রোবট প্রযুক্তি ও শ্রম শক্তির ভবিষ্যৎ
নিখিল রঞ্জন গুহ
যে ভাবেই ব্যাখ্যা করা হোক না কেন এই সত্যকে কখনই অস্বীকার করা যায় না যে বর্তমান উৎপাদন ব্যস্থায় সম্পদের কেন্দ্রীভবনের মূল ভিত্তিই হল শ্র্মশোষণ যার রহস্য উপযোগিতা সৃষ্টিতে উদ্বৃত্তমূল্য তত্ত্বের মধ্যে নিহিত । সভ্যতার আদিতে বনচারী এবং গুহাবাসী মানুষের মধ্যে এমনটা ছিল না। যেদিন থেকে সম্পদের ওপর মানুষের ব্যক্তিগত অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেদিন থেকেই বিভাজিত সমাজের উৎপত্তি ।
বিবর্তনশীল মানব ইতিহাসে রূপ এবং প্রকরণের মধ্যে প্রকারভেদ ঘটলেও তার ধারাবাহিকায় বিঘ্ন ঘটেনি । এই বিবর্তনের ফল আধুনিক উৎপাদন ব্যবস্থার উল্গেখযোগ্য উপাদান হিসেবে শ্রমজীবী মানুষের গুরুত্ব আজও বর্তমান । ব্যক্তি মালিকানাহীন বিশ্বপ্রকৃতিকে আদিম মানুষ যখন নিজেদের জীবন ধারণের প্রয়োজনে ভোগ করতে শিখেছে তখন এই অবস্থা ছিল না । আদিম সাম্যবাদী যুগে মানুষের শত্রু ছিল বিরূপ প্রকৃতির খামখেয়ালীপনা(ভূমিকম্প, অগ্নুৎপাত,বন্যা ও দাবানলসহ না জানা আরো নানা প্রাকৃতিক বিপর্যয় যাকে মানুষ দৈব বলে জানত)আর ছিল হিংস্র জন্তু জানোয়ার ।
এই অনিশ্চিত জীবনই তাঁদের সঙ্গবদ্ধ হতে শিখিয়েছে । হয়তো তখনও ভাষা তাঁর আয়ত্তে আসেনি । যেদিন থেকে সে গোষ্ঠী জীবনে প্রবেশ করেছে সেদিন থেকেই সে একে অপরের উপর আধিপত্য কায়েম করতে প্রবৃত্ত হয়েছে । সেই দ্বন্দ্ব আজও বর্তমান । বরং এই অধিকার কায়েমের বাসনা সেই দ্বন্দ্বকে আরও তীব্র করেছে । সমাজ বিকাশের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় মহান দার্শনিক কার্লমার্কস বিষয়টিকে যে শুধু উৎঘাটন করেছিলেন তাই নয় তিনি এই অবস্থার পরিবর্তনের পথও নির্দেশ করেছেন ।
আজ এটা প্রতিষ্ঠিত, তার দর্শন শুধুমাত্র কল্পনাবিলাশ ছিল না, এটা একটা প্রয়োগের শাস্ত্রও বটে । এখনও বিশ্বের একটা বড় অংশ এই দর্শনকে সামনে রেখে স্বপ্ন দ্যাখে । তার জন্য রক্তও কম ঝড়েনি । এই অভিজ্ঞতাগুলি কারও অজানা নয়। কিন্তু শ্রমজীবী মানুষের সামনে যে একটা বড় ধরনের লড়াই ক্রমশ এগিয়ে আসছে সেটা হয়তো এখনও তার কাছে তেমনভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেনি ।
মনে রাখতে হবে উত্তর আধুনিক বিশ্বে এই চ্যালেঞ্জ খুব সহজ নয় । ইতিহাস প্রত্যক্ষ করেছে শ্রমজীবী মানুষের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রশক্তির নির্মম আক্রমণ । তবুও পুঁজিবাদী ব্যবস্থাকে বার বার শ্রমজীবী মানুষের মুখোমুখি হতে হয়েছে । মুনাফা শিকারী বর্তমান উৎপাদন ব্যবস্থা এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে । এই প্রশ্নে উৎপাদনের উপাদানগুলির মধ্যে শ্রমশক্তির বিকল্পের সন্ধান বিশেষভাবে গুরুত্ব পেতে চলেছে ।
তাতে একদিকে যেমণ সংঘ শক্তি হ্রাস পায় তেমনি উৎপাদন ব্যয়ও কমে আসে । রোবট প্রযুক্তি সেই সুযোগ এনে দিয়েছে । অটোমেশন বা সেই জাতীয় যন্ত্র শ্রমশক্তির বিকল্প হিসেবে দেখা দিলে এক সময় শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল । উন্নত সভ্যতার অনিবার্যতার দাবি নিয়ে সেই সময় চিন্তাবিদ ও অর্থনীতিবিদদের অনেককেই তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল ।
আধুনিক সভ্যতা তাকে অস্বীকার করতে পারেনি । পরবর্তীতে কর্মহীন বিকাশ বা জবলেস গ্রোথ তত্ত্ব শ্রমিকশ্রেণির আশঙ্কাকেই সত্য প্রমাণ করেছে । এই উদ্দেশ্যে বড় বড় কোম্পাণিও গড়ে উঠেছে । গবেষণার নানা ক্ষেত্র উন্মুক্ত থাকলেও তার অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত হয়েছে এই উদ্দেশ্য । শ্রমনিবির ক্ষেত্রগুলিতে মানুষের বিকল্প হিসেবে যন্ত্রশক্তির ব্যবহার বৃদ্ধিই তার প্রধান লক্ষ্য । ফলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও শ্রমসংচোনের অনুপাতও বর্তমানে পরস্পর বিপ্রতীপ মুখি ।
অন্যভাবে বলা যায় কর্ম সংকোচন এবং যন্ত্রশক্তির ব্যবহার সেই নীতিকেই অনুসরণ করছে । তাকে তীব্রতা দান করছে রোবট শিল্প । এই বিজ্ঞাণ প্রথম দিকে কম দক্ষ,ঝুকিপূর্ণ ও শ্রমসাধ্য কাজে ব্যবহৃত হলেও এখন তা আর সেখানে সীমাবদ্ধ নেই । আপতভাবে তা মানব সভ্যতার কাছে কল্যাণকর হিসেবে প্রতিভাত হলেও লাভবান হয়েছে শিল্পপতিরা । কা্রণ রোবট ব্যবহারে প্রাথমিক ব্যয় বেশি হলেও দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে তা উৎপাদন ব্যয় হ্রাস করতে সক্ষম । তাকে দিয়ে কাজ করানোর ক্ষেত্রে সময় ও নিয়মের বাধ্যবাধকতা থাকে না ।
তাঁর দক্ষতা এবং কর্ম ক্ষমতা একজন শ্রমিকের তুলনায় অনেক গুন বেশি । একজন শ্রমিকের নিয়োগের সাথে শুধু যে তাঁর বেতন বা মজুরির সম্পর্ক থাকে তাই নয় তার সাথে থাকে সামাজিক ও রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা । জড়িয়ে থাকে অধিকারের প্রশ্ন এবং তাকে কেন্দ্র করে অধিকার রক্ষার মতো সংগ্রামের মৌলিক বিষয় । রোবট প্রযুক্তি পুঁজির মালিকদের তা থেকে মুক্তি দিতে সক্ষম ।
আধুনিক বিজ্ঞানের কৌলীন্যে রোবট নিজ গুণে তাঁর কর্ম পরিধিকে ক্রমশঃ বিস্তার করে চলেছে । এই প্রযুক্তি এখন এতটাই এগিয়েছে যে সে ক্রমশঃ কারখানা,ব্যবসায়,চিকিৎসা ব্যবস্থা,গৃহস্থ বাড়ি,যুদ্ধ ক্ষেত্র সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়তে চাইছে । রোবটের গুণগত মানের উন্নতিও চোখ পড়ার মতো । বিস্ময়কর ভাবে বেড়েছে প্রতিক্রিয়া দানের ক্ষমতা । বিজ্ঞানের অভানীয় সাফল্য এই যন্ত্রকে কৃত্রিম বুদ্ধি(A-I) দান করতে সক্ষম হয়েছে । প্রোগ্রামিঙের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে সে এখন মানুষের মতই কাজ করতে সক্ষম । কোনও কোনও ক্ষেত্রে রোবটের কর্মদক্ষতা মানুষের থেকেও বেশি । অনেক ক্ষেত্রেই নির্ভুল এবং সূক্ষ্ম কাজে তাঁর জুড়ি নেই ।
এই প্রসঙ্গে “সফিয়া”র কথাই ধরা যাক। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল সৌদি আরব তাঁকে নাগরিকত্ব দেওয়ায় সে খুশি কিনা । তাঁর উত্তর ছিল, ‘সে খুশি’। সে এও বলেছিল, ‘বিশ্ব নাগরিক বলতে একমাত্র তাকেই বোঝায়’ । তাঁর জেন্ডার নিয়েও প্রশ্ন করা হয়েছিল । এই প্রশ্নের উত্তরেও তাঁর বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যায় । সে বলেছিল তাঁর জেন্ডার হয় না ।
সে কিন্তু আদৌ রক্ত মাংসের মানুষ নয় । “সফিয়া” তাঁর উৎপাদন সংস্থার দেওয়া নাম । দেখতেও আধুনিক কোনো মেয়ের মতোই । সে মুম্বাই আই আই টিও ঘুরে গিয়েছে । কোরিয়াতেও সে আমন্ত্রিত ছিল । এই থেকে আধুনিক রোবট প্রযুক্তির উন্নতি সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যায় । এমন আরো উন্নত প্রযুক্তির রোবটের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে । এই ব্যবসায় এখন লাভজনকও বটে ।
তাই ব্যবসায়িক ভিত্তিতে রোবট উৎপাদনে বহুজাতিক সংস্থাগুলি বিপুল পুঁজি নিয়ে এগিয়ে এসেছে । সম্প্রতি বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে ভবিষ্যৎ বিশ্বে রোবটের কতৃত্ব বৃদ্ধি পাবে । বুদ্ধিমান রোবটের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্রিটেনে ৭১% মানুষের মধ্যে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে । ফেলো অফ ওয়ার্ল্ড অ্যাকাডেমি ফর আর্টস এন্ড সাইন্স এন্ড ফিউচারোলজিস্ট ব্রিটিশ বিঞ্জানী ড.ইয়ান পিয়ারসন্স মনে করেন ত্রিশ বছরের মধ্যে রোবটের সংখ্যা ৯৪০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে । তাঁর ধারণা ২০৪৮ সালের মধ্যে এই সংখ্যা পৃথিবীর মোট মানুষের সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে । এবং সেই সাথে বৃদ্ধি পাবে আবেগ প্রকাশের সক্ষমতা যুক্ত রোবটের সংখ্যাও ।
তিনশত পৃষ্ঠার ব্যাংক অফ আমেরিকা মেরিল লিঞ্চ প্রদত্ত রিপোর্ট থেকে এর ভয়াবহতা সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যায় । সেখানে বলা হয়েছে “We are facing a paradigm shift which change way we live and work, the authors of B.o.AML report said the pace of disruptive technological innovation has gone from linear to parabolic in recent year. .Penetration of Robot and artificial intelligence(A I)has hit every industry sector and has become an integral part of our daily lives”।
ওই রিপোর্টে আরও দেখানো হয়েছে বিশ্ব বাজারে সাধারণ রোবট এবং কৃত্রিম বুদ্ধিযুক্ত রোবটের ব্যবসা ২০২০ এর মধ্যে প্রায় ১৫২.৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে যাবে।.২০১৪ সালে বিশ্বে এই ব্যবসা ছিল মোট ২,২৯,০০০ ডলার । বৃদ্ধির হার ছিল বছরে ২৯% । সমীক্ষা চলাকালীন অবস্থায় বিশ্বে ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবটের সংখ্যা ছিল ১.৪ মিলিয়ন । ২০১৮ সালের মধ্যে এই বৃদ্ধির হার ৯% থেকে ১১% এর মধ্যে ঘোরফেরা করেছে ।
ইউনিভারসিটি অফ অক্সফোর্ডে উল্লেখিত তথ্য থেকে এটা স্পষ্ট যে রোবট শিল্পের এই বৈপ্লবিক উন্নতিতে ব্যাপক ভাবে শ্রমিক কাজ হারাবে । অনুমান করা হয়েছে বৃটেনে এবং আমেরিকায় শিল্পে শ্রমিকের হ্রাস ঘটবে জথাক্রমে ৩৫% এবং ৪৭% । এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে বৃটেনের নাগরিকদের মধ্যে প্রায় ৬১% মনে করেন আগামী দিনে তাঁদের কাজের জায়গা দখল করে নেবে রোবট । ফ্যাক্টারি, রিসেপসনিষ্ট,কাস্টোমারকেয়ার,লাইব্রেরিয়ান প্রভৃতি ক্ষেত্রগুলিতে ব্যাপক ভাবে কাজের সংকোচন ঘটবে এবং সেই জায়গা দখল করবে উন্নত রোবট।
অতি উন্নত দেশগুলি বিশেষত মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র,ব্রিটেন,চিন,জাপান এই প্রযুক্তিতে ঈর্ষণীয়ভাবে সাফল্যলাভ করেছে । এই দেশেগুলিতে বানিজ্যিক ভিত্তিতে রোবট উৎপাদন শুরু হয়েছে অনেক দিন হল । অন্যান্য উন্নত দেশগুলিও পিছিয়ে নেই। পৃথিবীর মোট চাহিদার ৫২ শতাংশই এখন জাপান মিটিয়ে থাকে ।
জনসংখ্যার হ্রাস জনিত কারণে যুবশক্তির অভাব এবং বরিষ্ঠ নাগরিকের আধিক্য জাপানে এই শিল্পের উন্নতিতে বিশেষভাবে সাহায্য করেছে। সেখানে এই শিল্পের উন্নতি এতটাই যে দুঃখ,ক্ষোভ,আ্নন্দ,বিস্ময়,বিষন্নতা,ভয়,অপছন্দ এবং নিত্যদিনের স্বাভাবিক আচরণ প্রভৃতিতে রোবটের ভূমিকা বিস্ময়কর । জাপানে শিল্প এবং পরিষেবা্ বাদেও সচ্ছল পরিবারগুলিতে বয়স্ক মানুষদের দেখাশোনার কাজেও রোবটের চাহিদার বৃদ্ধি পেয়েছে । রোবট শিল্পে চিনের অগ্রগতিও দেখার মতো । সেই দেশে পরিষেবার ক্ষেত্রে পরীক্ষামূলকভাবে রোবটের ব্যবহার করা হচ্ছে ।
মনু্ষ্যবিহীন সমম্পূর্ণ রোবট পরিচালিত পাইলট প্র’জেক্ট হিসেবে একটি ব্যঙ্ককে বেছে নেওয়া হয়েছে । আপ্যায়ন থেকে গ্রাহকদের সমস্ত পরিষেবাই সেখানে রোবট দিয়ে থাকে । অধুনা ভারতেও একটি রেস্টুরেন্টে রোবটের ব্যবহার করা হয়েছে যার কাজ হল ওর্ডার নেওয়া এবং খরিদ্দারদের পরিষেবা দেওয়া । কৃত্রিম(A I) বুদ্ধিযুক্ত রোবট শিল্পে ভারতও নামতে চলেছে । দেখা যাচ্ছে সংগঠিত ক্ষেত্রগুলিতে শ্রমিকের সংখ্যা ক্রমশই কমে আসছে । ভিড় বাড়ছে অসংগঠিত ক্ষেত্রগুলিতে ।
এই প্রবণতার বিভিন্ন কারণগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে রোবটের ব্যবহারকে উল্লেখ করা যায় । ডঃ ইয়ান পিয়ার্সসনের গবেষণা পত্র থেকে প্রস্তুত ব্যাঙ্ক অফ আমেরিকার মেরিল লিঞ্চ প্রকাশিত সমীক্ষাকে তাই অবহেলা করা যায় না ।
রোবট প্রযুক্তিবিজ্ঞানের অগ্রগতির প্রেক্ষিতে ভবিষ্যৎ বিশ্বে শিল্প এবং পরিষেবার ক্ষেত্রগুলিতে শ্রমজীবী মানুষের অবস্থান কোথায় গিয়ে দাঁড়াতে পারে তার একটা ধারণা এখান থেকে পাওয়া যায় । শ্রমিক আন্দোলনের ভিত্তিই হল শ্রমশক্তির বিক্রিকে কেন্দ্র ক’রে যা কোনও না কোনও ভাবে কোনও শিল্পকে অবলম্বন ক’রে সংগঠিত হয়ে থাকে । আগামী দিনে এই আন্দোলনের রূপ কী হবে তা বিবেচনার দাবি রাখে । রোবটিক উৎপাদন বযবস্থায় শুধুমাত্র পরিচালনার কাজে প্রযুক্তিবিদ্যায় দক্ষ কিছু মানুষকে(ম্যানেজার)বাদ দিলে সাধারণ শ্রমিকের চাহিদা আদৌ থাকবে কিনা, থাকলেও তা কতটুকু তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেবে ।
কারণ এই শিল্পের বিকাশ কায়িক শ্রম বা অদক্ষ শ্রমিকের চাহিদা কমাবে । এখন নানা ধরনের যন্ত্র ব্যবহৃত হলেও মুনাফা শিকারী বৃহৎ পুঁজির মালিকেরা কৃষি ক্ষেত্রেও রোবটকে ব্যবহার করবে ধরে নেওয়া যায় । অনিবার্য ভাবেই ভবিষ্যতে কৃষিশ্রমিকের উপরেও তা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে । আপাতভাবে বিষয়টিকে কাল্পনিক মনে হলেও এই প্রযুক্তির বর্তমান উন্নতি তারই ইঙ্গিত বহন করছে । একটা ছোট্ট উদাহরণ দিয়েই বিষয়টিকে ব্যখ্যা করা যায়, যখন এদেশে প্রথম কমপিউটার চালু হয় তখন শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে প্রচন্ড বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল । শ্রমশিক্তির উপর তার নেতিবাচক প্রভাবও পড়েছিল । তাই বলে বিজ্ঞানের অগ্রগতি থেমে থাকেনি । ভবিষ্যতে রোবট নিয়ন্ত্রিত বিশ্বে এই সম্ভাবনাকে তাই উড়িয়ে দেওয়া জায় না।
নিখিল রঞ্জন গুহ,
ডাবগ্রাম-১,
পোঃ রবীন্দ্র সরণি,
শিলিগুড়িঃ৭৩৪০০৬