কুমিল্লা,বাংলাদেশ।
প্রদীপ ভট্টাচার্য,
কবিতা ফিরে গেছে প্রস্তর যুগে
চোখ বুজলে তার সরল পাতাগুলো
সমান্তরাল ঘুমিয়ে পড়ে।
আজকাল ভালবাসা আর ঘৃণাও
চলে পরষ্পর প্রয়োজনের বাহুবলে।
কেউ জানেনা কখোন কীসের ইংগীতে
সময় সে কথা বলে গেছে বাতাসের কাছে।
নদীর জোয়ারের তোড়ে ভিড়ে প্রয়োজনের সীমানা
নৌকোগুলো যেন সংকেতের চিহ্ন
টাইফুন এলেই চলে যায় নিরাপদ আশ্রয়ে কখনো
কোন নিয়ম চলেনা নদী শাসনকরে বক্ররেখা এখন
জামা কাপড় খুলে ফ্যালে সুবিধাবাদী সভ্যতা
মৌসুমী বায়ুরা আবহ ছড়ায় সবুজের আদিগন্ত
ঝড় সেতো পূনর্বাসন চাইলেই ক্ষুধা ভরে।
দাবা বোর্ডের মত বিস্তৃত ফসলের মাঠ খাদ্য তুলে
দুর্বল হৃদপিণ্ড হাপিয়ে ওঠে ঘাম মুছে হরদম জনসমক্ষে
নিজেকে আড়াল করে চশমায় দ্যাখে আগামীর কারিকুলাম
বিশ্বজয়ী বিরুপাক্ষ তৃপ্তির সূড় তোলে বারবার
দ্যাখে রোদের ছায়াপথ কোথায় মিশে গ্যাছে একদম।
একটু আগে খোলা চোখের সামনে রাস্তায় নির্ঘাত
খুন করলো একটি প্রাণী অপরকে জীঘাংসায়
আদীম আনন্দে নেচে উঠলো ঘাতক চক্ চকে অস্রহাতে
নির্বাক চেয়ে থাকে পথচারি শব্দহীন লুকোয় আড়ালে
সময়কে জিজ্ঞাসা করলে বলে দেখেনি
বাতাসকে জিজ্ঞাসা করলে হয়ে যায় মৌসুমী
এখন সে নিয়ন্ত্রণ করে সময়ের পৃষ্ঠার হরফগুলো।
সাইন্স-ফ্রিকসান নাকি বলেছে মানুষ ক্রমশঃ দিনকানা হবে।
আমাজান জঙ্গল নাকি এখন আধুনিক সভ্যতার প্রতীক
মানুষ উলঙ্গ হলে প্রকৃতির কাছে পায় আদর সোহাগ
দায়-দেনার চক্রব্যুহ থেকে অনেক দূরে নিরাপদ
ঘুরে বেড়ায় বিশ্ব দেখে আজব উটের পিঠে চড়ে
রক্ত মাংসের গড়া মানুষ গুলো ফিরেছে প্রস্তর যুগে।
শেষ নিঃশ্বাস মানে জীবনের মৃত্যু
জন্ম থেকে নীল সাগরে অবগাহন করা এই আমি
শুষে নিয়েছি বরাবর সরলরেখার পথ ধরে গরল সাগর
নীলের মাঝে নীলের এই সংগ্রাম পথ চেনায়
দুর্গম পাহাড়, নদী-সমুদ্র আর কৃষ্ণ সাগর
ডুবে আছে আমার পৃথিবী সবটুকু অংশজুড়ে।
প্রতিদিন যুদ্ধ করি সত্যের সাথে মিথ্যের
ভালবাসার সাথে ঘৃণার,প্রয়োজনের সাথে অভাবের
আশার সাথে হতাশার,যুদ্ধের সাথে আপোষের
বন্ধুর সাথে শত্রুর সাথে মিত্রের সব্যসাচী রূপের
কালো চোখ ধূসর বালুময় চৈত্রের ঘ্রাণ ঔদ্ধত্যের।
এক বর্ষা ঋতুর আষাঢ় মাস অবয়ব নির্ঝর
মেলে ধরি অচেনা নাটকের কল্পনার পর্ব
তুলে ধরি দর্শকের কৌতুহলি গ্যালারী মাঝে।
ঘুণে ধরা এক বিকেল গোধূলির চিত্র দেখে
রোমাঞ্চিত হয় বুকের সবটুকু সবুজ আবহে
নিঃশ্বাস ফেলে তৃষিত সুন্দরে নন্দিত নরক
আমার চোখ বারবার আবিরে হোলি খেলে
ফাগুনের পড়ন্ত সন্ধ্যায় একবার–বারবার।
আমি লাফ দিয়ে আকাশে উঠি শিতোষ্ণ মেঘ দেখি
আমাকে টানে কেবল সামনে টানে অদৃশ্য সুতোয়
বোশেখের নাচন জাগে রক্তে শিরায় উপশিরায়
কাঁপন জাগে অন্তহীন পূণর্জাগরণে সাঁনাই থেকে
বেজে ওঠে দখিনা দিগন্তে শতবার কে যেন
হাত বাড়িয়ে আছে আহবান তার দুর্বার।
আমি আবার হাঁটতে থাকি পেছনে যাই সামনে যাই
কার মোহটানে কেবল রোমাঞ্চিত হই অনবরতঃ
একসময় সকল বোধের আকাল এসে জাপটে ধরে
অথচ গ্রীষ্ম গেলেই আসে বর্ষা আসে শরৎ-হেমন্ত
তারপর শীতের মত কুয়াশা চাদরে শিশির আবৃত
জীবন একসময় আলিঙ্গন করে বলে শেষ নিঃশ্বাস
তুমি কী জানোনা শেষ নিঃশ্বাস মানে জীবনের মৃত্যু!