Sohag Ghosh

দীপ্ত,মা ও ভালো থাকা
সোহাগ কুমার ঘোষ।

ঘড়িতে নয়টা(রাত) বেজে মিনিট দশেক হয়ে গেছে।দীপ্ত ব্যস্ত ত্রিকণোমিতির সূক্ষ্ম প্যাঁচের জটলা খুলতে।তাছাড়া কিছুক্ষণের মধ্যেই যেতে হবে অন্য বাসায়।এসময় মোবাইলের যন্ত্রনা একেবারেই সহ্য হয় না।তবুও ভাইব্রেশন কানে আসতেই স্ক্রিনে মায়ের নম্বরে চোখ পড়ে যাওয়ায় রিসিভ করতেই হলো।মা ছাড়া এখন আর প্রতিদিন দীপ্তকে অন্য কেউ ফোন করে একই ক্থা জিজ্ঞেস করে না।

একটা সময় দীপ্তর এতে রাগ হতো।কিন্তু ফ্রেন্ডসার্কেল থেকে ঝরে পড়ার পর থেকে স্ক্রিনে মায়ের নম্বরটা দেখলে দীপ্তর মুখে প্রশান্তির রেখা স্পষ্টরূপে প্রতিয়মান হয়।তবে মজার ব্যাপার হলো প্রতিদিন দীপ্ত মা বলে ডাকার আগেই মা“কেমন আছিস “বলে ফেলে জন্য দীপ্ত কেমন দমে যায়।আজও তাই হলো।


মাঃকেমন আছিস বা-?(বাবার আঞ্চলিক রূপ)
দীপ্তঃমা-,ভালো আছি।তোমার কি অবস্থা?
মাঃআমিও ভালো আছি।তুই কি করিস?
দীপ্তঃরুমে।বসে আছি।বাবা কি করে?
মাঃখেয়ে শুয়ে পড়েছে ।তুই খাইছিস?
দীপ্তঃনা,একটু পরে খাব।
মাঃরান্না করবি নাকি বাইরে খাবি?

দীপ্তঃবাসায় রান্না করব।
মাঃঠিকমত খাওয়া-দাওয়া করিস ।সাবধানে থাকিস।রাখলাম?
দীপ্তঃ হুম,রাখো।

মাঃআর কিছু বলবি? টাকা পয়সা লাগলে বলিস।
দীপ্তঃনা,রাখো।
মায়ের ফোন কেটে দিয়ে দীপ্ত আবার পড়ানোতে মন দিল।মায়ের সুর কেমন যেন হয়ে গেছে!তাছড়া মায়ের ওষুধও শেষ হয়েছে সপ্তাহ খানেক হলো ।ওষুধ শেষে ডাক্তার যেতে বলেছেন আবার।অথচ এ ব্যাপারে মা কিছুই বললো না!

দীপ্তের মা পরিপাকতন্ত্রে নানান জটিলতায় ভুগছে বছর দুয়েক হবে।বড় বড় নামকরা ডাক্তার এর মধ্যেই পরিবর্তন করা হয়েছে দু-চার জন।ওষধ ফুরালে তাদের কেরামতি শেষ।স্থায়ী কিছুই হয় না।

এদিকে দীপ্তর বাবার যে সারারাত ঘুম ধরে না সেটা বাড়ির সবাই জানে।দীপ্তর কিছু একটা হবে ভেবেই তার দিন যায়।
সুদিনের অপেক্ষায় কেটে গেল অনেকগুলি প্রহর।কেবল দীপ্ত কিছুই করতে পারে না!

৪৯,নর্থব্রুক হল রোড,বাংলাবাজার,ঢাকা।
২৮ মে,২০২২।
সোহাগ কুমার ঘোষ।

This Post Has One Comment

  1. কাফি-ঠাকুর

    বাস্তবিক প্রতীক্ষায় প্রতিফলিত দীপ্ত💙

Leave a Reply