Pradip Bhattacharjee

কুমিল্লা,বাংলাদেশ।
প্রদীপ ভট্টাচার্য,
অণু কবিতা

একগুচ্ছ শব্দ গচ্ছিত রেখে কোথায় গেলে তুমি
বোবা শব্দগুলো কেবলই করুণ চাহনিতে দ‍্যাখে
আমার কোমল হৃদয়ের মাতৃরূপ—–
আমি আঁচলে ঢেকে তাঁদের দেহ গড়ি
একসময় তারা কবিতা হয়ে তোমাকেই খুঁজে।

তুমি কী আমার বন্ধু হবে

অভিমান হয়েছে বুঝি?শুনেছি তুমি
অভিমানী হলে ধূসর জগদ্দল পাথর।

জানো?প্রতিদিন গল্পেরা লোপাট হলে পরে
বিসর্গঃ থাকে চন্দ্রবিন্দু থাকে অতঃপর
কথার শব্দগুলো বোধের শরীরে যেতে
নদীকে ডাকে পাহাড়কে ডাকে অনবরতঃ
ঢেউয়ের ইশারায় গতির তীর ছোড়ে অজানায়।

একদিন আমিও তোমার মত ছিলাম
পৃথিবীর সব কপাট বন্ধ করে দেখলাম
ইন্দ্রিয় থেকে দখিনের জানালা বন্ধ হয়ে গেছে
গভীর অন্ধকারে সব বৃক্ষগুলো থমকে আছে।

মনে হচ্ছে এখুনি ভেঙ্গে চূরমার হবে সবকিছু—-
মাঠের আইল বেয়ে সোনালী ফসল তোলা
মেঠো পথের বাঁকে দাঁড়িয়ে থাকা পঞ্চমির চাঁদ!
আমি দেখলাম শিরার উপশিরায় রক্তের ভাটা
চরম একাকীত্বের ইটভাঙ্গা দেয়ালের উপনিষদ।

আচ্ছা,তুমি কি আমার বন্ধু হবে চলার পথে
মসৃন পথের মত দেখবে কী মহাশূণ‍্যের পরে
কৃষ্ণ গহ্বর যত অজানা রহস‍্যের দিকভ্রান্ত মাস্তুল
পথিকৃৎ শূণ‍্যের অভিভাবক হয়ে অতিক্রম করবে কী
যৌথ হেঁটে হেঁটে আহামরি আপন পথের ম‍্যাপ দেখবে
যখন সময়ের কর্ণধার হারাবে তার অহংকারী পথের শেষ।

এস ঋদ্ধ হই সূর্যকে বুকে নিয়ে অনুভব করি
কতটা উত্তাপ শুষে সে হয়েছে জীবনের অনিরুদ্ধ।
যেমন অস্ত যাবার আগে পৃথিবী দেখে গোধূলী আলো।

ইদানিং মানুষ ও ভাবনা

মানুষ নাকি সব ভাবনার কারিগরী প্রভাবে
অর্থনীতি আর দর্শন এর ইনন্দ্রজালে
হাঁটতে হাঁটতে ধরে রাখে সবকিছু যা সে দেখে
অতঃপর কিছু ভাবনা ছুঁড়ে দ‍্যায় সবুজে অবিকল
আর কিছু উড়িয়ে দ‍্যায় শূণ‍্যে কিছু রাখে বুকে

ভূমিষ্ট শিশুটাও কেঁদে ফ‍্যালে সজোরে প্রথম প্রহরে
নিশ্চই সেও কিছু ভাবে বোবা অক্ষরে তার ভাষা
বোঝাতে পারেনা বলে ভাবনা চোখে পড়েনা
বিস্ময়ের ধারাপাত বলে আমরাও দিন দিন শিশু হই
হয়তো অনেক সময় আমরাও অপারগ কারণ সব
শব্দের ঝংকার নিয়ে বুকে শিহরণ জাগাই মাঝে মধ‍্যে

কারণ নীলাকাশ নীল থাকেনা ইদানিং কেমন ধূসর
আজগুবী বার্তা ছড়ায় আষাঢ়ী রোদ্দুরে দূর থেকে
বর্তমানের অবোধ‍্য জাবেদা ক্লান্তির পাণ্ডুলিপি গড়ে
যবনিকায় ইচ্ছেমত করায়ত্ব আবাহাওয়া নিছক কৌতুক
মেঘে আগ্রাসনের নেট-ওয়ার্ক গড়ে তোলে ভিসুভিয়াস
রিমোর্ট-কনট্রোলে লাগাম টানে দখলের তকমায়

এখন তার নেই কোন আকার ইকার কীংবা সেমিকোলন
পূর্বপাঠে নেই সতর্কতা কোন সীমারেখার অন্তিম বোল
মনে করো তুমি আমি ভাবনার পরিপক্ক উচ্ছল যুবক
সুতোটা ভূমিতে রেখে দিব‍্যি উঠে গেছি শূণ‍্য থেকে মহাশৃণ‍্যে

বিশ্ব নাকি তিনভাগ জলে বাস করে তবু শুকোবে
সব সতেজ প্রাণ ভবিষ‍্যত বংশধর জলের অভাবে
বোঝাতে পারেনা বলে ভাবনা চোখে পড়েনা
বিস্ময়ের ধারাপাত বলে আমরাও দিন দিন শিশু হই
হয়তো অনেক সময় আমরাও অপারগ কারণ সব
শব্দের ঝংকার নিয়ে বুকে শিহরণ জাগাই মাঝে মধ‍্যে

কারণ নীলাকাশ নীল থাকেনা ইদানিং কেমন ধূসর
আজগুবী বার্তা ছড়ায় আষাঢ়ী রোদ্দুরে দূর থেকে
বর্তমানের অবোধ‍্য জাবেদা ক্লান্তির পাণ্ডুলিপি গড়ে
যবনিকায় ইচ্ছেমত করায়ত্ব আবাহাওয়া নিছক কৌতুক
মেঘে আগ্রাসনের নেট-ওয়ার্ক গড়ে তোলে ভিসুভিয়াস
রিমোর্ট-কনট্রোলে লাগাম টানে দখলের তকমায়

এখন তার নেই কোন আকার ইকার কীংবা সেমিকোলন
পূর্বপাঠে নেই সতর্কতা কোন সীমারেখার অন্তিম বোল
মনে করো তুমি আমি ভাবনার পরিপক্ক উচ্ছল যুবক
সুতোটা ভূমিতে রেখে দিব‍্যি উঠে গেছি শূণ‍্য থেকে মহাশৃণ‍্যে

বিশ্ব নাকি তিনভাগ জলে বাস করে তবু শুকোবে
সব সতেজ প্রাণ ভবিষ‍্যত বংশধর জলের অভাবে

কথকতা

রংগীন ফসলের মাঠ থেকে
ধান রংগা রোদগুলো চলে গেলে
কালো আলো ফুটে উঠে পথে
সব কেমন চোখের বাইরে যায় চলে।

ঠিক তখন দেখি একজন দাঁড়িওয়ালা
উস্কোখুস্কো পথিক রোজ আসে এইখানে
কাকে যেন খুঁজতে আসে আনমনে
কীযেন কুড়িয়ে রাখে বুকের মাঝখানে।

নির্বাক চোখদুটো তার চঞ্চল ভাবলেশহীন
মুখে অস্ফুট শব্দ ফিস্ ফিস্ ডাকে
একবার পূবে একবার উত্তরে উত্তরহীন
অগত‍্যা কান চেপে রাখে মাটির পরে।

ডাকে ছোট্ট স্বরে কবিতা —কবিতা—কবিতা—
যেন নিজের সাথে কবেই গিয়েছে সমঝোতায় তড়িঘড়ি করে উঠে পড়ে পরম মমতায়
হাত বুলায় সে অদূরে একটা ধানের ডগায়।

কখোন যেন উড়ন্ত একটা দমকা হাওয়ায়
সপাট ঘুম ভাঙ্গে বধির সন্ধ‍্যা তারার
জেগে ওঠে সাদা কাগজের মত দেহে বসুন্ধরায়
চিক্ চিক্ করে বোশেখের রোদের মত নিরন্তর।

পথিক দাঁড়িওয়ালার চোখ দেখে উপরে
স্বর্গোক্তি করে বড় অসময়ে এলি ওরে
ফসলেরা যে গ‍্যাছে চলে একটূ আগে
ওপাড়ার হেমাঙ্গী কিষাণীর ঘরে——-

জোছনার বেলোয়াড়ী সাদা মেঘগুলো তখন
ভীষণ আপন হয়ে যেতে যেতে অবশেষে
প্রশ্ন করে কে যায় ?আমারি মতন
পথিক বলে আমি অরুণাচলের বেশে
যাবো কবিতার কাছে আমার প্রেমিকার দেশে
তুমি চেনো কী তারে চলনা মোর সাথী হয়ে —-
মেঘ বলে সেতো নিরাকার বোবা নিষ্প্রাণ শুয়ে
আজো জাগেনি প্রাণ তার কোথায় পাবে তারে
কেন?যেখানে মিশেছে অনন্ত প্রাণ একঘরে।

আমি সাগর থেকে আঁচল ভরে আনবো শব্দ
নদীর কাছ থেকে আনবো শান্ত প্রবাহ
পাহাড়ের সমান নিয়ে আসবো আকাশ ছোঁয়া উচ্চতা
ঠিক্ তখনি দেখা হবে তার সাথে হবে কথকতা।

আমি দেখতে চাইনা সৃষ্টি এক ঘাতক

আত্ন-ঘাতক—এ কেমন বিকৃত স্বরের উচ্চারণ আবহে
আঘাত করে বড্ড আঘাত করে সৃষ্টি প্রবাহে!
কেউ সৃষ্টি করে আবার খুন করে সৃষ্টিকে? জানো
সামগ্রীকতায় বারবার বিলুপ্ত হয় আকার সৃষ্টি নয়।

এই পৃথিবীর মগডাল শুধু সবুজের সমারোহ অঞ্চল
লুটেরা গাছ কেটে তাকে কোরেছে অসার অমৃত থেকে
ফলে কিছু দেহত‍্যাগী শিল্পী গিয়েছে তার শিল্প রেখে,
বৃক্ষের মাঝে হয় পাখী নদীর মাঝে পাল তোলা নৌকো।

বৃত্তাকার এই চেনা গ্রহে হেঁটে সে দেখে সরল পথটাকে
দুটি ধার তার রয়েছে সম্পর্ক ষড়ঋতুর সাথে
একধারে থর থরে সাজানো বৃক্ষের হাতল
অপর পাশে আঁকা-বাঁকা বোবা শব্দ চাহনি শিশির-তুলি
বুলবুলির ঠোঁটে মাতিয়ে রাখে সারাক্ষণ উল্লাসে।

গরমের ছন্দে অপার আনন্দে ঘাম-সমূদ্রে অবগাহন
আবার শীতের মাঝে লেপে লুকানোর ধুমধাম আয়োজন
পর্বে পর্বে সমারোহে উর্ধে নীলাকাশ ধরে কাশফুল এক
সৃষ্টির আদরকে করে সংহত আরো অহংকারী অপরূপ
ভালো লাগে খুউব ভালো তাকে হে বিধাতা হারাতে চাইনা তাকে।

খেলতে খেলতে কখোন দেখি আমিও আর
সেই আমি নেই,কেমন চুপসে গেছি সময়ের বাঁকে
দেখি ভোর হতে রাতের তামাটে দেহের আস্তরন
ঢিলে ডালা পোষাকী অবয়ব করেছে বয়সীর ঝোপ-ঝার।

আমি দেখতে চাইনা সৃষ্টিকে স্বেচ্ছাচারী ঘাতক যেমন
কৃষ্ণসন্ধ‍্যায় ওৎ পেতে থাকে কারো ছায়াময় আকারের অপেক্ষায়
সৃষ্টি অপার সুন্দরে মোহময় অবিনাশি কোন উজ্বল গ্রহ
ধ্রুবতারাকে দেখে আজীবন কথা বলবো আকাশের সাথে।

সৃষ্টিকে দেখবো জন্ম থেকে জন্মে অপরূপ অসীম
নারীর খোঁপার মত দুধে- আলতা পিঠে কবরীর দোলন
জীবনানন্দকে আলিঙ্গন করে বিমূর্ত নীল সাগর
হাজার বার ডুব দেব কিন্তু ডুবতে চাইবনা একবারো
হে বিধাতা—
তোমাকে মিনতি আমার বিলীনতার সুতো থেকে
তুমি হবে সেই সৃষ্টি যার আদি আছে অন্ত নেই।

Leave a Reply