
পরিচয়
প্রথম পর্ব
স্বাগতা ব্যানার্জী
বিয়েটা হলো খুব জলদি। রাস্তার ধারের বারাব্দায় গাছে জল দিচ্ছিল তোড়া, নিচের থেকে দেখে পছন্দ করে ফেললো নীল। তোড়া না না পায়ের তোড়া নয় ফুলের তোড়া। বাবাই বলেছিল আমার জীবনের সব ফুল নিয়েই আমার তোড়া। বুদ্ধদেব গুহর কোনো এক গল্পের নায়িকার নাম ও তোড়া বাবাই এর পছন্দের লেখক, তাই কারো বারণ না শুনেই তোড়া নাম রাখা হয় তোড়া মুখার্জি।
নীল খুব সাধারণ নয়, সে বর্তমানে এক MNC তে কর্মরত, এক্সিকিউটিভ হিসাবে , স্যালারি খুব ভালো, সবচেয়ে ভালো হলো সে মানুষ খুব ভালো।
তোড়া কে এক দেখাতেই ভালো লেগেগেছে, বাবা কে জানাতেই অজিত বাবু গাড়ি থামিয়ে কলিং বেল টিপে দরজায় দাঁড়ান। তোড়া ই দরজা খোলে, অজিত বাবুর প্রথম প্রশ্ন বাড়িতে বড় কেউ নেই?
তোড়া বাবাই দেখো তো একটু বলে হাঁক পারতেই তরুণ বাবু এসে উপস্থিত। অজিত বাবু জানান আমাকে চিনবেন না কিন্তু আমি একটু কথা বলতে চাই আপনার সাথে। বলুন বলতেই বলেন একটু বসতে হবে যে। তরুণ বাবু আসুন বলে ভিতরে নিয়ে গিয়ে বাইরের ঘরেই বসতে বলেন।
অজিত বাবু মনবাসনা জানাতেই তরুণ বাবু বলেন এই ভাবে ও হয় না দাদা, আমি একটু বাড়িতে কথা বলে নি, আপনাকে জানাব খুন।
তরুণ বাবু স্ত্রী কে জানাতেই উনি বলেন আগে খোঁজ নাও এভাবে হয় নাকি? আর তোড়া বলে আমি পড়া শেষ করে চাকরি করবো এখন বিয়ে করবো না বাবাই প্লীজ। তরুণ বাবু বলেন আগে দেখি তারপর বলবো।
পরদিন তোড়া র মর্নিং কলেজ। বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাসে উঠতেই দেখে নীল। চিনতে পারেনি এমন ভাব দেখালো যেন চিনে নি।নীল এগিয়ে এসে পাশে বসলো। আমাকে পছন্দ নয়? কি জানতে চাও বলো? তোড়া বললো একি অসভ্যতা আমার বাবাই যা করবে আমি তাতেই রাজি ,আমার পছন্দ ব্যাপার নয়। নীল বললো সে জানি তবু তুমি বলো পছন্দ তো? আমি কোনো উত্তর দেব না, কথা গুলো চিবিয়ে বলে নেমে গেল তোড়া।
এরপর প্রতিদিন নীল ঠিক আসতো, কলেজে নেমে যেত তোড়া, আর সে ফিরে আসতো।
তরুণ বাবু খোঁজ নিয়ে দেখলেন ভালোই ফ্যামিলি। তোড়া খুব সুখেই থাকবে। তাই আর দেরি না করে খবর দিলেন। অজিত বাবু এলেন আর সব ঠিক এই মুহূর্তে তোড়া বললো আমি বিয়ে করবো না।
তরুণ বাবু বললেন আমি কথা দিয়েছি , তুই এতেও রাজি হবি না? অগত্যা রাজি হলো তোড়া, কিন্তু বিয়ের ডেট পড়লো 6 মাস বাদে।
বিয়ের ঠিক তোড়া কলেজ যায় নীলের রুটিন ও এক। কিন্তু একদিন ও কথা বলে না কেউ ই।
সেদিন কোনো কারণে তোড়া বেলায় কলেজ যাচ্ছে, দেখলো নীল কলেজের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে, অফিস যায় নি নাকি, ভাবতে ভাবতেই নীল বলে একটু কথা ছিল। বাবাই বলেছিলেন আজ তুমি এ সময়ে কলেজে আসবে, ওহ বাবাই তাহলে খবর দেয়। তোড়া বললো কি কথা? তোমার কাজ শেষ করে নাও, আমি অপেক্ষা করছি। তোড়া র লাইব্রেরী তে কাজ ছিল। আধঘন্টা লাগলো, ।এসে বললো বলো কি বলবে? নীল বললো ভরসা করে এসো, তোড়া বললো বাড়িতে বলা নেই কোথাও যেতে পারবে না, নীল বললো বাবাই কে জিজ্ঞাসা করে নাও। উনি জানেন। তোড়া র খুব রাগ হচ্চিল বাবাই এর ওপর। বললো চলো। গঙ্গার ধারে একটা হোটেলে নীল নিয়ে এলো। তোড়া আগে কোন দিন আসেনি। নীল বললো আমার মা নেই জানো তো?
জানি।
নীল বললো তোমায় দেখে আমার এত ভালো লেগেছে কেন জানো?
তোড়া মাথা নেড়ে নাহ।
নীল বলে কোনো কারণ নেই তোমাকে দেখে আমার মনে হয়েছিল এই সে যাকে আমার দরকার। জানো আমার কোনো বন্ধু নেই স্বামী হবার আগে তাই বন্ধু হতে চাই। যে কারণেই কলেজে আসি, তোমার সাথে কথা বলবো বলে। কিন্তু তুমি তো বলো না। বন্ধু না হলে স্বামী যে ঠিক থাকে হতে পারবো না। তোমাকে নিজের করে পাবার আগে তাই নিজেকে তোমার মনের মত করতে চাই। 2 মাস নষ্ট হয়ে গেছে, প্লীজ একটু বলো কেমন স্বামী পছন্দ তোমার? তোমার বাবাই আমায় পছন্দ করেছেন তুমি না? তোমার বাবাই এর চোখে উৎরে গেছি,তোমার চোখেও চাই?
তোড়া কি করবে ভেবে পাচ্ছিল না।এই ছেলেটা কি সত্যি এইরকম সহজ সরল, না কি অভিনয় করছে।
তোড়া বললো, আমি একটু পুরোনো দিনের মত। আরেঞ্জে ম্যারেজে যে প্রতিদিন একটু করে চিনতে শেখা তা বেশি পছন্দের, তাই এখন কিছুই বলবো না।বিয়ে হোক।ঠিক জানতে পারবে।
নীল বলে ঠিক আছে। তবে আমি একটু জানিয়ে রাখি আমার সম্মন্ধে?
না ,চেনা পরিচিতি আস্তে আস্তে ই হবে।
বাড়ি পৌঁছে দিয়ে চলে যায় নীল।
পরদিন থেকে কলেজে যাবার সময়, কোথাও নীল কে পেলো না সে, ফেরার সময় না, পর পর 44 দিন ও না, কি হল রে বাবা। বাবাই ও এই কদিন একটা কথাও বলেনি অসুস্থ নাকি?
পর্ব-দ্বিতীয়
যেতে চাই কিন্তু কেন যাবো?
44 দিন টা ক্রমে 60 হয়ে গেল। সেদিন সন্ধ্যে বেলায় বাবাই কে সোফায় বসে থাকতে দেখে জিজ্ঞাসা করলো বাবাই মার্কেটিং কবে হবে? বাবাই বলল দেখি, তোকে তো যতবার বলেছি বিরক্ত হোস, আমি আর তোর মা মোটামুটি সব কিছুই করে ফেলেছি বাকি শুধু তোর গুলো, তুই যেদিন বলবি সেদিন ই হবে।
মা…
বলে ডাকে দিতেই সন্ধ্যা দেবী বললেন কি? আজ যাবে শাড়ি কিনতে, উনি বললেন চল। সন্ধ্যে হয়ে গেছে তো। তরুণ বাবু বললেন না আজ থাক বরং কাল যাবো বাইরে খেয়ে নেব ,সকাল বেলায় ই বেরোব।
তোড়া চেয়েও জিজ্ঞাসা করতে পারলো না, বরের বাজার হয়ে গেছে কিনা। শুধু বললো ঠিক আছে।
সকাল বেলায় সকলে মিলে চললো, বড় বাজার।
প্রিয়গোপাল বিষয়ী । দোকানে ঢুকে অবাক, মূর্তিমান তার বাবা কে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। এক মুখ হাসি।
অজিত বাবু বললেন বাড়িতে মেয়ে নেই জানো তো মা, নিজের জিনিস নিজেই পছন্দ করে নাও।
দুজনেই আছো তোমরা কেন আমরা বরং একটু লস্যি খেয়ে আসি।
তোড়া বললো মা না থাকলে আমি কিছু কিনতেই পারবো না।
অজিত বাবু বললেন আচ্ছা ঠিক আছে লস্যি না হয় পরেই খাবো,শুরু কর। বাবাই যেগুলো দেবে তাতে লাল বেনারসি ছাড়া আর 6 তা শাড়ি কিনলো নানা রঙ্গের। এবার নীল দের বাড়ির বেনারসি কিনতে গিয়ে দেখে বাবাজি একখান নীল বেনারসি পছন্দ করে রেখেছেন। শুধু খুব আস্তে বললো নীল আমার খুব প্রিয়। তোড়া যতবার গায়ে ফেলে দেখে ততবার ই দেখে একজন মুগ্ধ দৃষ্টি তে দেখছে।
বাজার করতে বেশি দেরি হলো না। সব কিছু কেনাটকটির পর সকলে একসঙ্গে আমিনিয়া গেল।বিরিয়ানির গন্ধ্যে ম ম করছে। কিছু বলার আগেই 3 প্লেট মাটন বিরিয়ানি আমিনিয়া স্পেশাল। 4 টে বাটার নান, 2 প্লেটে সালাড, 5 প্লেট চিকেন রেজালা, মশলা কোল্ড ড্রিংকস ,আর আমিনিয়া স্পেশাল আম ফিরনি।
তোড়া র বিরিয়ানি পছন্দ নয়, খুব কারে না পড়লে খায় ও না, আজ কে যা যা পছন্দ করে সব সামনে বুঝতে পারলো বাবাই এর হাত ধরে একজন জেনে ফেলেছে।বিল দেওয়া হয়ে গেল দুই বাবা প্রায় ছোট বাচ্চাদের মতো ঝগড়া করে শেষে ভাগাভাগি করে দিয়েছে।
ঠিক এই সময় একটা পিং। ফোন টা হাতেই ছিল, “জানি তোমার প্রেমের যোগ্য আমি তো নই, পাচ্ছে ভালোবেসে ফেল তাই, দূরে দূরে রই”।
মুখ তুলে তাকাতেই একজন মাথা নামিয়ে নিল।
এবার ফেরার পালা,কিন্তু তোড়া এখানে এলে একটা জিনিস খাবেই খাবে, তা হলো ফুচকা, কিন্তু আমিনিয়ার সামনে থেকে গাড়ি ধরলে তা তো সম্ভব নয়। একটু ইতস্তত করছে। হটাৎ বাবাই বললো, নীল তুমি কি একটু মেয়েটাকে ফুচকা খাইযে নিয়ে আসবে, আমরা একটু এখানেই দাঁড়াই।
তোড়া বললো না বাবাই আজ আর খাবো না। মা বললো না না দুটো খেয়ে আয়, নইলে মন খারাপ হবে। অগত্যা
যেতেই হলো।
আমার সাথে যেতে এত আপত্তি? নীল জিজ্ঞাসা করলো,তোড়া খুব সহজ ভাবেই বললো, এই 2 মাস যার টিকি দেখাও যায় নি, যে বন্ধু হতে চেয়েও বন্ধুর মনের অবস্থা বোঝে না, তার প্রশ্নের উত্তর দেবার দরকার মনে করছি না।
গাড়ি তে উঠার সময় ও তাই তাকায় নি।
রাতে সকলে যখন শুতে গেল তোড়া ফোন নিয়ে নাড়াচাড়া করছে তখন আবার ও পিং।
বন্ধু ভেবেও বন্ধুত্ব স্বীকার করলে না।
একদিনের জন্য আমার কথা জিজ্ঞাসা ও করোনি।
আমি গেলে অসুন্তুস্ট হও।
বিয়ে হলেই পরিচয় করবে বলে স্পষ্ট বলে রেখেছো।
তাই মনে হয় ছিল যেতেই পারি কিন্তু কেন যাবো?
পর্ব-তৃতীয়
ভালোবাসার শুরু
বিয়ে তো হয়ে গেল, খুব হৈচৈ ,আনন্দ ,লোকজন সব নিয়ে বিয়ে বাড়ি সরগরম। নীলে দের অত লোকজন নেই কিন্তু তোড়া দের বিশাল গুষ্টি। বৌভাতের কাজ মিটিয়ে রাতে যখন নীল ঘরে এলো, তোড়া কিছু বলার আগেই বললো আমি ভীষণ ক্লান্ত কাল থেকে তোমায় চিনবো আজ ঘুমাই। বলে পাশ বালিশ নিয়ে নাক ডাকা শুরু করলো। তোড়া যাদের থেকে শুনেছিল এ রাত ভীষণ স্পেশাল কোথায় কি? তার ও জেদ কম নয়,
কি আর করা অপর পাশে ঘুমিয়ে পড়লো সেও।
কিছুটা রাতে হটাৎ একটা কিসের শব্দ হতেই লজ্জা শরম মান অভিমান সব ছেড়ে নীলের বুক জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়লো তোড়া।
কুম্ভকর্ণ
সকাল বেলায় নীল দেখলো তার বাম হাতের উপর তোড়া ঘুমিযে আছে।
তোড়া র আগে ঘুম ভাঙলেও ওই ভাবেই পরে রইলো। তোড়া চোখ মেললো ধড়ফড় করে উঠতে গিয়ে দেখল নীলের বুকের ওপর ঘুমাচ্ছে,নীল জাগেনি খুব আস্তে উঠে গেল যেন কিছুই হয় নি। ডাকলো ও না নীলকে, শুধু একপলক দেখে বললো শয়তান।
আজ বাড়িতে পুজো, সত্য নারায়ণ। এ বাড়িতে লোকের অভাব বলে তোড়া র বাড়ির সকলেই প্রায় নিমন্ত্রিত। তাড়াতাড়ি চান করে রেডি হতে হবে, তাই তোড়া ও চলে গেল চানে।
চান সেরে বেরিয়েও দেখলো নীল ঘুমাচ্ছে, থাক শয়তান ডাকবই না। বলে ভেজা চুল ঝাড়তে লাগলো। কয়েক ফোঁটা জল নীলের মুখে পড়তেই এমন জোরে চীৎকার দিয়ে উঠলো বলার নয়। উঠেই শিরকেশ শিরকেশ করে বির বির করে উঠল।তোড়া বেশ ঘাবড়ে গেছে, ভয়ের ছোট আয়নার সামনে জড়সড় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। নীল একপলক দেখে বললো আগে ডেকে দেবে তো? আর জানো না চুলের জল গায়ে পড়লে ছুলি হয় তাই শিরকেশ বলতে হয়।
বেচারি তোড়া এসব জানে না। কিছুটা ধাতস্থ হয়ে বলল আমি মুছিয়ে দিচ্ছি, বলে আঁচল নিয়ে এগোতেই নীল বললো আমার গায়ে হাত দেবে? এখনো তো পরিচয় ই হয় নি।
বলে চানে চলে গেল।
কিছু বাদেই হই হই করে তোড়া দের বাড়ির লোক জন চলে এলো, বন্ধুরাও উপস্থিত। পুজোর সব জোগাড় করে পুরোহিত আসতেই পুজো ও হয়ে গেল।
আবার একপ্রস্থ খাওয়া দাওয়া । তোড়া র মামী, কাকী বন্ধুরা জ্বালিয়ে মেরেছে আগের রাতে কি হয়েছে জানার জন্য। কিন্তু তোড়া বলবে কি ?
শুধু দেখছে একটা মানুষ কি হারে জ্বালাতে পারে। নীল তার পরিসরে এখনই ভীষণ পপুলার। সবার মাঝে তোড়া র দিকে তাকিয়ে হাসি, চোখ টেপা সব চলছে। বন্ধুরা ও নীল দা বলতে অজ্ঞান হয়ে যায় আর কি? আরে যার জন্য পেলি নীল দা কে তাকে তো আগে দেখবি? না , না একদম সহ্য হচ্ছে না তবু চুপ থাকে সে।
বিকালের দিকে সকলে মিলে এক জোর মজলিশ বসলো বন্ধুদের নিয়ে ,বড়রাও যোগদান করলো।
শুরু হলো গান,” বধূ মিছে রাগ করোনা করোনা” গান টা গাইলো নীল। গিটার বাজিয়ে, এই মানুষ টা এত সুন্দর গান জানে? তোড়া ভাবলো ইশ এই গান টা কাকে শোনানো হচ্ছে বোঝেনি যেন,তবুও এমন ভাব দেখালো যেন বোঝেনি।
সেদিন সকলকে যখন বিদায় দিতে নীচে গেল তোড়া, মা তার হাত দুটো নীলের হাতে দিয়ে বললো খুব জেদী একটু মানিয়ে গুছিয়ে নিও বাবা।
নীল খুব স্পষ্ট করে বললো মা নিশ্চিন্ত থাকুন আমাকে ই ও সামলে নেবে।
সকলে চলে যাবার পর এ বাড়ির বাবা বললেন আজ অনেক খাটুনি হয়েছে মা ,বেশি রাত করব না শুতে গেলাম । বলে নিজের ঘরে চলে গেলেন।
নীল কে কোথায় দেখতে পাচ্ছিল না,ভাবলো ঘরেই চলে গেছে।তোড়া ও যাবার জন্য এগোতেই পিং।
দিনের খাঁজে, প্রেমের মাঝে ,
গুটি গুটি পায়ে ,
চেনার পালা ,মিলের খেলা,
শুরুর ইচ্ছায়।
ঢং।
পর্ব-চতুর্থ
ভালোবাসায় সব হয়
ঘরে ঢুকেই তোড়া বললো ,আজ খুব ক্লান্ত লাগছে, আমি ঘুমোলাম।
বলেই নিজের দিকে ফিরে শুয়ে পড়লো সে, নীল বুঝলো রাগ দেখিয়ে কোন লাভ নেই, মেয়েটি জেদী।
সে বললো আচ্ছা ঘুমোয়।
বলে গিটার টা নিয়ে গুন গুন শুরু করলো
পাগলী,
তোর বিহনে রাত্রি জাগি,
একাই থাকি,
কি করে যে বোঝাই তোকে,
তুই তো আমার একলা পাখি।
রাগ দেখিয়ে ফিরলি ওপাস,
আটকে গেছে আমার যে শ্বাস,
চোখ তুলে তুই দেখলে পরে,
চমকে উঠে আমার চারপাস।
ও পাগলী,
বাধ্য হয়েই তোড়া উঠে বসে,বলে সব দোষ বুঝি আমার?
কে বললো? নীল চোখ পিট পিট করে জানতে চায়?
তুমি ই তো দুরে বসে আছ। কাল থেকে একবার ও কাছে আসনি? সকালে ও ঘুম থেকে ডাক নি?
এখন ও ওপাশে সরে গেলে, এরপর ও যদি বল সব দোষ আমার তাহলে তাই।
আমি বললেই তুমি মেনে নেবে?তোড়া জানতে চায়।
তাহলে কাল কেন কষ্ট দিলে?
কে কষ্ট দিলো? সকাল থেকে বাঁ হাত তা নাড়তে পারছি না,সারারাত বুকে জড়িয়ে ঘুমলে, কষ্ট দিলাম আমি? নীল জানতে চায়?
তোড়া লজ্জায় লাল হয়ে বলে শয়তান।
(শেষ)
স্বাগতা ব্যানার্জী
বাগবাজার – কলকাতা