SIDDHESWAR HATUI

SIDDHESWAR HATUI

ধরে রাখা যায়না

সিদ্ধেশ্বর হাটুই

দেহটা তোমার হলেও- প্রাণটা তোমার হাতে নয়
তাই বলে আগাম করে রাখবে চিতা, তাই কি আর হয় ?
যারা ভাবেন জীবন আমার -থাকব বহু বছর বেঁচে
ঐ চিন্তা মনের মধ্যে নিয়ে ভাই -কতজন উপরে চলে গেছে ।
মরতে তো কেউ চায়না সহজে, সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে
কি যে হয় নিজের অজান্তেই কে যেন -এতো প্রাণ নিচ্ছে কেড়ে।
তাই অহঙ্কার না করে আর করো মানুষের একটু উপকার
দেখবে তোমার জীবন শেষে পাবে সবার ভালোবাসা-নমস্কার।
কে জানে কে যাবে চলে কখন কোনখানে…
জীবনটা একটি তাসের ঘর ,নানা রঙের খেলা দেখা যায় এখানে।
কেউ বা একটু বেশি হাসে, কেউ কাঁদে গোপনে গোপনে।
মায়ায় জড়ানো ঘুমের ঘোর কেন কাঁদায় বারংবার
একজীবনেই শেষ হয়ে যাবে যত আছে অধিকার।
আমার বলতে থাকবেনা কিছু , থাকবে শুধুই তোমার সৃষ্টি
প্রান গেলেই সব অন্ধকার হবে , হবেনাতো আর শুভ দৃষ্টি।
কত কত আপন-স্বজন তখন হয়ে যাবে পর …..
ছাড়তে হবে রাজপ্রাসাদ, আর না হয় ঐ ছোট্ট ঘর।
আজকে যে জন গেছে চলে তাদের সকলে যাবে ভুলে
তাই বাঁচতে দিন আর নিজেও বাঁচুন নিজ স্বার্থটা বাক্সের ভেতর ঢেলে।

সেদিন দেখা হয়েছিল

সিদ্ধেশ্বর হাটুই

কতদিন পর দেখা হলো, বন্ধু বলে পিছন থেকে ডাকলে আমায় কত স্নেহে…..
তোমার ঐ মুখখানা দেখে পড়লো মনে পুরানো কত সুমধুর সেই স্মৃতি
বললাম আমি- তোমার সঙ্গে প্রথম দেখা হয়েছিল … সেই হাই স্কুলের ক্লাস রুমে, সেই যে তুমি বলেছিলে-
একদিন আমরা বড় হয়ে করব দেশের জন্য কাজ, করব নিজেদের দুর্গত সংসারের অগ্রগতি।
দেখতে দেখতে স্কুল শেষ করে কলেজে দিলাম পা, সেদিনও সেই তুমি ছিলে মোর সঙ্গে
কত সময় একসাথে বসে কেটেছে কলেজ মাঠে…….মনে পড়ে বন্ধু তোমার ?
দেখতে দেখতে একদিন কলেজ জীবনও গেল ফুরিয়ে, তারপর সব হয়ে গেল এলোমেলো
তুমি চলে গেলে কোলকাতায় এম.এ-বি.এড করব বলে, মনে সেদিন লেগেছিল কত ব্যথা আমার।
আজ যখন দেখলাম তোমায় মনটা গেল আনন্দে ভরে, তাই বললাম-এসোনা বন্ধু একটু বসি ঐ গাছের ছায়ে,
আমি জিজ্ঞাসা করলাম কি করছো এখন? কেমন আছো ? আর কোথায় বা তুমি থাকো ?
উত্তরে তোমার চোখের জলে ভিজল আমার বুক, জানলাম যখন -তুমিও এখন সর্বহারার দলে।
পিতা-মাতা হারিয়ে তুমি ছেড়েছিলে পড়াশোনা- অভাবের সংসারে, এখন দুচোখে আঁধার দেখো।
ভাগ্যের কি পরিহাস হলোনাতো কনো কাজ এখনও তুমি বেকার………বেকার….. বেকার।
বন্ধু তখন আমাকে বলে -তুমি কেমন আছো ? আমি হেসে বললাম ঐ আরকি ‘জল ছাড়া মাছ !’
চাকরি তো আর ভাগ্যে নেই করি মুনিশগিরি, দীনই জানে দিনের কথা-সুখের থেকে আড়ি।
আমি তো সেই তোমারই বন্ধু তাই ভাগ্যটা দেখো সমান -তোমার-আর আমার।
বন্ধু তখন মুচকি হেসে বলল …আমার হাতটি ধরে- ভালো থেকো , হয়তো দেখা হবে পরে।
দুজনে মিলে সেখান থেকে চললাম যে-যার বাড়ি, বন্ধু দেখছে পিছন ফিরে- দেখছে পথের নর-নারী।
এই দেখাই হয়তো শেষ দেখা- আমি ভাবছি মনে মনে, বন্ধু আমার থাকুক ভালো ঐ দীনের মাঝ খানে,
চোখের জলটা রাখলাম ধরে যত্ন সহকারে, এমন বন্ধুরে কখনো কি আর আমিও ভুলতে পারি।

সিদ্ধেশ্বর হাটুই, গ্রাম-সুখাডালী, পোঃ-সুখাডালী,থানা-সারেঙ্গা,

জেলা-বাঁকুড়া.WB. মোবাইল নং–৯১৫৩৩৫৫৯৬৩

Leave a Reply