
সম্পদ বাড়ে খাওয়া কমে
রানা জামান
টাকার চরিত্র বারোবণিতার চেয়েও অধোঃপাতে! এবং বাইন মাছের চেয়েও পিসলা! থাকতেই চায় না কারো কাছে চিরকাল চুপচাপ! বাংলাদেশে ব্যাংকের টাকা মেরে যারা হাজার কোটিপতি, ওদের টাকা চলে যায় সুইসব্যাঙ্কে। ট্যাব খুলে মাঝে মাঝে টাকার অঙ্কের ব্যালান্স দেখে সন্তুষ্টির হাসি হাসে ওরা।
এসকে সিকদার তেমনই একজন সফল মানুষ। প্রথমে ছেলে ও পরে মেয়েটা চলে গেলো জার্মানি লেখাপড়া করার জন্য। কিন্তু স্ত্রী রেহানা সন্দেহ করতে শুরু করলেন। সন্দেহ বাড়তে থাকায় রেহানা তালাক নিলেন। হার্ট অ্যাটাক হলো এসকে সিকদারের। রিং পরানো হলো দুটো। খুলে গেলো শরীরে রোগ ঢোকার দরজা। এরপরে একের পরে এক রোগ বাসা বাঁধতে থাকলো শরীরে। হাইপারটেনশনের পরে ডায়াবেটিস ঝেকে বসলো শরীরে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে কিডনি আক্রান্ত হবেই। সুখের শরীর ভোরে বা বিকালে নিয়ম করে হাঁটাহাঁটি করতে পারে না। কিডনি আক্রান্ত হতে এই সুযোগ ছাড়ে না কখনো।
এসকে সিকদারের কমতে থাকলো খাওয়া। তবে ব্যাংক ব্যালান্স বাড়তে থাকলো বিপরীত দিকে। টাকার সাথে পাল্লা দিয়ে কমতে থাকলো রিজিক ওর। স্ট্রোক ব্যতিত বড়লোকের সকল রোগ এসকে সিকদারের শরীরে বাসা বেঁধে গেছে ইতব্যসরে। ব্যাংকঋণের টাকা পরিশোধ না করে রিসিডিউলিং করতে থাকায় ফিক্সড ডিপোজিটের সুদের মতো বাড়তে থাকলো টাকা।
প্রাসাদোপম বাসায় এসকে সিকদার একা থাকেন। ঠিকা বুয়া কাজ করে যায় এবং রান্নাও করে। কোনো কঠিন রান্না না।
এসকে সিকদার রোগাক্রান্ত শরীর নিয়ে সারাদিন ব্যবসা দেখে বেড়ান গাড়ি করে: অফিস থেকে ফ্যাক্টরি; ফ্যাক্টরি থেকে কোনো পার্টিতে। যেখানেই থাকেন না কেনো রাত আটটা মধ্যে ফিরে আসতে হয় বাসায়।
আজও তাই করেছেন। ট্যাবে ব্যালান্সটা দেখে সন্তুষ্ট এসকে সিকদার: সুইস ব্যাংকে পাঁচ শ কোটি এবং বাংলাদেশে তিন শ।
তখন বুয়া এসে বললো, পেঁপেঁসিদ্ধ তৈরি চাচা। গরম থাকতে খাইয়া লন।