পড়া পালক, ঘরে ফেরা পাখিদের

তবু,প্রতিটি রাতে
ঝিনুকের ভেতরে লুকিয়ে রাখতে ইচ্ছে করে এক বিন্দু স্পর্শ
স্নানের ঘাটে সমুদ্রের ভরা জোয়ারের মত হাত বাড়িয়ে টানতে ইচ্ছে করে
বলতে ইচ্ছে করে, ‘ আমারও শিরা – উপশিরায় প্রচণ্ড জ্বর ছুটছে, ছুঁয়ে দেখো ‘

মিঠুন চক্রবর্তী
জেলা-বাঁকুড়া
রাজ্য – পশ্চিমবঙ্গ
দেশ – ভারত

sahityapatrika

তিলকে তুমি তাল করো না
এম হাবীবুল্লাহ

তিলকে তুমি তাল করো না
মিশিয়ে মনের মাধুরী
আকাশ কুসুম ভেবে কী লাভ
হোক না যত জাদুর-ই।

জাদুর বলো কী দাম আছে
আসলে ফিরে বাস্তবে
কল্পনাতে পাখি হলেও
মানুষ তুমি আস্ত যে।

মানুষ হয়েই থাকবে বেঁচে
কর্মে যাহার পরিচয়
কর্মবিহীন জীবনটা তো
মোটেও কোনো জীবন নয়।

পরিচিতিঃ
এম হাবীবুল্লাহ
ব্যাংকার, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড
কলেজ পাড়া (আলহেরা স্কুল রোড)
ঘাটাইল, টাংগাইল।

Leave a Reply