Satyen Mondal

সত্যেন মণ্ডল

শুধু খুশি করার জন্য
সত্যেন মণ্ডল                                        

এখন আর  নিজের ভাল লাগার জন্য কিছু করিনা
একটা সময় নিজের পছন্দ অপছন্দই গুরুত্ব দিতাম
এখন অন্যকে খুশি করার জন্য ভাবতে হচ্ছে অনবরত
স্ত্রী পুত্র কন্যা বৌমা জামাতা নাতি নাত্নি আত্মীয় স্বজন
সবাইকে কিভাবে খুশি রাখা যায় তাই ভাবি সর্বক্ষণ।

দশঘন্টা হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে নিজেকে পুরো নিঙড়ে
যখন বিধ্বস্ত অবস্থায় কারখানা থেকে বের হই
মনে হয় কাজে নিশ্চিত ভাবে মালিক খুশি হয়ে যাবে
বেতন বোধহয় আমার এবার একটু বাড়িয়ে দেবে
দ্রব্য মূল্য বাড়লেও কুম্ভকর্ণ মালিকের ঘুম  ভাঙেনা ।

খদ্দের ধরার জন্য গলির মোড়ে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি
সাজগোজের জেল্লা বা মাঞ্জা দিই রঙ মাখি 
ঘরে এনে তার ইচ্ছেতে নিজেকে পুরো উজাড় করে দিই
আনন্দ আর তৃপ্তি পেয়ে খুশি হয়ে যদি আবার আসে !
নিশ্চয়ই আজ অখুশি হয়নি আমার একরাতের নাগর।

কথাগুলো একজন বয়স্ক গহকর্তা একজন শ্রমিক
আর একজন হতভাগিনী সমাজ পরিত্যক্তা বারবধূর
সবাই খুশি করার জন্য নিজেকে রাখে ব্যস্ত অনুক্ষণ
এ জগত সংসারে এমন ব্যস্ততার পিছনে প্রায় সবাই
মন  না  চাইলেও  ছুটে   চলেছি  সর্বদা  সর্বক্ষণ !

কবিতা :সূর্যের থেকেও বড়
সত্যেন মণ্ডল

সেদিন নক্ষত্র মণ্ডলের বুক থেকে
দুটো তারা খসে পড়েছিল ;
একটা এসে আমার হৃদয়ে
আশ্রয় নিয়েছিল ; নিভৃতে ।
সূর্যের মতো দ্বিতীয় নক্ষত্রটা—
ছিলো আমার চোখে ।
বিশ্বের সমস্ত অন্ধকার জমাট বাঁধছিল
বৃষ্টি ঝরছিলো ,
মৌমাছিরা মধু খুঁজে ফিরছিলো
গোকুলমুদির ন্যাংটো ছেলেটা
দু-হাত দিয়ে তাই তাই করছিল,
একমুঠো অন্ন আর দু-হাত জমির জন্য
কিংবা একটু বিশুদ্ধ বাতাসের জন্য
নিঃস্ব, মানুষগুলো হাঁটছিল —
চুপচাপ ; নির্বাক।
তাদের সামনে আমি দাঁড়ালাম
চরৈবেতি ভাবটা গেল তাদের দ’মে
ঘুমচোখে বল্লাম, ভেবোনা ;
সূর্যের থেকেও দীপ্র একটা নক্ষত্র
তোমাদের পথ দেখাবে ।

Leave a Reply